জয়পুরহাটে ৭৮৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ

440

জয়পুরহাট, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ (বাসস): জেলার পাঁচ উপজেলায় চলতি ২০২০-২১ রবি মৌসুমে ৭৮৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে। এতে ফলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ হাজার মেট্রিক টন ভুট্টা। আবহাওয়া ভালো থাকায় এবারও বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষক ও কৃষি বিভাগ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র বাসস’কে জানায়, মাটির গুণাগুণ অনুযায়ী ভুট্টা চাষ উপযোগী হওয়ায় জয়পুরহাট সদর উপজেলা, পাঁচবিবি ও আক্কেলপুর উপজেলায় ভুট্টার চাষ বেশি হয়ে থাকে। কৃষকদের ভুট্টা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে মাঠ পর্যায়ে ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। বিএডিসির পক্ষ থেকে কৃষক পর্যায়ে উন্নতমানের ভুূট্টা বীজ সরবরাহ করা হয়েছে । ভুট্টা চাষে তুলনামূলক লেবার ও পরিচর্যা খরচ কম হওয়ার কারণে লাভ হয় বেশী। সদরের দাদরা ধুলাতর গ্রামের কৃষক রুস্তম আলী ফলন ভালো ও ভুট্টা চাষ লাভজনক হওয়ায় প্রতিবারের মতো এবারও দেড় বিঘা জমিতে ভুট্টার চাষ করেছেন। আবহাওয়া অনুক’লে থাকায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন তিনি। ভুট্টা স্বল্প পানির চাহিদা সম্পন্ন ফসল হিসেবে জনপ্রিয়। ভুট্টা আবাদে বীজ বপনের ২৫-৩০দিন পর ১ম বার সেচ প্রয়োগ ও আগাছা দমন, ৫০-৫৫ দিন পর ২য় বার, ৭০-৭৫দিন পরে ৩য় বার হালকা সেচ প্রয়োগ করলে বাম্পার ফলন পাওয়া যায়। রোগ বালাই, পোকা মাকড়ের আক্রমণ খুবই কম হয় ভুূট্টাতে। ফলে জেলায় দিন দিন ভুট্টার চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি ২০২০-২১ মৌসুমে জেলায় ভুট্টার চাষ হয়েছে ৭৮৫ হেক্টর জমিতে । ভুট্টা ফসলের মোচা বা কব সংগ্রহের পরে গাছের অবশিষ্ট অংশ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হয়, ভুূট্টা হতে আটা, ময়দা, গো খাদ্য তৈরীতে দেশে এর ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। মুরগি ও গো- খাদ্য তৈরির জন্য জয়পুরহাটের ফিডমিল গুলোকে জেলার বাইরে থেকে ভুট্টা আমদানী করতে হয়। আমদানীরোধে ভুট্টার আবাদ বৃদ্ধিতে জয়পুরহাট জেলায় বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো: কায়ছার ইকবাল। কৃষকদের মাঝে উন্নত জাত সরবরাহ, উদ্ধুদ্ধকরণ ও পরামর্শ প্রদান কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। জেলায় সুপারসাইন-২৭৬০ জাতের ভুট্টার নতুন জাত প্রবর্তনে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে বলেও জানান তিনি। এক বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের ভুট্টা চাষ করার জন্য কৃষি প্রণোদনা কর্মসূিচর আওতায় প্রতিজন ভুট্টা চািষকে ২ কেজি বীজ, ১০ কেজি এমওপি সার ও ২০ কেজি ডিএপি সার দেওয়া হয়েছে। একেকজন ভুট্টা চষিকে এক হাজার ৪৩৮ টাকার সম্পদ প্রদান করা হয়। জেলায় এবার এক হাজার চাষিকে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচীর আওতায় মোট ১৪ লাখ ৩৮ হাজার টাকার সার, বীজ ও পরিবহন খরচ দেওয়া হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে প্রযুক্তিগত কলাকৌশল ও পরামর্শ পেয়ে চাষাবাদ করতে পেরে অত্যন্ত খুশী বলে জানান ভুট্টা চাষিরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক স ম মেফতাহুল বারি বলেন, জেলায় এবার ৭ শ ৮৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সদর উপজেলায় ৩৩০ হেক্টর, পাঁচবিবিতে ৩৩০ হেক্টর, আক্কেলপুরে ৯৫ হেক্টর, ক্ষেতলালে ২০ হেক্টর ও কালাই উপজেলায় ১০ হেক্টর । আবহাওয়া ভালো থাকলে জেলায় এবার প্রায় ১১ হাজার মেট্রিক টন ভুট্টার উৎপাদন হবে বলে আশা প্রকাশ করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।