বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (তৃতীয় ও শেষ কিস্তি) : বস্তিগুলো বহুতল ভবন হবে : প্রধানমন্ত্রী

131

বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (তৃতীয় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা-ওয়াসা-ভাষণ
বস্তিগুলো বহুতল ভবন হবে : প্রধানমন্ত্রী

তাঁর সরকারই প্রথম ১৯৯৬ সালে ঢাকা মহানগরীর জন্য নতুন মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা ওয়াসার সেবা ও কার্যপরিধির পুনর্বিন্যাস করে ‘ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ আইন, ১৯৯৬’ প্রণয়ন করি। এরপর ২০০৯ সালে পুণরায় আমরা ক্ষমতায় এসে দেখতে পাই ঢাকা শহরে পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় এক বিশৃঙ্খল অবস্থা বিরাজ করছে।
তিনি বলেন, আমার প্রত্যক্ষ দিক নির্দেশনায় ২০১০ সাল থেকে ঢাকা ওয়াসা পানি সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন আনার কাজ শুরু করে। ঢাকা ওয়াসা একটি পরিবেশবান্ধব, টেকসই ও গণমুখী পানি সরবরাহ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের লক্ষ্য স্থির করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকারের পরিকল্পিত ব্যবস্থা গ্রহণের ফলেই ঢাকা ওয়াসা পানি উৎপাদন ও সরবরাহে ১০০ ভাগ সক্ষমতা লাভ করেছে। ঢাকা ওয়াসাকে এখন দক্ষিণ এশিয়ায় পানি সেবাদানকারি সংস্থার ‘রোল মডেল’ হিসেবে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো বিবেচনা করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘ ঘোষিত ‘এসডিজি-২০৩০’ এর ১৭টি লক্ষ্যের মধ্যে ৬ নম্বরটি হচ্ছে-‘সকলের জন্য নিরাপদ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ’। পানি সম্পদের সমন্বিত ব্যবস্থাপনার জন্য আমরা একশ’ বছর মেয়াদী ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান-২১০০’ নামে একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। এই দীর্ঘ-মেয়াদী সমন্বিত পানি ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনায় আগামী একশ’ বছরে পানির প্রাপ্যতা, তার ব্যবহার এবং প্রতিবেশগত বিষয়সমূহ বিবেচনায় রাখা হয়েছে।
সরকার প্রধান এ সময় নিরাপদ পানি ও পয়ঃব্যবস্থাপনায় তাঁর সরকারের গৃহীত কার্যক্রমসমূহের মধ্যে-১৯৯৯ সালে জাতীয় পানি নীতি প্রণয়ন, ন্যাশনাল ওয়াটার সাপ্লাই অ্যান্ড স্যানিটেশন অ্যাক্ট-২০১৪ প্রণয়ন, বর্ষার পানি সংরক্ষণে ৪ হাজার ৭শ’টি জলাধার নির্মাণ, রাজধানী ঢাকায় নতুন খাল খনন এবং পুরাতন খালের সংস্কার ও জলাধার সংরক্ষণের উদ্যোগ এবং রাজধানীসহ সারাদেশের গুরুত্বপূর্ণ নদীতে ড্রেজিং কার্যক্রমের উল্লেখ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আগামীতে তিনি সরকার গঠন করতে পারলে রাজধানীর জলাবদ্ধতার মূল কারণ বক্সকালভার্টগুলো উন্মুক্ত করে এর ওপর দিয়ে এলিভেটেড ওয়ে নির্মাণ করে দেবেন। কারণ, দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য ভৌগলিক অবস্থান এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখা একান্ত প্রয়োজন।
বুড়িগঙ্গার পানি গৃহস্থলীর বর্জ্য এবং শিল্পবর্জ্যরে মাধ্যমে দূষণ প্রতিরোধে এখানে দু’ধরনের ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বাস্তবায়নের পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমরা একটি কমিটি করে দিয়েছি, এলজিআরডি মন্ত্রীকে দিয়ে, সেখানে দু’ধরনের ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বাস্তবায়নে তাঁরা কাজ করছেন। বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা থেকে টুঙ্গীর তুরাগ নদী পর্যন্ত এই প্রকল্পের আওতায় ড্রেজিং করা হবে। কারণ, পানির ধারাটা বজায় রাখতে পারলে বুড়িগঙ্গায় আর দূষণ থাকবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাশাপাশি বালু নদী এবং ধলেশ্বরীও ডেজিং করতে হবে। যেন সেখান থেকে পনির প্রবাহটা বুড়িগঙ্গা পর্যন্ত ঠিক থাকে এবং বৃষ্টির পানিটাও ধরে রাখতে পারে।
নদী ড্রেজিং ছাড়া আমাদের এই দেশকে রক্ষার আর কোন উপায় নেই।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সরকার পানি ব্যবস্থপনার পাশাপাশি সুয়ারেজ মাস্টার প্লান প্রণয়ন করেছে। যার মাধ্যমে ২০২৫ সালের মধ্যে রাজধানী ঢাকা আধুনিক পয়ঃসেবার আওতায় আসবে।
তিনি বলেন, আজকে যে দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার প্রকল্প এটা সেই মাস্টার প্লানেরই একটি অংশ। আমি বিশ্বাসকরি-এই ট্রিটমেন্ট প্লান্ট যদি আমরা না করি তাহলে ঐ হাতিরঝিলকে রক্ষা করা সম্ভব নয়, কারণ সেখানকার পানি পচে যায়।
তিনি এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ঢাকা ওয়াসাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এটি বাস্তবায়িত হলে বারিধারা, গুলশান, বনানী, বসুন্ধরা, সংসদ ভবন, ক্যান্টনমেন্ট এলাকাসহ আশপাশের সমগ্র এলাকায় জলাবদ্ধতা ও দূষণ বন্ধ হবে এবং এসব এলাকার পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা আরো সুন্দর হবে।
বাসস/এএসজি-এফএন/১৫৪৫/আরজি