বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (২য় ও শেষ কিস্তি) : শেয়ার বাজারের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর ৭ দফা সুপারিশ

188

বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (২য় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা-বিএসইসি
শেয়ার বাজারের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর ৭ দফা সুপারিশ

তাঁর সরকার ভবিষ্যতেও পুঁজিবাজার উন্নয়নে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করে যাবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুঁজিবাজার হবে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের এক নির্ভরযোগ্য উৎস।
তিনি বলেন,‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ২০৪৩ সালে যখন বিএসইসির সূবর্ণজয়ন্তী পালিত হবে, অর্থনীতির অন্যতম নিয়ামক শক্তি হিসেবে পুঁজিবাজারের অবস্থান আরও বলিষ্ঠতর হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর্থিক খাতের অন্যতম স্তম্ভ পুঁজিবাজার বিকাশে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছি। ফলে পুঁজিবাজার আজকের স্থিতিশীল অবস্থানে উন্নীত হয়েছে। বিশ্বে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার দ্রুত বিকাশমান ও সম্ভাবনাময় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
তিনি এজন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা, স্টক এক্সচেঞ্জ, বিনিয়োগকারীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।
পুঁজি বাজারের বিকাশে তাঁর সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ সমূহের উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, আমরা ইতোমধ্যে বিএসইসি এর নিজস্ব ভবন নির্মাণ করে দিয়েছি। আইনি সংস্কারের মাধ্যমে কমিশনের কর্মকর্তাদের পদ-মর্যাদা ও বেতন-ভাতাদিসহ অন্যান্য সুবিধা বাংলাদেশ ব্যাংকের সমমানের করেছি। কমিশনের জন্য প্রয়োজনীয় জনবল বৃদ্ধি করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।
তিনি বলেন, কমিশনের আর্থিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কর্মকর্তাদের কর্মকা-ের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণে আইনি বিধান রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, কমিশনে কর্মরত সকলের জন্য দেশে-বিদেশে উন্নততর প্রশিক্ষণসহ নানাবিধ সেমিনার ও ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করায় বিশ্বে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার দ্রুত বিকাশমান ও সম্ভাবনাময় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি স্থিতিশীল, স্বচ্ছ, জবাবদিহিতামূলক পুঁজিবাজার গড়ে তুলতে তাঁর সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যার মধ্যে রয়েছে-তালিকাভুক্ত কোম্পানির সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ, ডিমিউচুয়ালাইজেশনের মাধ্যমে স্টক এক্সচেঞ্জের কর্মকা-ে গতিশীলতা আনয়নের পাশাপাশি সুশাসন নিশ্চিত করা। শেয়ার বাজারে লেনদেনে কারচুপি ও অনিয়ম শনাক্তকরণ ও যথাযথ নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা নেওয়া এবং ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রণীত প্রণোদনা প্যাকেজ এর সফল বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা। সেইসাথে তাঁর সরকার পুঁজিবাজার সংক্রান্ত মামলাসমূহ দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে স্পেশাল ট্রাইবুনাল এর কার্যক্রম চালু করেছে, আর্থিক প্রতিবেদনের স্বচ্ছতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য ফাইনানসিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল (এফআরসি) গঠন করা হয়েছে এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (অলটারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট) রুলস-২০১৫ এর মাধ্যমে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ও প্রাইভেট ইক্যুইটিতে বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, বলেন তিনি।
ফলে তথ্য-প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট হচ্ছে এবং বিএসইসি পেয়েছে ‘এ’ ক্যাটাগরির নিয়ন্ত্রক সংস্থার সম্মান। বেড়েছে বৈদেশিক বিনিয়োগ এবং আমাদের বাজারের প্রতি ভারত, চীনসহ অন্যান্য দেশের আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া (এসইবিআই) এবং বিএসইসি’র মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। চীনের কনসোর্টিয়াম ইতোমধ্যে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
এ অন্তর্ভুক্তিতে পুঁজিবাজারের গভীরতা বাড়ার পাশাপাশি বিনিয়োগকারীসহ, স্টেকহোল্ডার ও সংশ্লিষ্ট সকলে উপকৃত হবেন, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জাতির পিতার আর্দশকে অনুসরণ করে মানুষের কল্যাণে কাজ করি। যখনই সরকার গঠন করেছি, মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করেছি। আমাদের লক্ষ্যই হল দেশের সার্বিক উন্নয়ন।
তিনি বলেন, ২০০৯ সালে আবারও সরকার গঠন করার পর থেকে, গত সাড়ে ৯ বছরে আমরা দেশের প্রতিটি সেক্টরে অভাবনীয় উন্নয়ন করেছি। বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের উল্লেখযোগ্য অংশ তুলে ধরে উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি তাঁর রাজনৈতিক অঙ্গীকার ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের বাংলাদেশ এবং ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সকলকে একযোগে কাজ করে যাবারও আহবান জানান।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত তার বক্তৃতায় বলেন, দেশের পুঁজিবাজার সত্যিকারভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত হওয়ায় সরকার এখন সন্তুষ্টি অনুভব করতে পারে। ‘এই অগ্রগতি কোনভাবে ব্যাহত করা যাবে না।’
মুহিত বলেন, বাংলাদেশের পুঁজিবাজার স্বীকৃতি অর্জন করেছে এবং বিশ্বের কাছে পুঁজিবাজারের অবস্থান সমুন্নত হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘পরবর্তী দুই বছরের জন্য চলমান পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে এবং আমরা আশা করি যখন পদক্ষেপসমূহের বাস্তবায়ন সম্পন্ন হবে তখন দেশে সত্যিকারের পুঁজিবাজার সুপ্রতিষ্ঠত হবে এবং আমরা এ জন্য গর্ব অনুভব করতে পারবো।’
বাসস/এএসজি-এফএন/আহো/১৪৫০/এমএবি