নড়াইলে উচ্ছে চাষে ঝুকছেন কৃষকরা

323

নড়াইল, ২২ এপ্রিল ২০১৮ (বাসস) : জেলার লোহাগড়া উপজেলার নলদী ইউনিয়ন এখন উচ্ছে পল্লী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এ ইউনিয়নের অনেক চাষি উচ্ছে চাষ করে তাদের ভাগ্য বদলাতে সক্ষম হয়েছে। লাভজনক হওয়ায় উচ্ছে চাষে ঝুঁকছেন এলাকার কৃষকরা।
জানা গেছে, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার নলদী ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামের কৃষক ছাদেক হোসেন উচ্ছে চাষ করে ভাগ্য বদলেছেন। কুঁড়েঘরের জায়গায় তৈরি হয়েছে আধা পাকা ঘর। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচ জোগাতে এখন আর চিন্তা করতে হয় না। ইউনিয়নের ১৬টি গ্রামের প্রায় এক হাজার পরিবার কৃষক ছাদেকের মতো ভাগ্য বদলেছেন উচ্ছে চাষ করে। এ ১৬টি গ্রাম ‘ উচ্ছে পল্লী ’ হিসেবেই এখন পরিচিত। গ্রামগুলো হলো জালালশী, নোয়াপাড়া, নলদী, বাড়ইপাড়া, গাছবাড়িয়া, হলদা, মতিনগর, ব্রহ্মণীনগর, কালাচাঁদপুর, মঠবাড়িয়া, ব্রাহ্মণডাঙা, চর ব্রাহ্মণডাঙা, বাড়িভাঙা, মিঠাপুর, নখখালী ও চাকুলিয়া।
কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, এ বছর জেলায় ৩২০ হেক্টর জমিতে উচ্ছে চাষ হয়েছে। এর মধ্যে লোহাগড়া উপজেলার নলদী ইউনিয়নের ওই ১৬টি গ্রামেই ১৭৫ হেক্টর জমিতে উচ্ছের চাষ করা হয়েছে। এসব জমি থেকে প্রতিদিন হাজার মণ উচ্ছে তোলা হচ্ছে। ওই ১৬টি গ্রামের কৃষকদের দেখে পাশের নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের রায়গ্রাম, কলাগাছিসহ কয়েকটি গ্রমের আরও প্রায় ৭৫টি পরিবার এবার উচ্ছে চাষ করে লাভবান হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চাষিরা জমি থেকে উচ্ছে তোলার কাজে ব্যস্ত। চাষিদের স্ত্রী ও সন্তানেরা জমি থেকে উচ্ছে তুলছেন। অনেকে দিনমজুর দিয়ে সবজি তুলছেন। উচ্ছেপল্লীতে গড়ে উঠেছে ১২ থেকে ১৫টি অস্থায়ী বাজার। বিভিন্ন জেলার ২০ থেকে ২৫ জন পাইকার ব্যবসায়ী এসব উচ্ছে কিনে ঢাকা, মাগুরা, ফরিদপুর, যশোর, খুলনাসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে থাকেন।
কৃষক ছাদেক হোসেন বলেন, শুরুতে ব্যাপারীরা প্রতি কেজি উচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায় কিনেছেন। এখন সেটা কেজি প্রতি ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। উচ্ছে চাষ করে পরিবারের সকলকে নিয়ে ভালভাবে সংসার চলছে।
নওয়াপাড়া গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের এ ইউনিয়নে উচ্ছের চাষ ভাল হওয়ায় দিন দিন উচ্ছর আবাদ বেশি হচ্ছে এখানে। স্বল্প সময়ের মধ্যেই আমাদের এ ইউনিয়নটি উচ্ছে পল্লী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার দরাজহাট গ্রামের ব্যাপারী বিলায়েত হোসেন বলেন, আমি এখান থেকে উচ্ছে কিনে নিয়ে যশোর-খুলনার বাজার গুলোতে বিক্রি করি। প্রতিকেজি উচ্ছেতে আমাদের খরচবাদে ৫ থেকে ৭ টাকা লাভ হয়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক চিন্ময় রায় বলেন, এ এলাকায় মাটি ও পরিবেশ উচ্ছে চাষের জন্য উপযোগী। এ ছাড়া ধান ও পাট চাষের তুলনায় উচ্ছে চাষে লাভ বেশি হওয়ায় কৃষকেরা উচ্ছে চাষে বেশি ঝুঁকছেন। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।