বাজিস-৮ : কাপ্তাই হ্রদ থেকে ৪০ দিনে বিএফডিসি’র রাজস্ব আয় সোয়া ৩ কোটি টাকা

144

বাজিস-৮
কাপ্তাই-হ্রদ
কাপ্তাই হ্রদ থেকে ৪০ দিনে বিএফডিসি’র রাজস্ব আয় সোয়া ৩ কোটি টাকা
রাঙ্গামাটি, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ (বাসস) : দেশীয় মাছ উৎপাদনের অন্যতম মিঠা পানির উৎস রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে বেড়েছে মাছের উৎপাদন। পুরোপুরি প্রাকৃতিক খাদ্যের ওপর নির্ভরশীল কাপ্তাই হ্রদে এ বছর মাছ ধরা মৌসুমের শুরু থেকেই আশানুরূপ মাছ আহরিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রাঙ্গামাটি বিএফডিসির ব্যবস্থাপক নৌ-বাহিনীর কমান্ডার আসাদুজ্জামান (জি) এএফডবিলউসি, পিএসসি-বিএন।
এ বছর পহেলা আগস্ট থেকে কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণ শুরু হওয়ার পর আজ পর্যন্ত ছয় সপ্তাহে প্রায় সোয়া ৩ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে রাঙ্গামাটি বিএফডিসি কর্তৃপক্ষ।
বিএফডিসি কর্তৃপক্ষ জানায়, বিগত বছরে পাহাড় ধসের কারণে হ্রদের পানি ঘোলাটে হয়ে গিয়ে পানিতে মাছের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের পরিমাণ হ্রাস পায়। এতে কেচকি ও চাপিলাসহ বেশ কয়েক প্রজাতির মাছ মরে যায় এবং এদের উৎপাদন হ্রাস পায়। বিএফডিসি কর্তৃপক্ষ জানায়, কেচকি-চাপিলা প্রজাতির মাছ রাজস্ব আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস। পানির উচ্চতা বৃদ্ধি, ব্যাপক স্রোত এবং দীর্ঘ সময় ধরে হ্রদের পানি অপসারণের জন্য জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্পিলওয়ে খুলে রাখা হলে হ্রদের স্বাভাবিক মৎস্য উৎপাদন ব্যাহত হয়।
এসব কারণ চিহ্নিত করে রাঙ্গামাটি বিএফডিসি কর্তৃপক্ষ তাদের চিরায়িত পুরনো পদক্ষেপগুলো থেকে বের হয়ে এসে নতুন করে পরিকল্পনানুসারে এগুতে থাকে। মৎস্য প্রজনন মৌসুমে অবৈধ মৎস্য আহরণ ও পাচার রোধ, মৎস্য আইন বাস্তবায়ন, কার্প জাতীয় মাছের পোনা অবমুক্তি এবং অভয়াশ্রম ব্যবস্থাপনায় কাপ্তাই হ্রদে মাছের উৎপাদনে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে।
এ ছাড়াও এবছর প্রথমবারের মতো নিজেদের হ্যাচারিতে উৎপাদিত মাছের পোনা কাপ্তাই হ্রদে অবমুক্ত করা হয়। এতে করে অর্থ সাশ্রয়ের পাশাপাশি হ্রদের পানি ব্যবহার করে উৎপাদন করা পোনা মাছ শতভাগ অবমুক্ত করায় কাপ্তাই হ্রদে এবছর বিএফডিসির রাজস্ব আদায় কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএফডিসিসহ স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়িরা। এদিকে, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা কেন্দ্র (বিএফআরই) এর গবেষণায় এ বছর কাপ্তাই হ্রদের পানিতে মা মাছেরা রেকর্ড সংখ্যক ডিম ছেড়েছে।
সীমিত জনবল নিয়ে বিশাল মৎস্য ভান্ডার খ্যাত কাপ্তাই হ্রদে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতে ব্যাপক পদক্ষেপ নেয় রাঙ্গামাটি বিএফডিসি। যার ফলশ্রুতিতে এবছর মাছের উৎপাদন যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে তেমনি রাজস্বও বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে রাঙ্গামাটির বিএফডিসির ব্যবস্থাপক কমান্ডার আসাদ জানান, পহেলা আগস্ট থেকে মাছ আহরণ শুরু হওয়ার পর কয়েকটি উৎসবের কারণে কাপ্তাই হ্রদে কয়েকদিন মাছ ধরা বন্ধও ছিলো। যার ফলে মৎস্য অবতরণ ঘাটগুলোতে তেমন একটা মাছ আসেনি।
তাছাড়াও প্রাকৃতিক বৈরি আবহাওয়ার কারণে কাপ্তাই হ্রদের জেলেরা দিনের একটা সময় মাছ আহরণ থেকে বিরত থাকছে। কিন্তু তারপরও এখন সোয়া ৩ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করেছে কর্তৃপক্ষ।
বাসস/ সংবাদদাতা/১৬৪৫/-মরপা