কালিহাতীর বেতের তৈরি কুটির শিল্প জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে

472

টাঙ্গাইল, ২৯ আগস্ট ২০১৮ (বাসস) : জেলার কালিহাতীতে বেতের পাটি দিয়েই শিল্পীরা তাদের শৈল্পিক মনোভাব কাজে লাগিয়ে তৈরি করছেন বিভিন্ন কুটির শিল্প। এ শিল্পের সামগ্রীগুলো মন ছুঁয়ে যাচ্ছে সবার। আর্থিকভাবেও লাভবান হচ্ছে এ শিল্পের সাথে জড়িতরা।
জানা যায়, কুটির শিল্পের মধ্যে বানানো হচ্ছে- ল্যাপটপ ব্যাগ (ডায়মন্ড), ছেলেদের অফিস ব্যাগ, মেয়েদের বড় গোহা ব্যাগ, লেডিস বড় ডি ব্যাগ, লেডিস কোবরা ব্যাগ, লেডিস আপেল ব্যাগ, বড় টব ব্যাগ, ছোট পিয়ালী ব্যাগ, চিকন-মোটা মার্কেটিং ব্যাগ, বাঙ্গালি লেডিস ব্যাগ, দিনহা পার্স, ছেলেদের মানিব্যাগ, বেল্ট, ছেলে-মেয়েদের বিভিন্ন ডিজাইনের জুতোসহ নানারকম সামগ্রী।
শিল্পীরা মনের মাধুর্য মিশিয়ে তৈরি করছেন চোখ ধাঁধানো এসব পণ্য সামগ্রী। এই ভিন্নধর্মী কুটির শিল্প তৈরি করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন উপজেলার সিলিমপুর চাটিপাড়া গ্রামের অনিল চন্দ্র দে’র ছেলে স্বপন কুমার দে। তিনি জানান, ২০১৪ সালে এ বিষয়টি মাথায় আনেন এবং পাটি তৈরির পাশাপাশি কুটির শিল্পের সামগ্রীগুলো তৈরি করে ব্যাপক সাড়া পান। বর্তমানে তিনি এবং তার পরিবারের লোকজন দিয়ে এসব সামগ্রী তৈরি করছেন।
বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে অর্ডার নিয়ে আসেন। সময় মতো ডেলিভারি দিতে পারছেন তাই কাজের চাহিদা দিনদিন বেড়েই চলছে। সামগ্রীগুলো সবার মনে জায়গা করে নিয়েছে। এ সামগ্রী তৈরি করতে সোল্ট, রেক্সিং, চেইন, কাপড়, সুতাসহ বেশকিছু উপাদান লাগে। যা বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়। সঠিক দাম না জানায় উপাদানগুলো তাকে চড়া দামে কিনতে হচ্ছে। তবুও সব খরচ বাদ দিয়ে প্রতি পিস জিনিসে ৩০/৪০ টাকা লাভ থাকে। মাসে গড়ে এক লাখ টাকায় বিশ হাজার টাকা লাভ থাকে। এ পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গা থেকে পাওয়া ৫/৬টি অর্ডারের কাজ করেছি। আরও অর্ডার আসছে।
তিনি আরো জানান, পাটি শিল্পকে আরোও জাগিয়ে তুলতে তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের (৭ মার্চের) সেই ঐতিহাসিক ভাষণের চিত্রটি পাটির মধ্যে তুলে ধরার কাজ শুরু করেছেন। শুধু হাতের কারুকাজ দিয়েই এ কাজটি সম্পন্ন করবেন। স্বপন দে’র এ কাজ দেখে কালিহাতী উপজেলার বিভিন্ন জায়গার পাটি শিল্পীদের মনে উৎসাহের সৃষ্টি হচ্ছে। অনেকে কাজও শুরু করে দিয়েছেন ।
কালিহাতী উপজেলা পাটি শিল্প সমিতির সভাপতি দীনেশ চন্দ্র দত্ত ও সাধারণ সম্পাদক হরে কৃষ্ণ পাল জানান, সরকারিভাবে সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণের মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহ করতে পারলেই এ পাটি শিল্প ও পাটি দিয়ে কুটির শিল্প সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করবে। শুধু দেশেই নয়, দেশের বাইরেও এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। স্বপনের পাশাপাশি আরও অনেক পাটি শিল্পীদের এ কাজের প্রতি আগ্রহ জন্ম নেবে এবং ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচসহ সংসারের সকল চাহিদা মিটিয়ে সুন্দরভাবে বাচঁতে পারবে।