ক্যান্সার সনাক্তকরণের প্রযুক্তি বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য : শিক্ষামন্ত্রী

452

ঢাকা, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভাবিত ক্যান্সার সনাক্তকরণের প্রযুক্তি একটি সম্পূর্ণ নতুন আবিস্কার। এটি শিক্ষা গবেষণায় একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য। সকল মানুষের কল্যাণে এ প্রযুক্তি ব্যবহৃত হবে।
আজ রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভাবিত ক্যান্সার সনাক্তকরণ প্রযুক্তি সম্পর্কে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এই পদ্ধতিতে অল্প খরচে এবং কম সময়ে ক্যান্সার সনাক্তকরণ করা সম্ভব হবে। এটি সফলভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে শুধু ক্যান্সার রোগাক্রান্ত রোগীদের রক্ত নয়, অন্য যেকোন স্যাম্পলের নন-লিনিয়ার ধর্ম খুবই সহজে সূক্ষ্মভাবে পরিমাপ করা সম্ভব হবে।’ তিনি বলেন, হায়ার এডুকেশন কোয়ালিটি এনহান্সমেন্ট প্রজেক্টের (হেকেপ) আওতায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হকের নেতৃত্বে একদল গবেষক নন-লিনিয়ার অপটিক্স গবেষণায় ক্যান্সার সনাক্তকরণের এই সাশ্রয়ী প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন।
প্রচলিত পদ্ধতির বাইরে নতুন এই পদ্ধতিতে রক্ত পরীক্ষা করে সম্ভাব্য ক্যন্সার সনাক্তকরণের সম্ভাবনা উন্মোচিত হয়েছে এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০১৬ সালের মার্চ মাসে ‘নন-লিনিয়ার অপটিক্স ব্যবহার করে বায়োমার্কার নির্ণয়’ শীর্ষক প্রকল্পটি হেকেপের আওতায় গৃহীত হয়। এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে নন-লিনিয়ার বায়ো-অপটিক্স রিসার্চ ল্যাবরেটরি গড়ে তোলা হয়। এই ল্যাবরেটরিতে ক্যান্সার আক্রান্ত মানুষের রক্তের সিরামে শক্তিশালী লেজার রশ্মি পাঠিয়ে নন-লিনিয়ার সূচক পরিমাপ করার কাজ শুরু হয়েছে। বায়ো-কেমিক্যাল প্রক্রিয়ায় যে বাড়তি রিএজেন্ট ব্যবহার করতে হয় উদ্ভাবিত নতুন পদ্ধতিতে তা প্রয়োজন হয় না।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, হেকেপ এর আওতায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় উচ্চ শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য ২ হাজার ৫৪ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে টিচিং-লার্নিং ও গরেষণার সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। হেকেপের ৫টি কম্পোনেন্টের মধ্যে একাডেমিক ইনোভেশন প্রকল্পে সবচেয়ে বেশি অর্থায়ন করা হয়েছে। এর আওতায় ৩৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ে (২৮টি সরকারি ও ১০টি বেসরকারি) মোট ৪৪২টি সাব-প্রজেক্টে ৮০২ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।
তিনি বলেন, উচ্চ শিক্ষার মান উন্নয়নে ও নতুন জ্ঞান সৃষ্টির লক্ষ্যে গবেষণায় ব্যয় বৃদ্ধি করা হয়েছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অধিকতর গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে এবং নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনে বাংলাদেশ সক্ষমতা অর্জন করছে।
সংবাদসম্মেলনে উদ্ভাবন সম্পর্কে একটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও গবেষণা দলের প্রধান ইয়াসমিন হক।
সংবাদ সম্মেলনে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদ, বিশ্ব ব্যাংকের চিফ অপরেশনস অফিসার ড. মোখলেছুর রহমান এবং প্রকল্প পরিচালক ড. গৌরাঙ্গ চন্দ্র মোহান্ত।