ভোলায় ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

322

ভোলা, ১৯ এপ্রিল, ২০১৮ (বাসস) : জেলায় চলতি মৌসুমে ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ৪৯০ হেক্টর জমিতে ভুট্রা আবাদের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আবাদ হয়েছে ৮৯০ হেক্টর জমিতে। নির্ধারিত জমি থেকে ৩ হাজার ৩৫৫ মে. টন ভুট্টা উৎপাদন করা হবে। ভুট্টা চাষে পরিশ্রম কম, লাভজনক ও সরকারি প্রণোদনা প্রদানের ফলে চাষিরা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে। চলতি রবি মৌসুমে জেলায় ভুট্টার ব্যাপক আবাদ হওয়ায় হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক প্রসান্ত কুমার সাহা বলেন, জেলায় কৃষকদের ভুট্টা চাষে আগ্রহী গড়ে তুলতে ৩ হাজার কৃষকের মধ্যে উন্নত জাতের বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। প্রতি কৃষককে ২ কেজি বীজ, ২০ কেজি বিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া ভুট্টার উৎপাদন বৃদ্ধি করতে ২০০টি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে জেলায় এবছর ভুট্টার বাম্পার ফলন হবে বলে জানান এ কৃষি কর্মকর্তা।
কৃষকরা জানান, সাধারণত কার্তীক অগ্রহায়ণ মাসে মাঠের ধান তোলার পরই জমি পরিচর্যা করা হয়। পৌষের দিকে লাগানো হয় ভুট্টার বীজ। বৈশাখ মাসের শেষ দিকে ফসল ঘরে তোলা হয়। সাম্প্রতিক সময়ে জেলায় ভুট্টার চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এর আবাদ বাড়ছে। বিভিন্ন ফাস্টফুড ও চাইনিজে ভুট্টার চাহিদা রয়েছে। এছাড়া পল্ট্রি খাবার হিসেবে ভুট্টা ব্যবহার করা হয়। ভুট্টা চাষে কম পরিশ্রম, বিগত বছর ভুট্টার ফলন ও লাভ ভালো হওয়ায় অনেক কৃষকই এবার ভুট্টা চাষ করছেন।
সদর উপজেলার চরসামাইয়া ইউনিয়নের চরছিফলী গ্রামের কৃষক মো. ইব্রাহীম ৫০ শতাংশ জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছেন। নিজ জমি সরকারিভাবে বীজ ও সার পাওয়াতে এবার তার খরচ অনেকটাই কম হয়েছে। তিনি বলেন, এবছরই তিনি প্রথম ভুট্টার চাষ করেছেন। ভুট্টা চাষে লাভ বেশি হয় বলে তিনি এতে আকৃষ্ট হয়েছেন। এখন পর্যন্ত কোন রোগ-বালাইর প্রভাব নেই তার ফসলে। আশা করছেন অধিক ফলনের মাধ্যমে লাভবান হবেন।
একই ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের আব্দুল মালেক বাসস’কে জানান, তিনি ২০ শতাংশ জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছেন। সরকারি প্রণোদনা পাওয়াতে তিনি প্রচন্ড খুশি। মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
কৃষি কর্মকর্তারা জানান, কৃষকদের মাঝে সরকারি প্রণোদনা বীজ থেকে হেক্টর প্রতি ৭ থেকে ৮ মে. টন ভুট্টা উৎপাদন সম্ভব। আর সাধারণ বীজ থেকে আড়াই থেকে ৩ মে. টন উৎপাদন হয়। তাই উচ্চফলনশীল এসব বীজ থেকে কৃষকরা অধিক লাভবান হবেন। সামনের দিনে এর আবাদ আরো বৃদ্ধি পাবে।
উপ-সহকারী কর্মকর্তা মৃত্যুঞ্জয় তালুকদার জানান, গত বছর জেলায় ৮২০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছিল। উৎপাদন হয়েছে ৫ হাজার ২৬১ মে. টন ভুট্রা। আর চলতি মৌসুমে গত মৌসুমের চেয়ে ৭০ হেক্টর বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে এবার উৎপাদনও প্রায় দ্বিগুণ হবে। এখন পর্যন্ত মাঠে ভুট্টার অবস্থান অত্যন্ত ভালো রয়েছে। সপ্তাহে দুই দিন ইউনিয়ন পরিষদে কৃষকদের সভা করা হয়। সভায় বিভিন্ন রোগ-বালাই, বীজ রোপণ, পরিচর্য়া বিষয়ের সঠিক নির্দেশনা দেয়া হয়। এছাড়া গ্রামে পরামর্শ কেন্দ্রে সব ধরনের পরামর্শ সেবা দেয়া হয়ে থাকে।