ম্যান সিটিকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নস লীগের সেমিফাইনালে লিভারপুল

369

ম্যানচেস্টার, ১১ এপ্রিল ২০১৮ (বাসস) : ঘরের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ২-১ গোলে লিভারপুলের কাছে পরাজিত হয়ে চ্যাম্পিয়নস লীগ থেকে বিদায় নিয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি। কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগের এই জয়ের মাধ্যমে ৫-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে শেষ চার নিশ্চিত করেছে পাঁচবারের ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নরা। তবে ম্যাচের বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে স্প্যানিশ রেফারী এন্টোনিও মাতেও লাহোজেরর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন সিটি ম্যানেজার পেপ গার্দিওলা।
যে কারনে দ্বিতীয়ার্ধের পুরোটা সময় ডাগ আউট ছেড়ে গার্দিওলাকে স্ট্যান্ডে গিয়ে ম্যাচ দেখতে হয়েছে। প্রিমিয়ার লীগে দারুন ছন্দে থাকা সিটিজেনদের জন্য এই পরাজয়টা ছিল সত্যিই হতাশার। অথচ ম্যাচের দুই মিনিটের মধ্যেই গ্যাব্রিয়েল জেসুসের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল স্বাগতিকরা। কিন্তু বিরতির ঠিক আগে লিওরে সানের গোল অফ-সাইডের কারনে বাতিল হয়ে যাওয়ায় ব্যবধান বাড়ানো হয়নি সিটির। ম্যাচ শেষে ক্ষুব্ধ গার্দিওলা বলেছেন, ‘১-০ গোলে এগিয়ে থাকা আর ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যাবার মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। গত সপ্তাহে এ্যানফিল্ডে লিভারপুলের ৩-০ গোলের জয়ের ম্যাচে প্রথম গোলটিও অফ-সাইডের কারনে অবশ্যই বাতিল করা উচিত ছিল। দুটো দলই যখন একই পজিশনে রয়েছে তখন এই ধরনের সিদ্ধান্ত আসলেই পরবর্তীতে অনেক বড় হয়ে দেখা দেয়।’
৫৬ মিনিটে মিশরীয় তারকা মোহাম্মত সালাহ’র গোলেই এক দশক পরে প্রথমবারের মত চ্যাম্পিয়নস লীগের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে লিভারপুল। মৌসুমে সব মিলিয়ে এটি ছিল ছিল সালাহর ৩৯তম গোল। ৭৭ মিনিটে রবার্তো ফিরমিনো দলের পক্ষে দ্বিতীয় গোল করলে লিভারপুলের কাছে টানা তৃতীয় জয় নিশ্চিত হয় সিটিজেনদের। লিভারপুল ম্যানেজার জার্গেন ক্লপ প্রথমার্ধেও হতাশার পরেও দলের পরিপক্কতার প্রশংসা করে বলেছেন, ‘ছেলেরাই সমাধান খুঁজে নিয়েছে। প্রথমার্ধের শেষে আমাদের হাতে কিছু উপায় ছিল। যদিও বিষয়টি আমার জন্য ততটা সহজ ছিলনা। খেলোয়াড়রা ম্যাচের আবহ সঠিক সময়ে বুঝতে পেরেছিল।’
প্রিমিয়ার লীগে টেবিলের শীর্ষে থাকা সিটির থেকে লিভারপুল ১৭ পয়েন্ট পিছিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। কিন্তু এবারের মৌসুমে চারবারের মোকাবেলায় এই নিয়ে তিনবারই পরাজিত হলো গার্দিওলার দল। ক্লপ বলেন, সত্যিকার অর্থেই আমি মনে করি এই মুহূর্তে সিটিই বিশ্বের সেরা দল। কিন্তু আমরা জানতাম তাদের পরাজিত করতে পারবো। আমাদের অবশ্যই জয়টা উপভোগ করা উচিত। বেশ কয়েক বছর আগে লিভারপুল সেমিতে খেলেছে, আমিও সেমিতে খেলেছি, এখন আমরা একসাথে সেমিতে খেলবো।
ম্যাচের শুরুতে গার্দিওলা তার দলের কাছে একটি নির্ভুল সূচনা আশা করেছিল। মাত্র ১১৭ সেকেন্ডে গোল করে শিষ্যরা কোচকে সেই সঠিক সূচনাও উপহার দিয়েছিলেন। গোলটির ব্যপারে অবশ্য লিভারপুল স্প্যানিশ রেফারির উপর আপত্তি তুলেছিল। রাহিম স্টার্লিংয়ের লো ক্রসে জেসুস গোল করে সিটিজেনদের এগিয়ে দেন। কিন্তু লিভারপুল দাবী জানায় গোলটির আগে স্টার্লিং ভার্জিল ফন জিকেকে ধাক্কা মেরেছিল। যদিও রেফারী বিষয়টি আমলে নেননি। প্রথম লেগে সামান্য ইনজুরিতে পড়ায় এই ম্যাচে সালাহ’র খেলা নিয়ে শঙ্কা ছিল। কিন্তু নিজেকে ফিট প্রমান করে ঠিকই মূল একাদশে নেমেছিলেন মিশরীয় এই তারকা। যদিও প্রথমার্ধে নিজেকে খুব একটা মেলে ধরতে পারেননি।
প্রথমার্ধের ধারাবাহিকতা বিরতির পরে মোটেই ধরে রাখতে পারেনি সিটিজেনরা। ৫৬ মিনিটে সাদিও মানের শট এডারসন আটকে দিলে ফিরতি বলে সালাহ গোল করে লিভারপুলের জয় নিশ্চিত করেন। ৭৭ মিনিটে ফারমিনো দলের পক্ষে দ্বিতীয় গোল করে পরাজয়ের ব্যবধান বাড়িয়েছেন।