দ্বিতীয় তিস্তা সেতু রংপুর অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটিয়েছে

1577

রংপুর, ২৫ আগস্ট, ২০১৮ (বাসস) : তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত দ্বিতীয় তিস্তা সেতুর কল্যাণে এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি সাধিত হওয়ায় রংপুর অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়ন জোরদারের পথ প্রশস্ত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১২ সালের ১২ এপ্রিল এর নির্মাণ কাজ উদ্বোধনের পর রংপুর ও লালমনিরহাট জেলার মহীপুর-কাকিনা পয়েন্টে প্রায় ১২২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮৫০ মিটারের সেতুটি নির্মাণ করেছে এলজিইডি।
রংপুর ও লালমনিরহাট জেলার ছয়টি উপজেলার ১৮ লাখেরও বেশি লোকের চলাচলের জন্য গত এপ্রিল মাসে সেতুটি খুলে দেয়া হয়।
বিদায়ী বিভাগীয় কমিশনার কাজী হাসান আহমেদ বলেন, সেতুর কারণে জনগণের অর্থনৈতিক ও সামাজিক সুবিধা বৃদ্ধির ফলে এ অঞ্চলের উন্নয়নকে গতিশীল করতে সহায়তা করেছে। সেতটিু আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে যোগাযোগ ব্যবস্থার গতি বাড়িয়েছে। কৃষি, স্বাস্থ্য ও অন্যান্য অন্যান্য খাতে উন্নতির জন্য জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবতর্নের নতুন দ্বার উন্মোচণ করেছে।
গঙ্গাচরার উপজেলার স্থানীয় যুবক আবদুল মালেক, আবু তোরাব, কাকোলি রাণী ও কাকিনা উপজেলার আনোয়ারা বেগম বাসসকে জানান, সেতুটি বিভাগীয় শহর রংপুর, রাজধানী ঢাকা এবং দেশের অন্যান্য অংশের সঙ্গে এই অঞ্চলের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করেছে।
এর আগে, লালমনিরহাট ও রংপুরের মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগের জন্য দুই জেলার ৬টি উপজেলার ১৮ লাখ লোকের জন্য তিস্তা নদীর প্রধান অন্তরায় ছিল এবং বর্ষার সময় পরিস্থিতি ছিল ভয়াবহ।
রংপুরের ইমাম এনামুল হক সোহেল বলেন, ‘সেতুটি ঢাকা ও রংপুরের মধ্যে ৬০ কিলোমিটার দূরত্বে কমিয়ে দিয়েছে। বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশকে ভূটান, ভারত, নেপাল (বিবিআইএন) মধ্যে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বৃদ্ধির পথ তৈরি করেছে।’
‘এই সেতুটি কম সময়ের মধ্যে আমদানি-রপ্তানীর পণ্য পরিবহন এবং এই অঞ্চলে যৌথ বিনিয়োগকে উৎসাহিত করবে এবং বিবিআইএন দেশগুলির মধ্যে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের উন্নয়নে আরও সহায়তা করবে।’
রংপুর চেম্বার সভাপতি সোহরাব চৌধুরী তিতু বলেন, দ্বিতীয় তিস্তা সেতু যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করেছে, যা এই অঞ্চলের ইতিবাচক আর্থ-সামাজিক পরিবর্তন ফিরিয়ে আনতে বিনিয়োগ ও শিল্পায়নের প্রত্যাশা পুরণ করবে।
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার বাসিন্দা পারভীন আক্তার বলেন, আগে বেশিরভাগ রোগীকে জরুরি অবস্থাতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে অতিরিক্ত ৬০ কিলোমিটার সড়ক অতিক্রম করতে হতো। অনেক অসুস্থ রোগী হাসপাতালে পৌঁছার আগেই মারা যেত।
তিনি বলেন, ‘নতুন সেতু চালু হওয়ার ফলে সড়ক পথে দূরত্ব কমে যাওয়ায় প্রায় দু’ঘন্টা সময়ও বেঁচে যায়, আর তাই চিকিৎসা সেবা প্রাপ্তিও নিশ্চিৎ হয়েছে। এই সেতু নির্মাণ করে তাদের কষ্ট লাগব করায় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।