বাজিস-৪ : পিরোজপুরে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত সোবাহান মঞ্জিল

653

বাজিস-৪
পিরোজপুর-সোবাহান মঞ্জিল
পিরোজপুরে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত সোবাহান মঞ্জিল
পিরোজপুর, ২৬ আগস্ট ২০১৮ (বাসস) : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি ধন্য পিরোজপুর শহরের সোবাহান মঞ্জিলটি আজও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে। শোকের মাসে পথচারীরা অপলক নেত্রে তাকিয়ে থাকে হাজার বছরের সেরা বাঙ্গালী ইতিহাসের রাখাল রাজা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত এ ভবনটির দিকে। ১৯৫৪, ১৯৫৬ এবং ১৯৭০ সালে বঙ্গবন্ধু পিরোজপুরে এসে মহাকুমা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বিশিষ্ট আইনজীবী আব্দুস সোবাহানের বাড়িতে অবস্থান করেছেন এবং এ বাড়িতে বসেই কর্মী সভায় ভাষণ দিয়েছেন। পিরোজপুর শহরে জনসভায় ভাষণ দিয়ে আবার এ বাড়িতেই ফিরে এসে রাত্রি যাপন করেছেন। পিরোজপুরের এ ভবনটি বঙ্গবন্ধু প্রেমিকদের কাছে এক ঐতিহাসিক ভবনে পরিণত হয়েছে। ১৯৭০ সালে এ ভবনে বসে তিনি বলেছিলেন ৬ দফা হচ্ছে স্বাধীনতার সনদ, বাঙ্গালীদের মুক্তির সনদ। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের পূর্বে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কে নিয়ে নির্বাচনী প্রচারনা চালাতে, ১৯৫৬ সালের যুক্তফ্রন্ট সরকারের মন্ত্রী হয়ে এবং ১৯৭০ সালে শেরেবাংলার পুত্র এ কে ফয়জুল হককে সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধু পিরোজপুরে এসে এ সোবাহান মঞ্জিলে অবস্থান করেন। ১৯৫৪ এবং ১৯৫৬ সালে বঙ্গবন্ধুর পিরোজপুর সফর কালে আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুস সোবাহান এবং সাধারন সম্পাদক জয়নুল আবেদীন, বদিউল আলম চৌধূরী, আজিজুর রহমান সিকদার, সফিজউদ্দিন আহম্মেদ, ডাঃ আমোদ রঞ্জন গুহ সহ মহাকুমার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সার্বক্ষণিক বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে থাকতেন। ১৯৭০ সালে ৭ এবং ১৭ ডিসেম্বর পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ এবং পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণা চালাতে পিরোজপুরে এসে বঙ্গবন্ধু এ ভবনটিতেই অবস্থান করেছেন। পিরোজপুর শহরের টাউন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে এক বিশাল জনসভায় বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন ইনশাল্লাহ এ নির্বাচনে আপনাদের সমর্থনে আমরা বিজয়ী হবো আর আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি ৬ দফার দাড়ি, কমা সেমিকোলনও পরিবর্তন করা হবেনা। ৬ দফা আদায় করে ছাড়বো। জনসভায় আসার পূর্বে এ সোবাহান মঞ্জিলে প্রবেশের সময় বাড়ির লোকজন বঙ্গবন্ধুকে অভ্যর্থনা জানায় এবং প্রয়াত আব্দুস সোবাহান এর কনিষ্ঠ পুত্র এডভোকেট সলিমুল্লাহ ৬ টি তারা খচিত একটি নৌকা বঙ্গবন্ধুর হাতে তুলে দিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানীরা ৬ দফা না মানলে কি করবেন? বঙ্গবন্ধু মুচকি হেসে বলেছিলেন সলিম স্বাধীনতা অর্জনের জন্য প্রস্তুত হও। আব্দুস সোবাহানের দৌহিত্র পিরোজপুর পৌরসভার কাউন্সিলর সাদুল্লাহ লিটন বাসসকে জানান বঙ্গবন্ধু যে টেবিলে ভাত খেতেন সে টেবিলটি এখনো অক্ষত আছে। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত পিরোজপুর শহরের হাসপাতাল সড়কের এ দ্বিতল ভবনটি পথচারীদের মহান নেতার স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়। আইনজীবী মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এম এ মান্নান বলেন, এ ভবনটির দিকে তাকালে বঙ্গবন্ধুর সুদীর্ঘ সংগ্রামী জীবনের নানা ঘটনার কথা মনে পড়ে। শোকের এ মাসে শোকাহত হয় পিরোজপুরের মানুষ ইতিহাসের মহানায়কের স্মৃতি বিজড়িত এ ভবনের দিকে তাকিয়ে।
বাসস/সংবাদদাতা/১২১৩/নূসী