ভিয়েতনামের সাথে বাংলাদেশ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করতে আগ্রহী : তোফায়েল আহমেদ

457

ঢাকা, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ভিয়েতনামের সাথে বাংলাদেশ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষর করতে আগ্রহী। ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রীও এ প্রস্তাবের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
আজ ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চুক ফুওক -এর সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সময় বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ তাঁকে এ সব কথা বলেন। আজ ঢাকায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা বলা হয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ভিয়েতনামের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করার সুযোগ রয়েছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ ২০২৪ সালে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হচ্ছে ।
তিনি বলেন, ২০২৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ এলডিসি ভুক্ত দেশের বাণিজ্য সুবিধা পাবে। এরপর বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশের সাথে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষর করে বৈদেশিক বাণিজ্য বৃদ্ধি করবে। ভিয়েতনামের সাথে এফটিএ স্বাক্ষর করতে বাংলাদেশ আগ্রহী উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রীও এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং এ বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ২০০৭ সালে ভিয়েতনামের ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন (ডব্লিউটিও) এর সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে এলডিসির কো-অর্ডিনেটর হিসেবে আমরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দুইটি ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে অবশেষে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভ করে। ভিয়েতনামও তেমনি হো চো মিনের নেতৃত্বে দুইটি ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করে স্বাধীন হয়েছে। স্বাধীনতার পরই বাংলাদেশ সোসালিষ্ট রিপাবলিক অফ ভিয়েতনামকে স্বীকৃতি প্রদান করে। দুই দেশের মধ্যে শুধু বাণিজ্যিক বা রাজনৈতিক সম্পর্কই নয় এর পাশাপাশি সাংস্কৃতিক ও সামাজিক অনেক ক্ষেত্রেই মিল রয়েছে। ভিয়েতনাম গ্যাস, কৃষি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ করলে বাংলাদেশ সব ধরণের সহযোগিতা প্রদান করবে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২০১২ সালের ভিয়েতনাম সফর এবং রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের ২০১৫ সালে ভিয়েতনাম সফরের কথা উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতি ট্যান ডাই কোয়াং ২০১৮ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশ সফরের মধ্যদিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হয়েছে।
এ সময় ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ভিয়েতনামের বর্তমান রপ্তানি ২৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ৫০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের সাথে ভিয়েতনামের ব্যবসা-বাণিজ্যের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের গ্যাস ক্ষেত্রে ভিয়েতনাম বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। এছাড়া কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য খাতে ভিয়েতনাম বিনিয়োগ করতে চায়। তিনি ভিয়েতনাম থেকে বাংলাদেশে চাউল ও ক্লিংকার রপ্তানির বিষয় উল্লেখ করেন।
এসময় ভিয়েতনামে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ এবং ভিয়েতনামের বাণিজ্য বিষয়ক ডেপুটি মিনিস্টার কুইক হোং কাও উপস্থিত ছিলেন।