চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত ৩৫ হাজার ছাড়িয়ে গেল

267

চট্টগ্রাম, ২ মার্চ, ২০২১ (বাসস) : চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ১০৯ জনের সংক্রমণ চিহ্নিত হলে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৫ হাজার ১০৮ জনে। সংক্রমণ হার ৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ। কোনো করোনা রোগীর মৃত্যু হয়নি এ সময়ে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, সোমবার নগরীর আটটি ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের ১ হাজার ৮২৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে নতুন ১০৯ জীবাণুবাহকের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৯৯ জন এবং ছয় উপজেলার ১০ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে হাটহাজারী, সাতকানিয়া, পটিয়া ও বোয়ালখালীতে ২ জন করে এবং চন্দনাইশ ও সীতাকু-ে ১ জন করে রয়েছেন। জেলায় এ পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫ হাজার ১০৮ জন। সংক্রমিতদের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ২৭ হাজার ৫৬৭ জন ও গ্রামের ৭ হাজার ৫৪১ জন।
গতকাল করোনায় কারো মৃত্যু হয়নি। জেলায় মৃতের সংখ্যা ৩৭৫ জনই রয়েছে। এর মধ্যে শহরের ২৭৪ জন ও গ্রামের ১০১ জন। সুস্থ্যতার সনদ দেয়া হয় ৬৯ জনকে। জেলায় মোট আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৩২ হাজার ২৫০ জনে। এদের ৪ হাজার ৪৩৫ জন হাসপাতালে ও ২৭ হাজার ৮১৫ জন বাসায় চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য হয়েছেন। কোয়ারেন্টাইনে গতকাল যুক্ত হন ২০ জন। ছাড়পত্র নেন ১০ জন। বর্তমানে ৯৬২ জন কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, করোনা রোগী এক হাজার পূর্ণ হতে এবার সময় নিয়েছে ১৪ দিন। এর আগে ১ হাজার পূর্ণ হয় ১৫ দিনে এবং ৩৪ হাজার অতিক্রম করে ১৬ ফেব্রুয়ারি। ৩১ জানুয়ারি ১৬ দিনে ১ হাজার পূর্ণ হয়ে ৩৩ হাজার অতিক্রম করে, যা গত কয়েক মাসের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ে হাজার পূর্ণ হওয়ার কাল। অথচ তার আগে ৯ দিনে এক হাজার পূর্ণ হয়ে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ৩২ হাজার অতিক্রম করে গত ১৫ জানুয়ারি। সেদিন হার ছিল ৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ। আট দিনে এক হাজার পূর্ণ হয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৩১ হাজার ছাড়িয়ে যায় ৬ জানুয়ারি। এদিন ১১৪ নতুন বাহক শনাক্ত হয়, সংক্রমণ হার ৭ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। এর আগে ২৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলায় ৩০ হাজার অতিক্রম করে। সেদিন ২০৯ নতুন বাহক শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ১১ দশমিক ৫০ শতাংশ। ২১ ডিসেম্বর মোট আক্রান্ত ২৯ হাজার অতিক্রম করে। সেদিন ১৫২ জন রোগী শনাক্ত ও ৩ জনের মৃত্যু হয়। সংক্রমণের হার ৮ দশমিক ৭২ শতাংশ। জেলায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৮ হাজার ছাড়িয়ে যায় ১৪ ডিসেম্বর। সেদিন নতুন ২৮৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। সংক্রমণ হার ১৫ দশমিক ৮১ শতাংশ।
এদিকে, পরপর দু’দিন ২ জন করে মৃত্যুর পর গতকাল কোনো করোনা রোগীর মৃত্যু হয়নি। অন্যদিকে, একটানা ২৬ দিন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা একশ’র নিচে থাকার পর টানা দু’দিন আবার শতক ছাড়িয়ে গেল। ২৮ ফেব্রুয়ারি ১১৩ জন নতুন বাহক শনাক্ত হন এবং মৃত্যু হয় ২ করোনা রোগীর। সংক্রমণ হার ৮ দশমিক ০২ শতাংশ।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ৯৯৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে গ্রামের একটিসহ ২৪ টির রেজাল্ট পজিটিভ আসে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ৪৭৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে গ্রামের ২ জনসহ ৩১ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ৬২টি নমুনার ১৩টিতে করোনার জীবাণু মিলে। এরা সবাই নগরীর বাসিন্দা। চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় ল্যাবে ২১ জনের নমুনায় ১ জন গ্রামের ও ১ জন শহরের বাসিন্দা করোনায় শনাক্ত হন। জেলার একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিতে ১৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হলে গ্রামের ২টিসহ ১১টিতে করোনার জীবাণুর উপস্থিতি পাওয়া যায়।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি শেভরনে ১৪২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে গ্রামের ২ জনসহ ৮ জন, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৪৪ জনের নমুনায় গ্রামের ১ জনসহ ৮ জন এবং চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ৩৪ জনের নমুনার মধ্যে গ্রামের ১ জনসহ ১২ জন করোনা শনাক্ত হন। এদিন চট্টগ্রামের ৪২টি নমুনা কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় সবগুলোরই নেগেটিভ আসে।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে বিআইটিআইডি’তে ২ দশমিক ৪১ শতাংশ, চমেকে ৬ দশমিক ৫৩, সিভাসু’তে ২০ দশমিক ৯৭, চবিতে ৯ দশমিক ৫২,আরটিআরএলে ৭৩ দশমিক ৩৩, শেভরনে ৫ দশমিক ৬৩, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ১৮ দশমিক ১৮, মা ও শিশু হাসপাতালে ৩৫ দশমিক ২৯ এবং কক্সবাজার মেডিকেলে ০ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।