বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য বেজা ও বেপজার মধ্যে চুক্তি সই

1371

ঢাকা, ৩০ মে, ২০২১ (বাসস) : চট্টগ্রাম মিরেরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেপজা) ১ হাজার ১৫০ একর অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন এবং বিনিয়োগকারিদের মধ্যে প্লট বরাদ্দের লক্ষ্যে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) ও বেপজার মধ্যে চুক্তি সই হয়েছে।
রোববার রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে এই চুক্তি সই হয়। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব ড. আহমাদ কায়কাউস। বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া ও বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. নজরুল ইসলাম।
বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগকারিদের শিল্প কারখানা স্থাপনের জন্য বাঁধসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো যেমন রাস্তা, পানির লাইন ও বিদ্যুৎ লাইন স্থাপনের কাজ প্রায় শেষ। এছাড়া জোন সার্ভিসেস কমপ্লেক্স, অফিসার্স ও স্টাফ ডরমিটরি, ইনভেস্টরস্ রেসিডেন্স, আনসার ও সিকিউরিটি ব্যারাক, সিকিউরিটি ও কাস্টমস ভবন, মেইন গেইট ও কাস্টমস গেইটের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, করোনা সংক্রমণ সত্ত্বেও বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগকারিরা যথেষ্ট আগ্রহ দেখাচ্ছে। এখানে মোট ৫৩৯টি শিল্প প্লট নির্মিত হচ্ছে। এর মধ্যে ১৪০টি প্লট খুব শীঘ্রই বিনিয়োগকারিদের মধ্যে বরাদ্দের জন্য উন্মূক্ত করা হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব ড. আহমাদ কায়কাউস বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় শিল্পনগর মিরেরসরাইতে স্থাপন হচ্ছে। এর পরিপূর্ণ সদ্ব্যব্যবহার বা সুফল পেতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগসমূহকে একত্রে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করতে হবে। তাহলে আমরা প্রকৃত অগ্রগতি দেখতে পাবো।
ঢাকার অদূরে আশুলিয়া এলাকায় শিল্পাঞ্চল তৈরির পেছনে এখানকার ইপিজেডের ভূমিকা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আশুলিয়াতে যে শিল্পনগরী গড়ে উঠেছে, এর পেছনে আশুলিয়া ইপিজেড মূল ভূমিকা রেখেছে। আশা করি মিরেরসরাই শিল্পনগরে অন্যান্য বিনিয়োগকারিদের জন্য বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, দেশের সব বড় বিনিয়োগকারিরা ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে বিনিয়োগ করতে শুরু করেছে। তিনি আশাবাদ করে বলেন, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারিরা এটিকে বিশে^র নামকরা একটি শিল্পনগরী হিসেবে গড়ে তুলবে।
সভাপতির বক্তব্যে পবন চৌধুরী বলেন, বেজা এবং বেপজার মধ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে বেজা আরেকটি মাইলফলক রচনা করেছে। এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়ন এবং একটি শিল্পোন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ বিনির্মাণে একধাপ এগিয়ে গেলাম।
তিনি আরও বলেন, করোনাকালেও বাংলাদেশ বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সমর্থ হয়েছে। শুধুমাত্র গত বছরেই বেজা ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছে। অচিরেই বেজার অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে অবস্থিত বেশ কিছু কারখানা পুরোদমে উৎপাদনে যাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
তিনি বলেন, দেশে আগামী ১৫ বছরের মধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর মাধ্যমে পত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ১ কোটি লোকের কর্মসংস্থান তৈরি হবে এবং আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতিবছর অতিরিক্ত ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয় অর্জিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।