ভারতে করোনা ঠেকাতে টিকাদান কর্মসূচি শুরু

712

নয়াদিল্লী, ১৬ জানুয়ারি, ২০২১ (বাসস): ভারতে আজ কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে বিশ্বের বৃহত্তম টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। করোনা বিরোধী এই ভ্যাকসিনেশন অভিযানের প্রথম পর্যায়ে দেশটির প্রায় ৩০ মিলিয়ন স্বাস্থ্য-কর্মী ও সম্মুখ-যোদ্ধাকে ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আজ সকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এ সময় এই সাফল্যের জন্য তিনি বিজ্ঞানীদের অভিনন্দন জানান।
তিনি বলেন, ‘এই ভ্যাকসিন উদ্ভাবনে এক বছরের বেশি সময় লেগে গেছে। কিন্তু তারপরও এই অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা একটি নয়, বরং দু’টি ভ্যাকসিন উৎপাদন করেছি।’
এ সময় তিনি ভ্যাকসিনের বিরুদ্ধে কোন ধরনের অপপ্রচার বা গুজবে কান না দেয়ার আহ্বান জানান।
তিনি আরো বলেন, ‘মানুষের ভ্যাকসিন বিষয়ক কোন ধরনের অপপ্রচারে কান দেয়া উচিৎ নয়, বিশেষকরে যখন ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। ভ্যাকসিনটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পর্যায়ে থাকাকালেই শুধুমাত্র জরুরি ব্যবহারের জন্য এর অনুমোদন দেয়া হয়েছে।’
মোদি বলেন, ‘ভারতের এই অল্প সময়ের মধ্যে দু’টি ভ্যাকসিন উৎপাদন আমাদের দেশের বৈজ্ঞানিকদের প্রতিভা ও দক্ষতার প্রমাণ। আমাদের টিকাদান কর্মসূচি মানবিক উদ্বেগের ভিত্তিতেই পরিচালিত হবে। তাই এই টিকাদানের ক্ষেত্রে যারা সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন, তাদেরকেই অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
তিনি গর্বের সঙ্গে বলেন, ভারতে তৈরি এই ভ্যাকসিনগুলো দেশে চলামান করোনাভাইরাস মহামারির বিরুদ্ধে একটি ‘চূড়ান্ত বিজয়’।
তিনি আরো বলেন, এই ভ্যাকসিনেশন অভিযানের পর, নাগরিকদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে এবং এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ সব ধরনের সতর্কতামূলক প্রস্তুতি নিতে হবে।
দ্বিতীয় পর্যায়ে, ৫০ বছরের বেশি ও যারা কোভিড ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেÑএমন প্রায় ২৭০ মিলিয়ন লোককে করোনার টিকা দেয়া হবে।
প্রতি বছর পোলিওর মতো রোগের বিরুদ্ধে লাখ লাখ শিশুকে যেই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে টিকা খাওয়ানো হয়, এই করোনা টিকাদান প্রক্রিয়াটিও সেই বিদ্যমান নেটওয়ার্কেই চলবে।
এই ভ্যাকসিনেশন কর্মসূচিটির প্রাথমিক পর্যায়ে আইসিটিএস কর্মীসহ সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতের স্বাস্থ্য-সেবাদানকারী কর্মীরা অগ্রাধিকার পাবে।
এদিকে, ভারত সরকার বৃহস্পতিবার টিকাদান কর্মসূচির জন্য একটি সার্কুলার জারি করেছে।
সার্কুলার অনুযায়ী, শুধুমাত্রা ১৮ বছরের বেশি বয়সের মানুষকেই এই ভ্যাকসিন দেয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। গর্ভবতী নারীদের এই ভ্যাকসিন নেয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
সরকারি সূত্র জানায়, প্রথম পর্যায়ে ভারতের ভ্যাক্সিনেশন পরিকল্পনা হচ্ছেÑ ৩০ মিলিয়ন সম্মুখ যোদ্ধাকে ভ্যাকসিন প্রদান করা এবং এরপর আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ৩শ’ মিলিয়ন নাগরিককে ভ্যাক্সিনেশনের আওতায় নিয়ে আসা।
ভারত সরকার স্বাস্থ্য-কর্মী ও সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের ভ্যাকসিনের খরচ বহন করবে।