বাসস প্রধানমন্ত্রী-২ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি) : সকলের জন্য নিরাপদ বাসস্থানের ব্যবস্থা করাই মুজিববর্ষের লক্ষ্য : প্রধানমন্ত্রী

116

বাসস প্রধানমন্ত্রী-২ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা-ভূমিহীন
সকলের জন্য নিরাপদ বাসস্থানের ব্যবস্থা করাই মুজিববর্ষের লক্ষ্য : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা তাঁর সাড়ে তিন বছরের দেশ পরিচালনায় যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশ পুনর্গঠনকালে যে সংবিধান প্রণয়ন করেন তার ১৫(ক) অনুচ্ছেদে দেশের প্রতিটি নাগরিকের বাসস্থান পাওয়ার অধিকারের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করে যান। জাতির পিতা গৃহহীন-অসহায় মানুষের পুনর্বাসনে উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন।
তিনি বলেন, জাতির পিতা ১৯৭২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি নোয়াখালী জেলার (বর্তমান লক্ষ্মীপুর জেলা) চরপোড়াগাছা গ্রাম পরিদর্শনে যান এবং ভূমি ও গৃহহীন অসহায় মানুষের পুনর্বাসনের নির্দেশ দেন এবং তাঁর নির্দেশনাতেই ভূমি ও গৃহহীন, ছিন্নমূল মানুষের পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত সরকার ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকাকালীন বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের ’৯৭ পরবর্তী সময়ে চালু করা আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ভূমিহীনদের ঘর দেয়ার প্রকল্পটি বন্ধ করে দেয়।
তিনি বলেন, ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত সময় বাংলাদেশের জন্য একটি অন্ধকার যুগ ছিল। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, নৈরাজ্যের কারণে দেশে জরুরী অবস্থা জারি করা হয়েছিল।
সে সময়ে বিরোধী দলে থাকলেও বিনাকারণে কারাবন্দী হওয়ার স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বন্দি হয়ে গেলাম আমি। তারপরেও আমি আশা ছাড়িনি, আল্লাহ একদিন সময় দেবেন এবং এদেশের মানুষের জন্য কাজ করতে পারবো।
তিনি ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে জয় যুক্ত করায় পুনরায় জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করে বলেন,‘নৌকা মার্কায় ভোট পেয়েছিলাম বলেই জয়ী হয়ে ২০০৯ সালে সরকার গঠন করতে পারলাম এবং পুণরায় আমাদের প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন শুরু করলাম।’
করোনাভাইরাসের কারণে বিশে^র স্থবিরতায় ঘরগুলো হস্তান্তরকালে সশরীরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকতে না পারার আক্ষেপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ ইচ্ছে ছিল নিজ হাতে আপনাদের কাছে বাড়ির দলিলগুলো তুলে দেব। কিন্তু এই করোনাভাইরাসের কারণে সেটা করতে পারলাম না। তবে, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছিলাম বলেই আপনাদের সামনে এভাবে হাজির হতে পেরেছি।’
আমাদের দেশের মানুষ যেন অন্ন, বস্ত্র এবং উন্নত জীবন পায় সেটা নিশ্চিত করাই জাতির পিতার একমাত্র লক্ষ্য ছিল উল্লেখ করে তিনি ৭৫ পরবর্তী সরকারগুলোর বিশেষ করে সেনা শাসক জিয়াউর রহমানের তথাকথিত গণতন্ত্রায়নের নামে দেশের বিরাজনীতি করনের ও কঠোর সমালোচনা করেন।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, একজন মিলিটারি ডিক্টেটর রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে একদিন ঘোষণা দিল আজকে রাষ্ট্রপতি হলাম, আর সেটাই গণতন্ত্র হয়ে গেল? হ্যাঁ অনেকগুলো রাজনৈতিক দল করার সুযোগ করে দিল (যুদ্ধাপরাধী এবং কারাগারে আটক খুনী অপরাধীদের) কিন্তু মানুষকে দুর্নীতি করার, মানি লন্ডারিং করার, ঋণ খেলাপি হওয়ার, টাকা ছাপিয়ে নিয়ে সেগুলো ছড়িয়ে দিয়ে ‘মানি ইজ নো প্রবলেম’ বা ‘আই উইল মেইক পলিটিক্স ডিফিকাল্ট’- তাদের কাজই ছিল এদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে খেলার। আর দরিদ্রকে দরিদ্র করে রাখা এবং মুষ্টিমেয় লোককে অর্থবিত্ত করে দিয়ে ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করা।
জিয়ার নির্বাচনের নামে প্রহসনের উদাহারণ টেনে ‘হ্যাঁ-না’ ভোটে ‘না’ ভোটের বাক্স না রাখা বা ১১০ শতাংশ ভোট পড়ারও অভিযোগ উত্থাপন করে তিনি বলেন, যারা গণতন্ত্র নিয়ে আজকে কথা বলেন তাদের কাছে আমার এটাই প্রশ্নœ এটা কি করে গণতন্ত্র হতে পারে? একটা দল হলো হাটতে চলতেও শিখলোনা (বিএনপি) ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে যে দলের সৃষ্টি তারাই ক্ষমতায় কি করে আসে?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশে^র দরবারের সম্মানের সঙ্গে মাথা উঁচু করে যেন চলতে পারি, সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।
এ সময় বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সকলের দোয়া এবং সহযোগিতার প্রত্যাশাও পুনর্ব্যক্ত করেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স উপলক্ষে সারা দেশের উপজেলা প্রান্তগুলোতে উৎসবের আমেজ পরিলক্ষিত হয়। চারটি স্থানের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী সরাসরি মতবিনিময় করলেও দেশের বিভিন্ন প্রান্তের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ তাদের এবং স্থানীয় জনগণের ভিভিও বার্তা মূল অনুষ্ঠানে প্রেরণ করেন। নতুন গৃহপ্রবেশ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সারা দেশের উপকারভোগীদের নিয়ে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। সেইসঙ্গে দেশব্যাপী মিষ্টি মুখ করানো হয় বলেও তথ্য মিলেছে।
বাসস/এএসজি-এফএন/১৫৩০/-আসাচৌ