চাঁদপুরে গ্রীষ্মকালীন শাক-সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৩৪ হাজার মে. টন

317

চাঁদপুর, ১২ এপ্রিল, ২০১৮ (বাসস) : জেলায় এ বছর গ্রীষ্মকালীন শাক-সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৩৪ হাজার মে. টন। চাঁদপুর দেশের অন্যতম নদীবিধৌত কৃষি প্রধান অঞ্চল। মেঘনা, পদ্মা, মেঘনা, ধনাগোদা ও ডাকাতিয়া নদী এ জেলা ওপর দিয়ে বয়ে যাওযায় রবি, আউস, আমন ও বোরোর মত কৃষি উৎপাদনে নদী অববাহিকায় ব্যাপক গ্রীষ্মকালীন শাক-শবজি উৎপন্ন হয়ে থাকে।
গ্রীষ্মকালীন শাক-সবজির মধ্যে রয়েছে- চিচিঙ্গা, ডেঁড়স, বরবটি, পটল, কাকরল, ধুন্দুল, ডাটা, ঝিংগা, বেগুন প্রভৃতি।
চাঁদপুরে এ বছর (২০১৭-২০১৮) অর্থ বছরে শাক-সবজির চাষাবাদ হয়েছে ২ হাজার ২০৫ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৪ হাজার মে.টন ১৭৮ মে.টন।
বিশেষ করে চাঁদপুরের ১১টি চরাঞ্চলে এ শাক-সবজি ব্যাপকভাবে চরবাসীরা চাষাবাদ করে থাকে। নারীরাই এসব শাক-সবজি উৎপাদনে প্রধান ভূমিকা পালন করে থাকে । এছাড়া গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি গবাদিপশু প্রতিপালনে মেঘনা অববাহিকায় ও চরাঞ্চলে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।
দিন রাত পরিশ্রম করেই তারা এ শাক-সবজি উৎপাদনে ব্যস্ত থাকে । কোনো কোনো এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে তারা ব্যাপক হারে শাক-সবজির চাষাবাদ করে আসছে। তাদের জীবিকার প্রধান বাহন কৃষি, সবজি চাষাবাদ ও হাঁস, মুরগি ইত্যাদি গবাদি পশু প্রতিপালন ।
চরাঞ্চলগুলি হলো- মতলবের চরইলিয়ট, চর কাসিম, সবজি কান্দি, ষষ্ট খন্ড বোরোচর, চাঁদপুর সদরের রাজরাজেস্বর, জাহাজমারা, লগ্নিমারা, বাঁশগাড়ি, চিড়ারচর, ফতেজংগপুর, হাইমচরের ঈশানবালা, চরগাজীপুর, মনিপুর, মধ্যচর, মাঝিরবাজার, সাহেব বাজার ও চরভৈরবির বাবুরচর ইত্যাদি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ি চাঁদপুরের উপ-পরিচালক আলী আহমেদ জানান, চাঁদপুর সদরে চাষাবাদহয়েছে ৭০০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ হাজার ৮৫০ মে.টন। মতলব উত্তরে চাষাবাদ হয়েছে ২১০ হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ২৫৫ মে.টন। মতলব দক্ষিণে চাষাবাদ হয়েছে ২৭০ হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ হাজার ৬৪৩ মে.টন। হাজীগঞ্জে চাষাবাদ হয়েছে ১৯৫ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ২২ মে.টন।
শাহরাস্তিতে চাষাবাদ হয়েছে ২২০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৪১০ মে.টন। কচুয়ায় চাষাবাদ হয়েছে ১২০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৮৬০ মে.টন। ফরিদগঞ্জে চাষাবাদ হয়েছে ৩৯০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৪৫ মে.টন। হাইমচরে চাষাবাদ হয়েছে ১৬০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৪৮০ মে.টন।
গ্রীষ্মকালীন শাক-সবজির মধ্যে রয়েছে-চিচিঙ্গা, ঢেঁড়স, বরবটি, পটল, কাকরল, ধুন্দুল, ডাঁটা, ঝিংগা, বেগুন প্রভৃতি। চাঁদপুরের কুমারডুগি, মহামায়া, দেবপুর, মাস্টার বাজার,সুন্দরদিয়া এলাকায় ব্যাপকহারে ও বাণিজ্যিকভাবে চাষিরা এসব শাক-সবজির চাষাবাদ করে থাকে।
তিনি আরো জানান, আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশ, পরিবহনে সুবিধা, কৃষকদের শাক-সবজি চাষে আগ্রহ, কৃষি বিভাগের উৎপাদনের প্রযুক্তি প্রদান, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নত, কৃষিউপকরণ পেতে সহজলভ্যতা, বীজ ,সার ও কীটনাশক ব্যবহারে কৃষিবিদদের পরামর্শ, ব্যাংক থেকে কৃষিঋণ প্রদান ইত্যাদি কারণে চাঁদপুরের চাষিরা ব্যাপক হারে শাক-সবজির চাষ করছে।