নড়িয়ার ৫০ শয্যার হাসপাতালটি গ্রাস করছে পদ্মা

1364

শরীয়তপুর, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : পদ্মার কড়াল গ্রাসে আজ রোববার সকাল ৭ টার দিকে নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সীমানা প্রাচীর বিলীন হয়ে গেছে। সীমানা প্রাচীরের পর এবার ধীরে ধীরে মূল ভবনের দিকে এগুচ্ছে পদ্মা। প্রতিমূহুর্তে একটু একটু করে গ্রাস করছে। ফলে নড়িয়া উপজেলার সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সেবার ৫০ শয্যার হাসপাতালটি রোগীদের কাছে এখন শুধুই ভীতি।
পদ্মার আগ্রাসন বিগত প্রায় তিন মাসে নড়িয়া উপজেলার সাড়ে ৪ সহ¯্রাধিক পরিবারের বিলাসবহুল পাকা বাড়িসহ আবাস স্থল, দেড় শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ সহ কাঁচা-পাকা বহু সড়ক বিলীন হয়ে গেছে। এবার উপজেলার প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ মানুষের স্বাস্থ্য সেবার ৫০ শয্যার হাসপাতালটি গ্রাস করছে সর্বনাশা পদ্মা।
উল্লেখ্য ১৯৬৮ সালে নড়িয়া উপজেলা সদরের চার কিলোমিটার দূরে মুলফৎগঞ্জ বাজারের পূর্ব পাশের্^ ৩০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স শুরু হয়ে ২০১৪ সালে ৫০ শয্যার হাসপাতালে উন্নীত হয়। হাসপাতাল ক্যাম্পাসে ১২টি পাকা ভবন রয়েছে। এখান থেকেই উপজেলার প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ মানুষ স্বাস্থ্যসেবা পেতেন।
মুলফৎগঞ্জ গ্রামের আবুল কালাম দেওয়ান বলেন, যেভাবে পদ্মা হাসপাতালের সীমান প্রাচীর গ্রাস করে ভিতরের দিকে ঢুকছে তাতে মনে হয় আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই মূল ভবন পদ্মায় বিলীন হয়ে যাবে। হাসপাতালটি নদীগর্ভে চলে গেলে নড়িয়ার প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।
শরীয়তপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. খলিলুর রহমান জানান, প্রশাসনিকভাবে হাসপাতালটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করায় ইতিপূর্বেই হাসপাতালের মূল্যবান যন্ত্র-পাতি ও আসবাবপত্র উপজেলা ও জেলা স্বাস্থ্য কমিটি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়েছে। ইতিমধ্যে বর্হিবিভাগ, আন্তঃবিভাগ ও জরুরী চিকিৎসা সেবা সীমিতভাবে আবাসিক ভবনে পরিচালিত হচ্ছিল। কিন্তু আজ সকাল ৭টার দিকে হাসপাতালের সীমানা প্রাচীর পদ্মাগর্ভে বিলীন হওয়ায় এখন হাসপাতালের মূল ভবন দুটি চরম হুমকির মুখে। তাই কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই দুটি ভবন দুই একদিনের মধ্যেই নিলামে দিতে হবে। রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা চলমান রাখতে আশপাশের সাব সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়েছে। হাসপাতালের বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত স্বাস্থ্য কমিটি ও উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী নেয়া হবে।