লোহাগড়ায় একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের ৯হাজার ৫শ’৩৫ উপকারভোগী সদস্য স্বাবলম্বী

376

নড়াইল, ১০ এপ্রিল ২০১৮ (বাসস) : জেলার লোহাগড়া উপজেলায় একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ৯হাজার ৫শ’৩৫ উপকারভোগী সদস্য কর্মমূখী হয়ে স্বাবলম্বী হবার পথে।এ প্রকল্প থেকে সহজ শর্তে ও স্বল্প সুদে ৮হাজার উপকারভোগী সদস্য লোন গ্রহণ করে বিভিন্ন আয়বর্ধক কাজে বিনিয়োগ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।এছাড়া ১হাজার ৫শ’ সদস্য দ্রুততম সময়ে লোন পাবেন বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প’র লোহাগড়া উপজেলা প্রকল্প সমন্বয়কারী ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ দাউদ হোসেন বাসসকে জানান, লোহাগড়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে মোট ২০৩টি সমিতি রয়েছে।সমিতির কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য প্রত্যেক সমিতিতে ১১সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি আছে।একটি সমিতিতে সর্বোচ্চ ৪০জন মহিলা ও ২০জন পুরুষ উপকারভোগী সদস্য হতে পারবেন।বর্তমানে এ উপজেলায় উপকারভোগী সদস্য সংখ্যা হচ্ছে ৯হাজার ৫শ’৩৫ জন।প্রত্যেক সদস্য সপ্তাহে ৫০টাকা হারে মাসে ২শ’ টাকা সঞ্চয় জমা দেন।দু’বছরে একজন সদস্য’র সঞ্চয় জমা হয় ৪হাজার ৮শ’ টাকা।দারিদ্য দূরকরণে সরকারের পক্ষ থেকে একজন সদস্যকে আবর্তক তহবিল হিসেবে আরো ৪হাজার ৮শ’ টাকা প্রদান করা হয়।এ উপজেলার অধিকাংশ সমিতিতে দু’বছরে উপকারভোগী সদস্যদের সঞ্চয়ী তহবিলে জমা হয়েছে ৩লাখ টাকা।সরকার একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের অধীন ওই সমিতিকে আরো ৩ লাখ টাকা সমিতি তহবিল হিসেবে প্রদান করেছে।সদস্য তহবিল, সমিতি তহবিল ও সঞ্চয়ী লভ্যাংশ মিলে একটি সমিতির মূলধন হয়েছে ৯ লাখ টাকার বেশি।সমিতির উঠান বৈঠকের মাধ্যমে সুবিধাভোগী সদস্যদের মাত্র ৮শতাংশ লাভে চাহিদা অনুযায়ী লোন প্রদান করা হয়ে থাকে।লভ্যাংশের টাকাও ওই সমিতির তহবিল হিসেবে জমা হয়ে থাকে।প্রকল্প’র মাঠ সহকারি ও সমিতির ব্যবস্থাপক লোন প্রদান,টাকা জমাসহ সমিতির সার্বিক কার্যক্রম তদারকি করে থাকেন।লোহাগড়া উপজেলায় একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের মোট তহবিলের পরিমাণ ১১ কোটি ২ লাখ ৩৩ হাজার টাকা।এ প্রকল্পে উপজেলার ২৮৫ তালিকাভূক্ত ভিক্ষুককে পুর্নর্বাসন ও স্বাবলম্বী করার চেষ্টা চলছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভিক্ষুক পুর্নর্বাসনের জন্য ভিক্ষুকদের স্ঞ্চয়ী তহবিলে ১০ লাখ ৮৯ হাজার ৬শ’ টাকা প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারও ১০ লাখ ৮৯ হাজার ৬শ’ টাকা প্রদান করেছে।ভিক্ষুকমুক্ত নড়াইলের ৩ উপজেলার ভিক্ষুকরা এখন তাদের ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে ছোট পরিসরে বিভিন্ন ব্যবসা গ্রহণ করে জীবিকা নির্বাহ করছে।
লোহাগড়া উপজেলার কচুবাড়িয়া গ্রামের ইয়াসমীন (৩২) জানান,২০১৪ সালে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প’র সমিতি থেকে প্রথমে ১০হাজার টাকা লোন গ্রহণ করি। স্বল্প সুদের এ লোনের টাকা দিয়ে গরুর ফার্ম করে ব্যবসায় সাফল্য আসতে থাকে।বর্তমানে এ সমিতিতে তার চলমান লোনের পরিমাণ ৩০হাজার টাকা।ব্যবসা প্রসানের লক্ষ্যে আগামিতে তিনি সমিতি থেকে লোন হিসেবে ৫০হাজার টাকা গ্রহণের ইচ্ছা পোষণ করছেন। ইতনা ইউনিয়নের কুমারডাঙ্গা গ্রামের আরেক উপকারভোগী সদস্য সুমন শেখ (৩৫) জানান, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প’র সমিতি থেকে লোন নিয়ে টেইলার্সের দোকান দিয়ে আয় করে লোনের টাকা পরিশোধ করছেন এবং সংসারের ব্যয় নির্বাহ করছেন।একই গ্রামের উপকারভোগী সদস্য আসমা বেগম (৪৪) জানান,এ প্রকল্পের সমিতি থেকে ২০১১ সালে ৫হাজার টাকা লোন নিয়ে স্বামী জিন্নাত শেখকে একটি গরু কিনে দেন।পরবর্তীতে আরো টাকা লোন নিয়ে গরু কিনি।বর্তমানে তাদের ফার্মে ৫টি গরু রয়েছে।গরুর দুধ এবং এড়ে গরু বিক্রি করে তারা স্বাবলম্বী হবার পথে।