সংলাপের দরজা বিএনপিই বন্ধ করে দিয়েছে : কাদের

881

সিলেট, ৩০ আগস্ট, ২০১৮ (বাসস) : সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সংলাপের দরজা বিএনপিই বন্ধ করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর খবর পেয়ে ২০১৫ সালে গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসায় যখন গিয়েছিলেন, তখন গেটের দরজা বন্ধ করে তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বিএনপি সেদিন গেটের দরজা বন্ধ করে সংলাপের দরজা বন্ধ করে দিয়েছে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজ বৃহস্পতিবার সিলেটে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন। সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি, জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি, দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এনামুল হক শাহীন, সদস্য অধ্যাপক রফিকুর রহমান, সিলেট জেলার সহ-সভাপতি সংসদ সদস্য ইমরান আহমদ, মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েস, জেলার সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয় উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে এটি সবচেয়ে জঘন্যতম হত্যাকান্ড। কারণ, অতীতে যত ন্যক্কারজনক হত্যাকান্ড ঘটেছে সেসব হত্যাকান্ডে কোন অবুঝ শিশু ছিল না, কোন অন্তঃসত্ত্বা নারীও হত্যার শিকার হয়নি।
তিনি এই হত্যাকান্ডে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে বলেন, বঙ্গবন্ধুর লাশ যখন সিঁড়িতে পড়ে রইল, তখন জিয়াউর রহমান মেজর ডালিমকে ডেকে বললেন ‘গুড জব, ওয়েল ডান’। মেজর জিয়া রাজাকার ও বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের পুনর্বাসিত করেছেন। এ কারণে প্রমাণ হয় জিয়া বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডে জড়িত।
সেতুমন্ত্রী বলেন, জিয়া শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, তার দল বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড ছুঁড়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে প্রাণে মারার চেষ্টা করেছে।
হাওয়া ভবন এই হামলার মাস্টারমাইন্ড ছিল-এ অভিযোগ করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সেদিন প্রাণে বেঁচে গেলেও অসংখ্য নেতাকর্মী ওই হামলায় নিহত হন, শত শত নেতাকর্মী পঙ্গুত্ব বরণ করেন। বিএনপি, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান এসবের দায় এড়াতে পারেন না। তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, যার বাবাকে হত্যা করা হলো, যাকে প্রাণে মারার চেষ্টা হলো তবুও তিনি মানবিক কারণে খালেদা জিয়ার ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে বাসায় গেলেন। কিন্তু, বিএনপি নেতারা বাসার প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দিলেন। তারমানে শেখ হাসিনাকে অপমান করা হলো।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে গণভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কিন্তু সেদিন বেগম জিয়া কী নোংরা ভাষায় কথা বলেছেন,যা দেশের মানুষ জানে।
এসব প্রসংগ টেনে ওবায়দুল কাদের বিএনপির উদ্দেশে বলেন, আপনারা সংলাপ চান, আমরাও সংলাপ চাই। আমরা সংলাপের বিরুদ্ধে নই। কিন্তু, এতকিছুর পরও কার সাথে সংলাপ করবো?’
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করার জন্য দেশে ও দেশের বাইরে চক্রান্ত এবং ষড়যন্ত্র চলছে বলেও সেতুমন্ত্রী জানান।
তিনি বলেন, ‘থাইল্যান্ডে কারা যাচ্ছেন, কখন বৈঠক করছেন, মালয়েশিয়ায় কারা গোপন বৈঠক করছেন, ঢাকায় রাতের আঁধারে কারা গোপন বৈঠক করে ষড়যন্ত্র করছেন সব তথ্য আমাদের কাছে আছে।’
ওবায়দুল কাদের দৃঢ়কণ্ঠে বলেন, কোন ষড়যন্ত্র বা চক্রান্ত কাজে আসবে না। ২০০১ সালের পুনরাবৃত্তি আর হবে না। সকল ষড়যন্ত্র বাংলার জনগণকে নিয়ে প্রতিহত করা হবে।