মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতির জন্য ‘মুজিবনগর’ সরকারের কোন বিকল্প ছিলো না : রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন

357

ঢাকা, ১৮ এপ্রিল ২০১৮ (বাসস) : জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতির জন্য ‘মুজিবনগর’ সরকারের কোন বিকল্প ছিলো না।
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল গঠিত স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলার আম্্রকাননে ১৭ এপ্রিল শপথগ্রহণ করে। মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতির জন্য এই সরকারের কোন বিকল্প ছিলো না। মুজিবনগর সরকারের অসংখ্য চ্যালেঞ্জ ছিলো, কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা সুচারুরূপে কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন।’
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল-এর যৌথ উদ্যোগে ১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক ‘মুজিবনগর দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এদিন, যথাযোগ্য মর্যাদায় ঐতিহাসিক ‘মুজিবনগর দিবস’ উদযাপন করা হয়। জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে দিবসের অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।
এরপর মুজিবনগর সরকারের রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদসহ এ সরকারের সকল নেতৃবৃন্দের স্মৃতির উদ্দেশ্যে একমিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে, দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাণী পাঠ করে শোনানো হয়।
মুজিবনগর দিবসের তাৎপর্য ও ইতিহাস তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বলেন, ‘মুজিবনগর সরকারের অসংখ্য চ্যালেঞ্জ ছিল, কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা সুচারুরূপে সরকার পরিচালনা করেছেন। এর উৎকৃষ্ট প্রমাণ তারা সে সময়ের আয়-ব্যয়ের হিসাব পর্যন্ত রেখেছিলেন। এর থেকে প্রমাণিত হয় এ সরকার অন্যান্য ক্ষেত্রেও ছিল অত্যন্ত সফল’।
প্রবাসী বাংলাদেশিরা যাতে বাংলাদেশ ভ্রমণকালে তাদের সন্তানদের মুজিবনগর পরিদর্শনের সুযোগ করে দেন সে বিষয়ে তিনি আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার বিভিন্ন দিকও তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ।
নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল এর কনসাল জেনারেল শামীম আহসান বলেন, ‘মুজিবনগর সরকার শুধু মুক্তিযুদ্ধই পরিচালনা করেননি, প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবিলা করে বিশ্ব জনমতকে পক্ষে এনেছে’।
উল্লেখ্য, মুজিবনগরে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথ গ্রহণের ফলেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের অধীনে কর্মরত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশী কূটনীতিকগণ সকল প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আনুগত্য আনেন যা বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের স্বীকৃতি অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রেখেছিল।
আলোচনাশেষে মুজিবনগর সরকারের প্রয়াত সকল সদস্য, জাতীয় চারনেতা ও মহান মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশলাখ শহিদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাঙালি, মুক্তিযোদ্ধা, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও সাংস্কৃতিক কর্মীসহ বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও কনস্যুলেট জেনারেল-এর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।