বাজিস-৭ : ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার হবে খুলনায়

721

বাজিস-৭
খুলনা-বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার
২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার হবে খুলনায়
খুলনা, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : জমি খোঁজাখুঁজির দীর্ঘ ঝক্কি শেষ হয়েছে। নগরীর জিরো পয়েন্টের কাছে কৃষ্ণনগর মৌজায় ব্যক্তিমালিকানা ১০ একর জমিতে নভোথিয়েটার স্থাপনের প্রশাসনিক অনুমোদন পাওয়া গেছে। শেষ হয়েছে প্রাক সম্ভাব্যতা জরিপ ও পরিবেশগত সমীক্ষাও। এখন চলছে নকশা প্রণয়ন ও প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরির কাজ।
ইতোমধ্যে প্রকল্প ব্যয় ২৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এখন রাজনৈতিক নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের তদবির ও নজরদারি থাকলে আগামী আড়াই থেকে তিন বছরের মধ্যে প্রকল্প অনুমোদন হয়ে কাজ শুরু হবে খুলনা বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটারের।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সূত্র থেকে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের বিনোদনের মাধ্যমে মহাকাশ বিজ্ঞান, গ্রহ নক্ষত্র সম্পর্কে সঠিক ধারণা ও তথ্য প্রদানসহ বিজ্ঞান শিক্ষায় আগ্রহী করতে খুলনায় একটি নভোথিয়েটার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। খুলনার এই নভোথিয়েটার হবে অনেকটা ঢাকায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় নভোথিয়েটারের আদলে। এজন্য ২০১২ সাল থেকেই তৎপরতা শুরু করে খুলনা জেলা প্রশাসন ও বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার কর্তৃপক্ষ। প্রথম দফায় ২০১৩ সালের ১১ জুন মংলা পোর্ট স্কুলের পাশে বন্দর কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন, ২১নং ওয়ার্ডে শিল্প ব্যাংকের পেছনে এবং ২০নং ওয়ার্ডে আহত ও পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা সমবায় সমিতির জমিতে নভো থিয়েটার নির্মাণের প্রস্তাব পাঠায় কেসিসি। কিন্তু এসব জমি পাওয়া কঠিন হওয়ায় পরবর্তীতে জেলা প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে অন্য জমি দেখার পরামর্শ দেয়া হয়। সূত্রটি জানায়, সার্বিক বিষয় নিয়ে ২০১৪ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি খুলনা সার্কিট হাউজে জেলা প্রশাসন ও কেসিসির সমন্বয় সভায় মুজগুন্নি মৌজার পর্যটন করপোরেশনের ৫ দশমিক ০৯৬ একর জমিতে নভো থিয়েটার নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানো হয়। কিন্তু ওই জমি পর্যটন কর্তৃপক্ষের হওয়ায় তারা বেঁকে বসে। সর্বশেষ ২০১৬ সালের ৩১ অক্টোবর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে অতিরিক্ত সচিব দিলীপ কুমার বসাক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) আবুল বাশার মো. জহুরুল ইসলাম খুলনায় আসেন। তারা নগরীর জিরোপয়েন্ট ও পেট্রোল পাম্পের মধ্যবর্তী কৃষ্ণনগর মৌজার ১০ একর জায়গা পছন্দ করেন। ওই বছরের ১০ ডিসেম্বর পরিদর্শন প্রতিবেদনে ওই স্থানেই নভোথিয়েটার স্থাপনে সম্মতি প্রদান করেন।
খুলনার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা থেকে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২১ নভেম্বর ওই ১০ একর জমি অধিগ্রহণের প্রশাসনিক অনুমোদন পাওয়া গেছে। ওই মাসেরই ২৮ নভেম্বর বিষয়টি খুলনা জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়। এরপর খুলনায় আর কোনো নির্দেশনা আসেনি। খুলনায় নভোথিয়েটার স্থাপনের কাজ তদারিক করছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার কর্তৃপক্ষ। বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটারের পরিচালক নায়মা ইয়াসমিন এই প্রতিবেদককে জানান, ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে ভূমি ব্যবহারের প্রশাসনিক অনুমোদন পাওয়ার পর সেখানে ফিজিবিলিটি স্টাডি করা হয়। এছাড়া পরিবেশগত সমীক্ষার কাজও শেষ হয়েছে। দরপত্র আহ্বান করে এই দুটি কাজ শেষ করতে সময় লেগেছে। তবে দুটির ফলাফলই ইতিবাচক এসেছে। এরপরই আমরা প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরির কাজে হাত দিয়েছি। এটি শেষ করতে সময় লাগবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারের মহাপরিচালক আবুল বাশার মোঃ জহুরুল ইসলাম বলেন, স্থাপত্য অধিদপ্তর খুলনা নভোথিয়েটারের নকশা প্রণয়নের কাজ করছে। নকশা হাতে পাওয়ার পর প্রকল্প তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে। এটি নির্মাণে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার ওপরে খরচ হবে। এতো বড় প্রকল্প মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা কমিশন একনেকে অনুমোদন হয়ে কাজ শুরু হতে কমপক্ষে ৩ বছর সময় লাগার কথা। তবে দ্রুত কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, খুলনা, বরিশাল ও রাজশাহীতে একটি করে নভোথিয়েটার নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয় ২০১২ সালে। ২০১৬ সালে রাজশাহীতে নভোথিয়েটার স্থাপনের জন্য ২২২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদন হয়। অথচ খুলনা নভোথিয়েটারের প্রকল্প তৈরির কাজ এখনো শেষ হয়নি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নজরদারি ও তদারকির অভাবে এই কাজ আরও পিছিয়ে যেতে পারে। নভোথিয়েটারের কাজ দ্রুত শুরুর জন্য খুলনা ৬টি সংসদীয় আসনের জনপ্রতিনিধি ও সিটি মেয়র এবং স্থানীয় সরকারি দলের নেতাদের সঠিক তদারকি প্রয়োজন।
বাসস/সংবাদদাতা/রশিদ/২০১০/মরপা