রাজধানীর প্রধান সড়কে লেগুনা চলাচল করতে দেয়া হবে না : ডিএমপি

228

ঢাকা, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ (বাসস) : ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, মহানগরীর প্রধান সড়কগুলোতে লেগুনা চলাচল করতে দেয়া হবে না।
যেসব মোটর সাইকেল আরোহীদের হেলমেট থাকবে না, তাদের তেল দেওয়া হবে না বলেও জানান ডিএমপি কমিশনার।
তিনি আজ মঙ্গলবার রাজধানীর মিন্টো রোডে মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ।
আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, পেট্রোল পাম্পগুলোর মালিকদের সঙ্গে কথা বলেছি, মোটর সাইকেলে যাদের হেলমেট থাকবে না, তাদের তেল দেওয়া হবে না। মোটর সাইকেলে তিনজন যাত্রী উঠতে পারবেন না। যাত্রীকে অবশ্যই হেলমেট পরতে হবে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং ট্রাফিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে ডিএমপি’র পক্ষ থেকে সেপ্টেম্বর মাসব্যাপী বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।
এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে যত দিন শৃঙ্খলা ফিরে না আসবে, তত দিন পুলিশ কাজ করে যাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, সেপ্টেম্বর মাসব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে রাজধানীর জাহাঙ্গীর গেট থেকে গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত চালু হচ্ছে মডেল ট্রাফিক ব্যবস্থা। যেখানে ট্রাফিক সিগন্যাল বাতির ভিত্তিতে গাড়ি চলাচল করবে।
এ সময় পুলিশের পাশাপাশি রোভার স্কাউট, গার্লস গাইড ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকেরা পুলিশের সঙ্গে জনসচেতনতামূলক কর্মকা-ে অংশ নেবেন।
বাসস্টপ নির্ধারণের জন্য ১২১টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে এবং সেখানে সাইনবোর্ড লাগানোর কাজ চলছে জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘সড়কে যত্রতত্র বাস থামানো যাবে না। বাস থামানোর জন্য আমরা স্টপেজ নির্ধারণ করে দেবো। এক স্টপেজ থেকে আরেক স্টপেজে যাওয়ার পথে কোথাও বাস থামানো যাবে না এবং বাসের দরজা বন্ধ রাখতে হবে। যেসব গাড়ি বিশেষ সুবিধা আদায়ের জন্য অবৈধভাবে পতাকা ব্যবহার করে, তাদের পতাকা নামিয়ে ফেলার জন্য অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, তা না হলে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, রাজধানীর জাহাঙ্গীর গেট হতে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত আগামীকাল ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মডেল ট্রাফিক ব্যবস্থা চালু হবে। পর্যায়ক্রমে রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তায় মডেল ট্রাফিক ব্যবস্থা চালু করা হবে। এক মাসব্যাপী চলমান ট্রাফিক কর্মসূচিতে প্রতিটি পালায় পুলিশের সাথে ৩২২ জন রোভার স্কাউটের সদস্য কাজ করবে। ট্রাফিক শৃংখলা, দুর্ঘটনা হ্রাস ও ঢাকা মহানগরীকে যানজট মুক্ত রাখার লক্ষ্যে এই কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে।
গাড়ির মালিক ও চালকদের উদ্দেশে কমিশনার বলেন, ‘চালকেরা গাড়িতে নিজের মোবাইল নম্বর ও ছবি প্রকাশ্য স্থানে লাগিয়ে রাখবেন। গাড়ি চালানোর পূর্বে অবশ্যই বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স সঙ্গে রাখবেন। গাড়ির মালিকেরা গাড়িতে সমস্ত কাগজপত্র আপডেট রাখবেন। কোন অবস্থায় ফিটনেস বিহীন ও বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যতীত গাড়ি রাস্তায় নামাবেন না। গাড়ির চালকরা বেতনভুক্ত হবে। কোন অবস্থায় চালকদের চুক্তিভিত্তিক গাড়ি দেয়া যাবে না। যে গাড়ির মালিক এই নিয়ম অমান্য করবেন বিআরটিএ থেকে তাদের রুট পারমিট বাতিল করা হবে। এক্ষেত্রে কোন ছাড় দেয়া হবে না।’
পথচারী ও শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে কমিশনার বলেন, ‘পথচারীরা কোন অবস্থায় যত্রতত্র রাস্তা পারাপার করবেন না। রাস্তা পারাপারে জেব্রা ক্রসিং, ফুটওভার ব্রীজ ও আন্ডারপাশ ব্যবহার করুন। এর ব্যত্যয় ঘটলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দেয়া হবে। কমবয়সী শিক্ষার্থীরা রাস্তা পারাপারের সময় সিনিয়র শিক্ষার্থীদের সাহায্য নিয়ে নির্ধারিত স্থান দিয়ে রাস্তা পারাপার হতে হবে।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, গত ছয় মাসে চালক ও যানবাহনের বিরুদ্ধে ৬ লাখ ২৬ হাজার আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভিডিও দেখে এক বছরে ৯৯ লাখ মামলা করা হয়েছে। ঈদের আগে যে ১০ দিন ট্রাফিক সপ্তাহ ছিল, ওই সময়ে ৮৮ হাজার ২৯৩ মামলায় ৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।