জাতীয় ঐক্যের নামে সাম্প্রদায়িক ঐক্য প্রতিষ্ঠা করতে চায় বিএনপি : ওবায়দুল কাদের

1032

ঢাকা, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি জাতীয়তাবাদী সাম্প্রদায়িক ঐক্য প্রতিষ্ঠা করতে চায়।
নির্বাচনকালীন সরকার সম্পর্কে সেতুমন্ত্রী তিনি বলেন, আগামী অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হতে পারে। এ সরকারে কোন টেকনোক্রেট সদস্য থাকবে না এবং আকারে ছোট হবে।
ওবায়দুল কাদের আজ সকালে রাজধানীর সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রালয়ের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সমসাময়িক রাজনীতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রীসভার সদস্য কতজন হতে পারে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় যে সংখ্যক সদস্য নিয়ে মন্ত্রীসভা গঠিত হয়েছিল তার সে সংখ্যক সদস্য নিয়ে গঠিত হতে পারে।
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জোটের সমীকরণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে এলে জোটের সমীকরণ এক ধরনের হবে, আর না এলে আরেক ধরনের হবে। তারা নির্বাচনে এলে জোটের আসন বন্টন ও সমঝোতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজনৈতিক মেরুকরণের ওপর আওয়ামী লীগের জোটের সমীকরণ নির্ভর করছে। যেভাবে রাজনৈতিক মেরুকরণ হবে সেভাবে আমাদের জোটেরও সমীকরণ হবে।
দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে জাতীয় ঐক্য হাস্যকর উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপির ঐক্যকে জাতীয় ঐক্য না বলে জাতীয়তাবাদী সাম্প্রদায়িক ঐক্য বলাই ভাল।
কাদের বলেন, বিএনপি বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার চেয়ে তার অসুস্থ্যতা নিয়ে রাজনীতি করছেন। এটাকে তারা রাজনৈতিক ইস্যু বানিয়ে রাজনীতি করতে চাইছে। তার অসুস্থ্যতাকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে তারা মানুষকে তাদের আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে চাচ্ছে।
বিএনপি সাম্প্রদায়িক শক্তিকে নিয়ে ঐক্য করতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপির নিজেদের ঘরেই কোন ঐক্য নেই। তাদের এক নেতা অপর নেতাকে সরকারের এজেন্ট বলে উল্লেখ করে। যাদের নিজেদের ঘরেই ঐক্য নেই তারা কিভাবে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা করবে?
খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচন হতে দেবে না বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির আন্দোলনের হুমকি আর তাদের তর্জন গর্জনই সার। বিএনপির আন্দোলনের বার্তা হচ্ছে যারা দশ বছরে আন্দোলন করতে পারে নি, তারা আগামী দু’মাসেও পারবে না।
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জোটের সমীকরণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে এলে জোটের সমীকরণ এক ধরনের হবে, আর না এলে আরেক ধরনের হবে। তারা নির্বাচনে এলে জোটের আসন বন্টন ও সমঝোতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজনৈতিক মেরুকরণের ওপর আওয়ামী লীগের জোটের সমীকরণ নির্ভর করছে। যেভাবে রাজনৈতিক মেরুকরণ হবে সেভাবে আমাদের জোটেরও সমীকরণ হবে।
আওয়ামী লীগের ঢাকা-নীলফামারী ট্রেনযাত্রার সমালোচনা করে কয়েকটি গণমাধ্যমের খবরের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, কোটা বিরোধী আন্দোলন ও শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে গণমাধ্যমের একটি অংশের ভূমিকা উস্কানীমূলক ছিল। আর বিএনপির আন্দোলনের মাঠে না থাকলেও গণমাধ্যমের ওই অংশটি তাদের উস্কানি দিয়েছে। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে আমরা দলীয় কর্মসূচি শুক্রবার ও শনিবার সরকারি ছুটির দিনে করে থাকি। কিন্তু বিএনপি নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ের সামনে ঘন্টার পর ঘন্টা রাস্তা বন্ধ করে যে সভা-সমাবেশ করে সেখানে কি মানুষের দুর্ভোগ হয় না। সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে যে সমাবেশ করেছে সেখানে মানুষের দুর্ভোগ হয় নি? সে বিষয়ে তো তারা কোন সংবাদ প্রকাশ করেননি।
দেশের রাজনীতিতে বিদেশী কূটনৈতিকদের ভূমিকার বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের সংবিধানের আওতার মধ্যে কূটনৈতিকদের প্রয়াস যতটা সহনীয়, ততটাই আমরা গ্রহন করি। আমাদের দেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। সংবিধানের বাইরে কেউ কোন আচারণ করলে সেটা কোন গণতান্ত্রিক দেশ মানে না।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের সার্বভৌমত্ব যাতে ক্ষুণœ না হয়, সে রকম প্রয়াস কূটনীতিকরা যাতে না চালান সেটাই আমরা প্রত্যাশা করি।
দলের কর্মসূচি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড তৃনমূলে তুলে ধরতে আওয়ামী লীগের আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর লঞ্চযোগে পটুয়াখালী ও বরগুনা এবং ২২ সেপ্টেম্বর সড়কপথে চট্টগ্রামে যাওয়ার কর্মসূচি আছে।