২০২০ সালের মধ্যে দেশের বনাঞ্চল ২০ শতাংশে উন্নীত করা হবে

321

ঢাকা, ১৯ এপ্রিল, ২০১৮ (বাসস) : ২০২০ সালের মধ্যে দেশের বিদ্যমান ১২ শতাংশ বনের সম্প্রসারণ করে ২০ শতাংশে উন্নীত করা হবে।
আজ রাজধানীর আগারওগাঁও বন অধিদপ্তরের হৈমন্তী মিলনায়তনে ‘টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-১৫’ অর্জনে আয়োজিত এক কর্মশালায় আরো বলা হয় একই সময়ের মধ্যে জলাভূমি সুরক্ষার কাজ ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা হবে।
পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে সামাজিক বনায়ন সম্প্রসারণের পাশাপাশি পারিবারিক বনায়নের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।
রাস্তা-ঘাটসহ যেখানেই পতিত জায়গা পাওয়া যাবে, সেখানেই বনায়ন করতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
তিনি বলেন, ভৌগলিক কারণে বাংলাদেশ বিশ্বের বিভিন্ন দেশগুলোর চেয়ে কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। তাই সামাজিক ও পারিবারিক বনায়ন বাড়ালে এ সংকট মোকাবেলা করা সম্ভব হবে।
মন্ত্রী বলেন, একটি দেশে স্থলভাগের ২০ শতাংশ বনের আওতায় থাকা প্রয়োজন।কিন্ত বাংলাদেশে রয়েছে ১১ থেকে ১২ শতাংশ। বৈশ্বিক কারণে এবং এসডিজি লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে বন সম্প্রসারণের বিষয়টিকে অতি গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় এনে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, ভূমি, নদী, পানিসহ পরিবেশ দূষণ ক্রমেই বাড়ছে। নদীগুলো ভূমিদস্যুরা কৌশলে ভরাট করছে যা পরবর্তীতে মরুকরণসহ জটিলতা তৈরি করবে।
সুন্দরবনের কাছাকাছি ১৯০টির মতো শিল্প কারখানা গড়ে উঠেছে। সুন্দরবন রক্ষায় বিশেষ ব্যবস্থাপনা কমিটি রাখা প্রয়োজন এ কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আগামীতে সুন্দরবন কেন্দ্রিক শিল্পকারখানা গড়ে উঠলে তার জন্য বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। অন্যদিকে নদী রক্ষাসহ জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বিশেষ ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশনা প্রদান করেন।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব আবদুল্লাহ আল মহসীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মোহাম্মদ সফিউল আলম চৌধুরী ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও ড. সুলতানা আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বন অধিদপ্তরের উপÑপ্রধান বন সংরক্ষক জহির উদ্দিন আহমেদ।
প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়, ১৬শ’ প্রজাপতির বণ্যপ্রাণীর অ্যাসেসমেন্ট করা হয়েছে তা ২০২০ সালের মধ্যে আরো এক হাজারে বৃদ্ধি করার সম্ভাবনা রয়েছে। ২০২০ সালের মধ্যে দেশের ১৩ শতাংশ বনকে ২০ শতাংশ সম্প্রসারণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।
কর্মশালায় বক্তারা বলেন, এসডিজির গোল- ১৫ এর অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে বনকে আরো সম্প্রসারিত করতে হবে। নদী, পানি, ভূমি ও পরিবেশ দূষণরোধ কল্পে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করার উদ্যোগ নিতে হবে। এছাড়া দেশকে মরুকরণের হাত থেকে বাঁচাতে সকল মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।
উপমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব বলেন,প্রকৃতি সংরক্ষণ এবং টেকসই ব্যবস্থাপনা বিষয়ে শিক্ষা ও গবেষণাসহ উদ্ভিদ ও প্রাণীর স্বাভাবিক প্রাকৃতিক আবাসস্থল তৈরিতে দেশের বিভিন্নস্থানে ইকোপার্ক গড়ে তোলা হয়েছে।
এছাড়া নতুন প্রজন্মের জন্য ২০২১ সালের মধ্যে একটি দূষণমুক্ত সবুজ বাসযোগ্য দেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।