ঢাকা, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ (বাসস) : শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়াধীন রাষ্ট্রায়াত্ত্ব বেশ কিছু শিল্প-কারখানা রয়েছে, যেগুলোকে বর্তমান সময়ের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিতকল্পে সরকার কাজ করছে। তবে এ সব শিল্প-কারখানার আধুনিকায়নে প্রযুক্তির ব্যবহার, উৎপাদিত পণ্যের বহুমুখীকরণ ও নতুন বিনিয়োগে এগিয়ে আসার জন্য বেসরকারিখাতের উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
পরিচালনা পর্ষদ নেতৃবৃন্দ মন্ত্রীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন,রাষ্ট্রায়াত্ত্ব শিল্প-কারখানা আধুনিকায়ন হলে দেশে আরো কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে এবং অথনৈতিক উন্নয়ন আরও গতিশীল হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্থানীয় বাজার বেশ বড়। তাই আমাদের নিজস্ব চাহিদা মেটানোর বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগে এগিয়ে আসা দরকার।
তিনি আরও বলেন, করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার সরকার বেশকিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, যার ফলে জীবন-জীবিকা নিশ্চিত করা গেছে এবং এক্ষেত্রে বেসরকারিখাতও যথেষ্ট করেছে। তিনি দেশব্যাপী শিল্পায়নকে বিস্তৃত করার লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকা ছোট ছোট ক্লাস্টার সমূহে সার্বিক সহায়তা প্রদানের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
সাক্ষাৎকালে ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের ৭৫ শতাংশ ব্যবসায়ী ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা, তবে কটেজ, অতিক্ষুদ্র এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের তুলনায় মাঝারি উদ্যোক্তাদের আর্থিক ও কর্মক্ষম জনশক্তির সীমা অনেক বেশি থাকায়, প্রণোদনা প্যাকেজ ও নীতিগত সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে কটেজ, অতিক্ষুদ্র এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাগণ মাঝারি উদ্যোক্তাদের তুলনায় পিছিয়ে থাকেন। এ অবস্থা উত্তরণে তিনি আসন্ন শিল্পনীতিতে সিএমএসএমইদের সংজ্ঞা পুনঃনির্ধারণ এবং একটি ‘এসএমই আইন’ প্রণয়নের প্রস্তাব করেন।
এর পাশাপাশি তিনি সিএমএসএমই খাতে সরকার ঘোষিত সকল নীতিগত সহায়তা বাস্তবায়ন করতে দেশের সকল সিএমএসএমই উদ্যোক্তাদের খাতভিত্তিক একটি ডাটাবেইজ তৈরির জন্য বিশেষায়িত প্রকল্প গ্রহণের আহ্বান জানান। ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, দেশের রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণ ও বাজার সম্প্রসারণে সম্ভাবনাময় খাত সমূহে তৈরি পোষাক শিল্পের ন্যায় ব্যাক টু ব্যাক এলসি ব্যবস্থা অনুমোদন করা প্রয়োজন, সেই সাথে চামড়াজাত পণ্যের জন্য কেন্দ্রীয় বন্ডেড ওয়্যারহাউস এবং জাহাজ নির্মাণ, পাট ও পাটজাত পণ্য,কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে কর অবকাশ সুবিধা প্রদানের আহ্বান জানান।
শিল্প সচিব কে এম আলী আজম বলেন, আসন্ন শিল্পনীতিতে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ ও ৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বিষয়টিকে সর্বাধিক অগ্রাধিকার প্রদান করা হবে। তিনি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুবিধা কাজে লাগানোর জন্য প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নতুন প্রযুক্তি বিষয়ে মানব সম্পদের দক্ষতা উন্নয়ন করতে হবে পাশাপাশি সরকার ঘোষিত ৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার প্রস্তাবিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দেশের বেসরকারীখাতের অবদান নিশ্চিত করতে সরকারের পক্ষ হতে সবধরনের নীতি সহায়তা প্রদান করা হবে।
ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি এন কে এ মবিন,সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন,পরিচালক আরমান হক প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।