ডিজিটাল সিলেট সিটি প্রকল্প : আইপি ক্যামেরার দায়িত্ব পেলো এসএমপি

789

সিলেট, ৭ জানুয়ারি, ২০২১ (বাসস): ডিজিটাল সিলেট সিটি প্রকল্পের আওতায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণে মহানগরে ১শ’ ১০টি ইন্টারনেট প্রটোকল (আইপি) ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। ‘আইপি ক্যামেরা বেইজড সার্ভিলেন্স সিস্টেম’ নামে এই কার্যক্রমের দায়িত্ব গ্রহণ করেছে সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি)।
বুধবার ডিজিটাল সিলেট সিটি প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা এসএমপি’র কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।
এসময় বক্তারা বলেন, উন্নত বিশ্বের মতো এসব ক্যামেরার মাধ্যমে অপরাধী শনাক্তের আধুনিক সুবিধা পাচ্ছে এসএমপি। সিলেট মহানগরকে আইপি ক্যামেরার আওতায় আনায় ছিনতাই, চুরিসহ অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকান্ড অনেকাংশে দমন করা সম্ভব হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ সড়কে অপরাধীর বিচরণ কমেছে। ইতোপূর্বে সংঘটিত অনেক অপরাধের রহস্য উদঘাটন, অপরাধী চিহ্নিতকরণ ও গুরুত্বপূর্ণ অপরাধী ধরতে আইপি ক্যামেরাগুলো সহায়ক হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তারা বিশেষ ধরনের এসব ক্যামেরার সুফল সম্পর্কে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন এবং ডিজিটাল সিলেট সিটি প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ কর্মপরিকল্পনার জন্য সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান।
দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠানে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার পরিতোষ ঘোষ, উপ-কমিশনার (সদর) তোফায়েল আহমদ, প্রকল্প পরিচালক মুহিদুর রহমান খান, সহকারী পরিচালক মধূসুদন চন্দসহ পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সহকারী পরিচালক মধূসুদন চন্দ সিলেট মিররকে জানান, আইপি ক্যামেরার পাশাপাশি নগরবাসীর জন্য বিনামূল্যে ওয়াইফাই সেবা নিশ্চিত করা হয়েছে। ৬২ পয়েন্টে ১২৬ এক্সেস পয়েন্ট স্থাপন করা হয়েছে। ওয়াইফাই-এর গতিও অনেক ভাল। নিরবিচ্ছিন্নভাবে এই সেবা গ্রহণ করতে পারছেন নগরবাসী। শিগগিরই এই অংশের দায়িত্ব আনুষ্ঠানিকভাবে সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান তিনি।
৩০ কোটি ২০ লক্ষ টাকা ব্যয় ধরে সিলেট নগর ডিজিটাইজেশন কাজটি বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগের তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি)। প্রকল্পের অধীনে নগরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে ইন্টারনেট প্রটোকল (আইপি ক্যামেরা) স্থাপন করা হয়। এর মধ্যে বিশেষ ধরণের ১০টি ফেস রিকোগনিশন (এফআর) বা ব্যক্তি সনাক্তকরণ এবং ১০টি অটো নাম্বার প্লেট রিকোগনিশন (এএনপিআর) তথা যানবাহনের নাম্বার প্লেট চিহ্নিতকরণ ক্যামেরা রয়েছে। এটি বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ব্যবহার করা হচ্ছে।
এসব ক্যামেরার সাহায্যে যানবাহনের ডাটা সংগ্রহ ও কুখ্যাত অপরাধী সনাক্তকরণে কাজ করছে সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি)। নগরের গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশমুখ, সড়ক ও জনবহুল স্থানে এসব ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে কিছু ক্যামেরা ৩৬০ ডিগ্রি জুমিং সুবিধা রয়েছে। পুলিশ যে কোনো অপরাধীর ছবি দিয়ে আইপি ক্যামেরার সার্ভারে অনুসন্ধান (সার্চ) করতে পারবে। ওই অপরাধী যদি আইপি ক্যামেরার আওতাভুক্ত কোনো এলাকায় চলাফেরা করেন, তবে সার্ভার তা সনাক্ত করে জানিয়ে দেবে।
অন্যদিকে, নগরের ৬২ এলাকায় সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ওয়াইফাই সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। এসব জায়গায় ১ শ’ ২৬টি ওয়াইফাই এক্সেস পয়েন্ট (এপি) রয়েছে। গত বছরের জানুয়ারি থেকে পরীক্ষামূলকভাবে এটি চালু হয়। এসএসআইডি পদ্ধতিতে ব্যবহারকারিরা ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ এবং পাসওয়ার্ড ‘জয় বাংলা’ লিখে বিনামূল্যে যে কেউ ওয়াইফাই সেবা গ্রহণ করতে পারছেন। পর্যটকরাও বিনামূল্যে এ সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। প্রতিটি সেকেন্ডে এক্সেস পয়েন্টের চতুর্দিকে ১০০ মিটার এলাকায় ব্যান্ডউইথ থাকবে ১০ মেগাবাইট বলে জানিয়েছেন প্রকল্প কর্মকর্তা।