বাসস ক্রীড়া-১১ : পাকিস্তান ক্রিকেটের জন্য ‘স্মরনীয় মুহুর্ত’ দ.আফ্রিকা টেস্ট

111

বাসস ক্রীড়া-১১
ক্রিকেট-পাকিস্তান-দ. আফ্রিকা-প্রিভিউ
পাকিস্তান ক্রিকেটের জন্য ‘স্মরনীয় মুহুর্ত’ দ.আফ্রিকা টেস্ট
করাচি, ২৪ জুন ২০২১ (বাসস/এএফপি): দীর্ঘ ১৪ বছরের মধ্যে চলতি সপ্তাহে পাকিস্তানের মাটিতে প্রথম ক্রিকেট টেস্ট খেলতে নামছে দক্ষিন আফ্রিকা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তন করা পাকিস্তানের জন্য এটিকে ‘স্মরনীয় মুহুর্ত’ হিসেবে মনে করা হচ্ছে।
আগামী মঙ্গলবার বন্দর নগরী করাচিতে শুরু হতে যাওয়া ম্যাচটি দীর্ঘ এক দশকের মধ্যে পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তনের একটি মৌন সমর্থন। ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে লাহোরে সফরকারী শ্রীলংকান ক্রিকেট দলকে বহনকারী বাসে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় পাকিস্তানে নির্বাসিত হয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট।
ওই হামলার পর নিরাপত্তা আশংকায় বিদেশী দলগুলো পাকিস্তান সফরে অনীহা প্রকাশ করে। বিগত ছয় বছর ধরে দেশটিতে সংক্ষিপ্ত পরিসরে সিমিত ওভারের ক্রিকেট সিরিজের আয়োজন চললেও ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে শ্রীলংকান দলের সফর দিয়ে এক যুগের মধ্যে টেস্টে প্রত্যাবর্তন করে পাকিস্তান।
ভেন্যুকে বেস্টন করে ইতোমধ্যে কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরী করা হয়েছে এবং পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) প্রধান নির্বাহি ওয়াসিম খান বলেছেন, দক্ষিন আফ্রিকার এই সফরটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ন।
তিনি বলেন,‘ ভক্ত ও সমর্থকদের জন্য এটি একটি রোমঞ্চকর মুহুর্ত। দীর্ঘ ১৪ বছর পর দক্ষিন আফ্রিকা দলের পাকিস্তান সফর একটি ‘স্মরনীয় মুহুর্ত’ এবং সবাই এখন ম্যাচের অপেক্ষায় প্রহর গুনছে।’
এদিকে ২০০৫ সালের পর ইংল্যান্ডও আগামী অক্টোবরে পাকিস্তানের মাটিতে দুটি টি-২০ ম্যাচ খেলতে সম্মত হয়েছে। এরপর সাদা বলের সিরিজ খেলতে পাকিস্তান সফর করবে যথাক্রমে নিউজিল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
সবকিছু নির্বিঘেœ সম্পন্ন হলে আগামী বছর ওয়ানডে ও টেস্ট খেলতে পাকিস্তান সফরে আসবে অস্ট্রেলিয়া। ১৯৯৮ সাল থেকে পাকিস্তান সফর থেকে বিরত আছে অসিরা। খান বলেন,‘ আমাদের প্রচেস্টা ফলপ্রসু হওয়ায় এখন রোমঞ্চকর একটি বছর সামনে পেতে যাচ্ছি।’
অচেনা কন্ডিশন
ময়দানি লড়াইয়ে পরিসংখ্যানের দিক থেকে এগিয়ে আছে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা। দুই দলের শেষ ২৬ টি টেস্টের মধ্যে ১৫টিতেই জয়লাভ করেছে প্রোটিয়ারা। তারা হেরেছে চারটিতে এবং ড্র করেছে ৭টি টেস্টে। অবশ্য তাদের সামনে অপেক্ষা করছে নতুন চেহোরার পাকিস্তান। যার মাধ্যমে টেস্ট দলের অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক ঘটতে যাচ্ছে বাবর আজমের।
আজমের জন্য এটি হচ্ছে ‘স্বপ্ন সত্যি হবার মত’। ২০০৭ সালে দক্ষিন আফ্রিকা দলের সর্বশেষ পাকিস্তান সফরকালে তিনি ছিলেন বল বয়। তবে গত মাসে নিউজিল্যান্ডের কাছে ২-০ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ হারের পর দলটিকে টেনে তুলতে তার হাতেই নেতৃত্ব তুলে দিয়েছে পিসিবি।
বৃদ্ধাঙ্গুল ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে নিউজিল্যান্ড সফর থেকে বিশ্রামে থাকা আজম পুর্ন ফিটনেস নিয়েই দলে ফিরেছেন। তার নেতৃত্বাধীন ২০ সদস্যের অনভিজ্ঞ টেস্ট দলের ৯জন একেবারেই নতুন মুখ।
এ দিকে দক্ষিন আফ্রিকার অধিনায়ক কুইন্টন ডি কক এর মতে তাদের জন্য বড় সমস্যা হতে পারে স্পিন। স্বাগতিক দলে লেগ স্পিনার ইয়াসির শাহ’র সঙ্গী হতে পারেন দুই নতুন স্পিনার নুমান আলী ও সাজিদ খান।
শীলংকার বিপক্ষে সম্প্রতি ২-০ ব্যাবধানে টেস্ট সিরিজ জয় করা প্রোটিয়া অধিনায়ক বলেন,‘দল নির্বাচনই বলে দিচ্ছে তারা কতদূর যেতে চায়। তারা কিভাবে উইকেট বানিয়েছে।’
দলের কারো এর আগে পাকিস্তানে খেলার অভিজ্ঞতা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন,‘ আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে কন্ডিশন। কারণ এখানকার কন্ডিশন আমাদের কাছে অপরিচিত।’
অবশ্য খেলোয়াড় হিসেবে ১৯৯৭, ২০০৩ ও ২০০৭ তিনবার পাকিস্তান সফরের অভিজ্ঞতা রয়েছে প্রোটিয়া দলের প্রধান কোচ মার্ক বাউচারের।
ডি কক বলেন,‘ আমার মনে হয় মার্ক বাউচার ও ইতোপুর্বে পাকিস্তান সফর করা দুই একজন যারা আছে ন তারা এ বিষয়ে আমাদের দিকনির্দেশনা দিতে পারবেন।’
আগামী ৪ থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি রাওয়ালপিন্ডিতে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট। এরপর লাহোরে তিন ম্যাচের আন্তর্জাতিক টি-২০ সিরিজ অনুষ্ঠিত হবে যথাক্রমে ১১, ১৩ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি।
করোনা মহামারির কারণে সবগুলো ম্যাচই অনুষ্ঠিত হবে দর্শকশুন্য স্টেডিয়ামে।
স্কোয়াড:
পাকিস্তান (সম্ভাব্য): বাবর আজম (অধি:), আবিদ আলি, আব্দুল্লাহ শফিক, ইমরান বাট, আজহার আলি, ফওয়াদ আলম, কামরান গোলাম, সালমান আলি আগা, সৌউদ সাকিল, ফাহিম আশরাফ, মোহাম্মদ নওয়াজ, মোহাম্মদ রিজওয়ান, শরফরাজ আহমেদ, নুমান আলী, সাজিদ খান, ইয়াসির শাহ, হারিস রউফ, হাসান আলি, শাহীন শাহ আফ্রিদি ও তাবিশ খান।
দক্ষিণ আফ্রিকা (সম্ভাব্য): কুইন্টন ডি কক (অধি:), টেম্বা বাভুমা, আইডেন মার্করাম, ফাফ ডু প্লেসিস, ডিন এলগার, কাগিসো রাবাদা, ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস, কেশব মহারাজ, লুঙ্গি এনগিডি, রাসি ফন ডার ডুসেন, এনরিখ নর্টি, উইয়ান মুলডার, লুথো সিপামলা, ব্যুরান হেন্ড্রিক্স, কাইল ভেরেনি, সারেল এরভি, কিগান পিটারসেন, তাবরাইজ শামসি, জর্জ লিন্ডে, ড্যারিন ডুপাভিলন ও মার্কো জেনসেন।
বাসস/এএফপি/এমএইচসি/১৯৩৫/স্বব