ভারতে ২০১৪ সাল থেকে ৪ বছরে চিতাবাঘের সংখ্যা ৬০% বেড়েছে

364

॥ আমিনুল ইসলাম মির্জা ॥
নয়াদিল্লী, ২২ ডিসেম্বর, ২০২০ (বাসস) : ভারতে ২০১৪ সাল থেকে মাত্র ৪ বছরে চিতাবাঘের সংখ্যা ৬০% বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৮ সালের এক গবেষণা অনুযায়ী, দেশটিতে চিতাবাঘের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৮ সালে তা ১২ হাজার ৮৫২টিতে দাঁড়িয়েছে।
সোমবার ‘স্ট্যাটাস অব লোপার্ডর্স ইন্ডিয়া ২০১৮’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালে এই সংখ্যা ছিল আনুমানিক ৭ হাজার ৯১০টি। ক্যামেরা ট্যাপিং পদ্ধতি ব্যবহার করে চিতাবাঘের এই সংখ্যা অনুমান করা হয়েছে। যে সব এলাকায় বাঘের বিচরণ রয়েছে, সেসব এলাকায় জরিপ চালিয়ে বাঘের এই সংখ্যা বের করা হয়েছে।
প্রতিবেদনটি প্রকাশের সময় ভারতের পরিবেশ মন্ত্রী প্রকাশ জাভাদেকার বলেন, ‘ভারতে বিগত কয়েক বছর ধরে বাঘ, সিংহ ও চিতাবাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি এটাই প্রমাণ করে যে, আমাদের দেশ তার পরিবেশ, ইকো-সিস্টেম ও জীব-বৈচিত্র বেশ ভালভাবেই রক্ষা করেছে।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মধ্যপ্রদেশ, কর্ণাটক ও মহারাষ্ট্রে চিতাবাঘের সংখ্যা রেকর্ড বৃদ্ধি পেয়েছে। চিতাবাঘের এই আনুমানিক সংখ্যা মধ্যপ্রদেশে ৩ হাজার ৪২১টি, কর্ণাটকে ১ হাজার ৭৮টি ও মহারাষ্ট্রে ১ হাজার ৬৯০টি।
এতে আরো বলা হয়েছে, মধ্য-ভারত ও ইস্টার্ন ঘাটে সবচেয়ে বেশি ৮ হাজার ৭১টি ও চিতাবাঘ পাওয়া গেছে। মধ্যপ্রদেশ রাজ্য, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, ওড়িষা, ছত্তিশগড়, ঝাড়খন্ড, তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশ এই অঞ্চলটির অন্তর্ভূক্ত। সেই তুলনায় ওয়েস্টার্ন ঘাট অঞ্চলে মাত্র ৩ হাজার ৩৮৭টি চিতাবাঘ রয়েছে। কর্ণাটক, তামিলনাড়–, গোয়া ও কেরালা ওয়েস্টার্ন ঘাটের অন্তর্ভূক্ত।
এদিকে শিবালিক ও গাঙ্গেটিক অঞ্চলে ১ হাজার ২৫৩টি চিতাবাঘ আছে। উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখান্ড ও বিহার এই অঞ্চলের অন্তর্গত। নর্থ ইস্ট পার্বত্য অঞ্চলে ১৪২টি চিতার সন্ধান পাওয়া গেছে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘৫১ হাজার ৩৩৭টি চিতাবাঘের ছবি থেকে বাঘের ধরন সনাক্তকরণ সফটওয়্যার ব্যবহার করে মোট ৫ হাজার ২৪০টি প্রাপ্তবয়স্ক চিতাবাঘ চিহ্নিত করা হয়েছে।’
ভারতীয় উপমহাদেশে বিগত ১২০ থেকে ২০০ বছরে মনুষ্য সৃষ্ট কারণে চিতাবাঘের সংখ্যা ৭৫ থেকে ৯০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। বর্তমানে অবৈধভাবে চিতাবাঘ হত্যা, মানুষের কারণে তাদের আবাসভূমি হারানো, যুদ্ধ-সংঘাত ও এদের প্রাকৃতিক শিকারের (খাবার) অভাব প্রায় বিপন্ন এই প্রজাতিটির টিকে থাকার প্রধান ঝুঁকি।
এই সব কারণে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব কোনজারভেশন অব ন্যাচার (আইইউসিএন) প্রজাতিটির অবস্থান ‘প্রায় ঝুঁকিপূর্ণ’ থেকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে নির্ধারণ করেছে।