মন্ত্রিসভায় ‘বাংলাদেশ শিশু একাডেমি আইন ২০১৮’-এর খসড়ার অনুমোদন

718

ঢাকা, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : মন্ত্রীসভা বাংলাদেশ শিশু একাডেমি আইন ২০১৮ এবং মোটর সাইকেল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা, ২০১৮-এর খসড়া অনুমোদন করেছে ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আজ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, শিশু একাডেমি ১৯৭৬ সালে জারি করা তৎকালীন সামরিক সরকারের অধ্যাদেশে চলছিল। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ি, নতুন আইনে অধ্যাদেশটি আইনে রূপান্তর করা হয়েছে।
তিনি জানান, নতুন আইনে ১৯ সদস্যের ব্যবস্থাপনা বোর্ড গঠন এবং একাডেমির পরিচালক পদটিকে মহাপরিচালক পদে উন্নীত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
আইন অনুসারে, শিশু সাহিত্যিক হিসেবে পরিচিতি অথবা স্বাধীনতা পদক বা একুশে পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে সরকার এই প্রতিষ্ঠানের ‘চেয়ারম্যান’ পদে নিয়োগ করবে।
শফিউল আলম বলেন, দেশীয় মোটর সাইকেল শিল্পকে উৎসাহিত করা এবং আন্তর্জাতিক বাজারে মোটর সাইকেল রপ্তানির উদ্দেশ্য মোটর সাইকেল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ণ করা হয়েছে। এই নীতিমালায় দেশীয় মোটর সাইকেলের উৎপাদন ২০২১ সাল নাগাদ ৫ লাখ এবং ২০২৭ সালে ১০ লাখে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এই নীতিমালায় জিডিপিতে মোটর সাইকেল শিল্পের অবদান শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ২ দশমিক ৫ শতাংশে উন্নীকরার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নীতিমালার ফলে বর্তমানের ৫ লাখ লাখ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭ সাল নাগাদ এই শিল্পে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ১০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হবে।
মন্ত্রীসভা ‘বাংলাদেশ প্রকৌশল গবেষণা পরিষদ আইন, ২০১৮’-এর আরো যাচাই-বাছাইয়ের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রীকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি মন্ত্রিসভা কমিটি করেছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- তথ্যমন্ত্রী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, প্রস্তাবিত আইনের আরো উন্নয়নের জন্য কমিটি সরকারের কাছে প্রতিবেদন পেশ করবে।
বৈঠকের শুরুতে মন্ত্রিপরিষদ মুক্তিযোদ্ধা ও লেখক রমা চৌধুরীর স্মরণে শোকপ্রস্তাব গ্রহণ করে, যিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় এবং পরবর্তীতে ত্যাগ ও সংগ্রামের মূর্ত প্রতীক হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ¯œাতকোত্তর রমা চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধকালে তার স্বামীর সঙ্গে দেশ ত্যাগে অস্বীকৃতি জানান। ১৯৭১ সালের ১৩ মে হানাদার পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তার বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয় এবং তাকে অমানুষিক নির্যাতন ও ধর্ষণ করে।
তিনি তার তিন শিশু সন্তান নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করেন এবং প্রায়ই ক্ষুধায় দিনাতিপাত করেন। তার ছোট দুই ছেলে ঝোপঝাড়ে বা খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করায় অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং মুক্তিযুদ্ধের পর পরই তারা মারা যায়।
স্বাধীনতার পর রমা চৌধুরী খালি পায়ে হাঁটতেন এবং কখনো জুতা পায়ে দেননি। তার দুই ছেলে এবং মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শত-সহ¯্র শহীদেরা এই মাটিতে শান্তিতে ঘুমিয়ে আছে বলে তিনি খালি পায়ে চলাফেরা করতেন।
স্বাধীনতার পর রমা চৌধুরী চট্টগ্রামের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে ঘুরে তাঁর নিজের লেখা বই বিক্রি করতেন। তিনি একাত্তরের জননীসহ মোট ১৮টি বই লিখেছেন, যেখানে তিনি নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের স্মৃতি তুলে ধরেছেন।
তার অন্যান্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে, এক হাজার একদিন যাপনের পদ্য, ভাব-বৈচিত্র্যে রবীন্দ্রনাথ, আগুন রাঙা আগুন ঝরা এবং অশ্রুভেজা একটি দিন।