পোশাক শিল্পে বর্জ্য রিসাইক্লিং অর্ধ বিলিয়ন ডলারের আমদানি ব্যয় সাশ্রয় করবে

1281

ঢাকা, ১৬ জুন, ২০২১ (বাসস) : ২০১৯ সালে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ও বস্ত্র কারখানাগুলো থেকে ৫ লাখ ৭৭ হাজার টন বর্জ্য উৎপাদন হয়। যার মধ্যে আড়াই লাখ টন ছিল সম্পূর্নরূপে তুলার বর্জ্য। সে হিসেবে বাংলাদেশের কারখানাগুলো রিসাইক্লিং বাজারে উল্লেখিত তুলার বর্জ্য ১০০ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করতে পারতো।
বর্তমানে বাংলাদেশ টেক্সটাইল ফাইবার আমদানির উপর অত্যধিক নির্ভরশীল। ২০১৯ সালে দেশে ১ দশমিক ৬৩ মিলিয়ন টন স্ট্যাপল কটন ফাইবার আমদানিতে ব্যয় হয় ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অন্যদিকে শতভাগ তুলার বর্জ্য দেশের ভিতরেই রিসাইকেল করে বাংলাদেশ প্রায় ১৫ শতাংশ তুলা আমদানি হ্রাস করতে পারে। আর এভাবে দেশ অর্ধ বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করতে পারে।
গ্লোবাল ফ্যাশন এজেন্ডা এর নেতৃত্বে সার্কুলার ফ্যাশন পার্টনারশীপ বিষয়ক প্রকল্পের সাম্প্রতিক তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষন করে এমন পরিসংখ্যাণ উঠে এসেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ফ্যাশন কোম্পানিগুলোর জন্য বাংলাদেশে সার্কুলার সিস্টেম বাস্তবায়নের সুবর্ন সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশে টেক্সটাইলখাতে যে বর্জ্য উৎপাদন হয়, রিসাইক্লিং বাজারে তার আর্থিক মূল্য ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অধিক।
বুধবার নীতিনির্ধারক ও ফ্যাশন ইন্ডাষ্ট্রি নির্বাহীদের নিয়ে সার্কুলার ফ্যাশন পার্টনারশীপ প্রকল্প আয়োজিত এক অনলাইন ইভেন্টে বাংলাদেশের উপর পরিচালিত গবেষনা প্রকাশ করা হয়। এতে মূল বক্তব্য দেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
ডেনমার্কে অবস্থিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম আল্লামা সিদ্দিকী, বাংলাদেশে নিযুক্ত ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উইনি স্ট্রাপ পিটারসেন, বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, গ্লোবাল ফ্যাশন এজেন্ডার সিইও ফেডরিকা মারচিওনি, রিভার রিসোর্সেস এর হেড অব রিসাইক্লিং ও প্রধান প্রকল্প কর্মকর্তা নিন ক্যাসল আলোচনায় অংশ নেন।
সার্কুলার ইন্ডাষ্ট্রী’তে উত্তোরণের পথে প্রতিবন্ধকতাসমূহ ও সম্ভাবনা এবং বাংলাদেশ কিভাবে বিশ্বে সার্কুলার ফ্যাশনে নেতৃত্ব দিতে পারে, সে বিষয়ে তারা মতবিনিময় করেন।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান তার বক্তব্যে বলেন, পৃথিবী আজ পরিবেশগত ঝুঁকির মুখে পড়েছে। এ অবস্থায় ফ্যাশন সার্কুলার এর লীনিয়ার ইকোনোমিক মডেলে যেতে হবে। এটাই আমাদের ভবিষ্যত এবং এ ব্যাপারে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ।
প্রসঙ্গত, গ্লোবাল ফ্যাশন এজেন্ডা এর নেতৃত্বে সার্কুলার ফ্যাশন পার্টনারশীপ একটি ক্রস-সেক্টরিয়াল প্রকল্প এবং এতে অংশীদার হিসেবে যুক্ত রয়েছে রিভার্স রিসোর্সেস ও বিজিএমইএ। প্রকল্পে পিফোরজি সমর্থন দিচ্ছে। ২০২০ সালের নভেম্বরে প্রকল্প উদ্বোধনের পর থেকে এ পর্যন্ত ৫০ এরও অধিক ব্র্যান্ড, ম্যানুফ্যাকচারার, রিসাইকেলার এবং এনজিও প্রকল্পে অংশগ্রহনের জন্য স্বাক্ষর করেছে। ফ্যাশন কোম্পানিগুলোর মধ্যে সর্বশেষ বেনেটন, ফ্যাশন কিউব, জিমহার্ক, কিবি, নেক্সট, প্রাইমার্ক এবং দি ভেরি গ্রুপ প্রকল্পে যুক্ত হয়েছে।
পার্টনারশীপ প্রকল্পটি উৎপাদন পরবর্তী ফ্যাশন বর্জ্যকে পুনরায় নতুন উৎপাদন প্রক্রিয়ায় ফিরিয়ে আনার নির্দেশনা দানের মাধ্যমে বাংলাদেশের রিসাইক্লিং ইন্ডাষ্ট্রিকে সহায়তা করছে। অধিকন্তু, প্রকল্পটি কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে রপ্তানিতব্য তৈরি পোশাক পণ্যের যে ডেডস্টক হয়েছে, সেগুলো সমাধানে বাংলাদেশে বস্ত্র এবং পোশাক প্রস্তুতকারক, রিসাইকেলারস এবং ফ্যাশন ব্র্যান্ডদের মধ্যে সহযোগিতার যোগসূত্র স্থাপন করে দিচ্ছে।