বাসস সংসদ-৪ : সুবর্ণ জয়ন্তীর অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে দেশে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে : শেখ সেলিম

151

বাসস সংসদ-৪
শেখ সেলিম- হেফাজত
সুবর্ণ জয়ন্তীর অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে দেশে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে : শেখ সেলিম
ঢাকা, ৩ এপ্রিল ২০২১ (বাসস) : আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য সরকার দলীয় সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে দেশে সন্ত্রাসি কর্মকান্ড পরিচালনাকারীদের ইসলাম, দেশ ও জনগণের শক্র উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
আজ স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে এ আহবান জানান তিনি। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে কঠোর হওয়ার অনুরোধ করেন।
তিনি বলেন, যারা স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে তান্ডব চালায়, যারা এদেশের স্বাধীনতা মেনে নিতে পারে না তাদের এদেশে থাকার কোনো অধিকার নাই। । তাদের মনে রাখতে হবে এটা তালেবান বা পাকিস্তান রাষ্ট্র নয়। সন্ত্রাসী জঙ্গিদের বাংলার মাটিতে কোন স্থান নেই।
শেখ সেলিম বলেন, সরকারকে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। স্বাধীন দেশে এভাবে চলতে পারে না। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর জন্য অনেক কিছু সহ্য করে গেছি আর কোন কিছু সহ্য করা হবে না।
শেখ সেলিম বলেন, যারা স্বাধীনতা মেনে নিতে পারেনি। সেই শক্তি এই সুন্দর অনুষ্ঠানকে কলঙ্কিত করার জন্য বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এ তান্ডব চালিয়েছে।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত স্বাধীনতাবিরোধী হেফাজতে ইসলাম হাটহাজারীতে তান্ডব চালায়। তারা থানা আক্রমণ করে, পুলিশের ওপর আক্রমণ করে, পুলিশের অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়, ভূমি অফিস এবং বিভিন্ন স্থাপনা জ্বালিয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতি যারা বিন্দুমাত্র বিশ্বাস রাখে তারা কোনদিন এই জঘন্য কাজ করতে পারে না।
তিনি বলেন, গত ২৭ মার্চ তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। এসপি অফিস, থানায় আগুন এবং বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল তারা ভাঙচুর করে। এছাড়া স্থানীয় প্রেসক্লাবে আগুন দিয়ে তারা প্রেসক্লাবের সভাপতি রিয়াজুদ্দিন জামিলসহ ১১ জন সাংবাদিককে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার, ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন শোভনের বাড়িতেও আগুন দেয়া হয়।
তিনি বলেন, সিলেট, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, যাত্রাবাড়ি, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ, বসুন্ধরা এবং ৩০০ ফিট রাস্তায় বিভিন্ন স্থাপনায় আগুন দিয়েছে ও গাড়ি ভাঙচুর করেছে। হেফাজতে ইসলাম আসলে ইসলাম বিরোধী। ইসলাম কেবল হেফাজত করতে পারে আল্লাহ, জঙ্গিদের দ্বারা ইসলাম হেফাজত হতে পারে না।
তিনি বলেন, গত ২৭ মার্চ বিএনপি-জামায়াত-হেফাজত চট্টগ্রামে পুলিশের ওপর আক্রমণ করে। তারা শুধু আক্রমণ করে নাই ১০ জন পুলিশকে বোমা মেরে আহত করেছে। পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে এবং বিভিন্ন স্থাপনায় আক্রমণ করে পুড়িয়ে দিয়েছে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে যারা বিশ্বের কাছে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করেছে দরকার হলে ট্রাইবুনাল গঠন করে অবিলম্বে তাদের বিচার করতে হবে। হেফাজতের জঙ্গিরা যেসব মাদরাসা থেকে বের হয়ে এসব কর্মকান্ড চালিয়েছে সেইসব মাদরাসা বন্ধ করে দিতে হবে।
শেখ সেলিম বলেন, তারা সা¤প্রদায়িকতার কথা বলে ধর্মভীরু মুসলমানদেরকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছে। এরা রাষ্ট্রবিরোধী, ইসলামবিরোধী। এরা সন্ত্রাসী, এরা জঙ্গি, রাষ্ট্রের শত্রু, মানবতার শত্রু, দেশের শত্রু। এদের কোন ছাড় দেয়া যেতে পারে না হেফাজতের নামে এরা জঙ্গি সন্ত্রাসী কার্যক্রমে লিপ্ত। বিএনপি-জামায়াত তাদের সহযোগী হিসেবে ইসলাম ধর্মকে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। এরা কোনভাবেই ইসলামকে হেফাজত করতে পারে না, ইসলামকে হেফাজত করবে আল্লাহ।
শেখ সেলিম বলেন, ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতের জঙ্গি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছিল অতিসত্বর সেই মামলা তদন্ত করে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
শেখ সেলিম বলেন, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। বিশ্বে দেশের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছেন। বাংলাদেশের মানুষের জীবন মান অনেক উন্নত হয়েছে। ঠিক তখনই সেই অপশক্তি আবার ষড়যন্ত্র করছে।
তিনি বলেন, পৃথিবীতে কোথাও স্বাধীনতাবিরোধীদের রাজনীতি করার সুযোগ নেই । বাংলাদেশে জিয়াউর রহমান এদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দেয়। যারা এই দেশটাকে ধ্বংস করতে চায়, দেশকে পাকিস্তান বানাতে চায়। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। বঙ্গবন্ধু ক্ষমা করেছিলেন মহানুভবতার কারণে, তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। এদের আর ক্ষমা করা যেতে পারে না।
বাসস/এমআর/১৫৫০/কেকে