বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি) : প্রতি উপজলায় টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ গড়ে তোলা হবে : প্রধানমন্ত্রী

130

বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা-আইডিইবি
প্রতি উপজলায় টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ গড়ে তোলা হবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা সেই পাকিস্তান আমল থেকেই বাংলার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সংগ্রাম শুরু করেন। তাঁর ২৩ বছরের সংগ্রামের মধ্যদিয়ে আজকে আমরা স্বাধীন জাতি। তিনি যেই মুহূর্তে এই স্বাধীনতার সুফল বাংলার মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করছেন ঠিক তখনই তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
তিনি বলেন, ছয় বছর দেশে আসতে পারিনি, আমাদের দেশে আসতে দেয়া হয়নি। ’৮১ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আমাকে সভানেত্রী নির্বাচিত করলে আমি এক প্রকার জোর করেই দেশে ফিরে এলাম। তার পর থেকেই আমার প্রচেষ্টা এই স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে হবে। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কি পেলাম, কি পেলাম না সে চিন্তা না আমি কখনো করিনি। ছেলে-মেয়েকে বললাম একটাই সম্পদ দেব- সেটা হচ্ছে শিক্ষা, তোমরা শিক্ষা গ্রহণ করবে, আর কোন সম্পদ নয়।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের জনগণের জন্য কাজ করতে হবে। তাই ছোট ছোট বাচ্চা, ১০ বছরের ছেলে, ৮ বছরের মেয়েকে ¯েœহবঞ্চিত করে চলে এসেছিলাম বাংলার মানুষের পাশে দাঁড়াতে। কারণ, বাংলার মানুষ শোষিত, বঞ্চিত, নির্যাতিত ছিল এবং আমরা পরিকল্পিভাবে পদক্ষেপ নিয়েছি দেখেই আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ। আমাদের সামনে অনেক দূর যেতে হবে সে পরিকল্পনাও আমরা নিয়েছি।
সরকারি কর্মচারিদের বেতন ১২৩ ভাগ বৃদ্ধির প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রত্যেকের কাজের সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করে দিয়েছি, কর্মক্ষেত্রে কাজের পরিবেশ যাতে সুন্দর হয় সে ব্যবস্থা আমরা করেছি এবং সর্বোপরি এত বেশি প্রকল্প আমরা হাতে নিয়েছি এবং কাজ করে যাচ্ছি যার সুফল বাংলাদেশের জনগণ পাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে প্রকৌশলীদের একটা ইনক্রিমেন্টের দাবির প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, সরকারি কর্মচারিদের যে হারে বেতন বাড়িয়েছি তাতে আর কিছু দাবি না করাই উচিত ছিল। তারপরও আপনাদের ইনক্রিমেন্টের ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটা বৈঠক হয়েছে। এ ব্যাপারে শিগগিরই একটি ভালো ঘোষণা আসতে পারে।
দক্ষ মানবসম্পদের চেয়ে কোন সম্পদই বড় নয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এজন্য জনশক্তিকে জনসম্পদে পরিণত করার জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, কারিগরি শিক্ষা বিষয়ে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছি।
তিনি বলেন, গত সাড়ে ৯ বছরে দেশব্যাপী সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে প্রায় ৫০০ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও ইউনিভার্সিটি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ করা হয়েছে। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং-এ অনলাইনে ভর্তি পদ্ধতির পাশাপাশি সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোতে ডাবল শিফট চালু করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ক্যাপাসিটি ২৫ হাজারের স্থলে ১ লাখে উন্নীত করার জন্য প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।
তাঁর সরকার এমডিজি বাস্তবায়নে সফল হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আলোকে আমরা এসডিজির বিভিন্ন অভীষ্ট অর্জনে কাজ করে যাচ্ছি। ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জনেও আমরা সফল হব, ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, আমরা শত বছরের ডেল্টা প্ল্যান বা বদ্বীপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। ২১০০ সালের ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নের মাধ্যমে এক টেকসই উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে।
বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, আর্থ-সামাজিক সূচকে আমরা উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছি। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়ে ১ হাজার ৭৫২ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৭৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচি ও সামাজিক সুরক্ষা বলয় সৃষ্টির ফলে দারিদ্র্যের হার হ্রাস পেয়ে ২২ শতাংশে নেমে এসেছে।
‘রাজধানীর ওপর যেন চাপ কমে সেই চেষ্টা করা হচ্ছে’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘গ্রামগুলোকে আরো উন্নত করতে পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে, শহরের সকল সুযোগ-সুবিধা গ্রামে পৌঁছানো হবে। গ্রামেও যেন মানুষ উন্নত বাড়িঘর করতে পারে সেজন্য ঋণ সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।’
ঢাকাকে আধুনিক নগর হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুরো ঢাকাজুড়ে আমরা সার্কুলার রোড করবো, এই সার্কুলার রোড হবে মাটিতে নয় আকাশ জুড়ে, এলিভেটেড এক্সপ্রেস হবে। ঢাকা অত্যাধুনিক শহর হিসেবে গড়ে উঠবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অগ্রগতি এখন আর কেউ থামাতে পারবে না। আগামী ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বিশ্ব মানচিত্রে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।
বাসস/এএসজি-এফএন/১৫৫৫/আরজি