এসএমই’র করোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সোস্যাল ক্যাম্পেইন কার্যক্রমের উদ্বোধন

615

ঢাকা, ১০ ডিসেম্বর, ২০২০ (বাসস) : ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদ্যোক্তাদের (এসএমই) করোনার (কভিড-১৯) ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে দেশী পণ্যের ব্যবহার বাড়াতে অনলাইনে সোস্যাল ক্যাম্পেইন কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে।
এসএমই ফাউন্ডেশন এসএমই উদ্যোক্তাদের তৈরীকৃত পণ্য ব্যবহার বাড়াতে ক্রেতাদের উদ্বুদ্ধকরণে আজ বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিক ভাবে এই উদ্বুদ্ধকরণ প্রচারণা শুরু করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। সভাপতিত্ব করেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মোঃ মাসুদুর রহমান।
নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্য বা সেবা ক্রয় করা হবে। এ জন্য পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইনে কোটা ব্যবস্থা অর্ন্তভূক্তি করার প্রচেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, এটি চুড়ান্ত হলে এসএমই খাত লাভবান হবে এবং করোনা পরিস্থিতিতে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদ্যোক্তারা গুরুত্বর্পূণ ভূমিকা রাখবে।
শিল্পমন্ত্রী এ সময় উল্লেখ করেন,বর্তমান করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় কোলেটারালের বাধ্যবাধকতা ও অন্যান্য শর্ত শিথিল করে সিএমএসএমই’র সক্ষমতা বিবেচনায় প্রণোদনার অর্থ মঞ্জুরের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের ক্ষেত্রে গতিশীলতা আনা প্রয়োজন।
তিনি বলেন,করোনাকালীন পণ্য বিপণন সুবিধা স¤প্রসারণে এসএমই এবং ক্রেতাদের মধ্যে লিঙ্কেজ শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এসএমই ফাউন্ডশেন এবং বিসিক উদ্যোক্তাদের ই-কর্মাস প্রশিক্ষণ প্রদান করছে।
মন্ত্রী বলেন,সরকারের এ সকল উদ্যোগের ফলে শিল্প খাতে নিরবচ্ছিন্ন সাপ্লাই চেইন অব্যাহত রয়েছে। করোনার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত এসএমই খাতের উন্নয়নে সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নীতি সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
নূরুল মজিদ মাহমুদ বলেন, মুক্তবাজার অর্থনীতিতে বিভিন্ন দেশের পণ্যের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে নতুন ও আধুনিক প্রযুক্তি আয়ত্ব করার পাশাপাশি দেশী ও আন্তর্জাতিক ভোক্তাদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্যের গুণগত মান উন্নত করা যেমন জরুরি, তেমনি এসএমইদের পণ্য বিপণনের সুবিধা বৃদ্ধি করাও দরকার।।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় এসএমই খাতের টিকে থাকার জন্যই এসব উদ্যোক্তাদের পাশে দাঁড়ানো এবং সহযোগিতা করা এখন সময়ের দাবি। তিনি বলেন,বাংলাদেশের অভ্যন্তরেই রয়েছে প্রায় ১৭ কোটি মানুষের বিশাল এক বাজার। ‘আসুন আমরা ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের তৈরি দেশী পণ্য ক্রয় করি এবং ব্যবহার করি। এভাবে দেশের এ সংকটময় অবস্থায় দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে আপনিও ভুমিকা রাখতে পারেন।’
টিপু মুনশি এআরও বলেন,দেশী পণ্যের ব্যবহার দেশপ্রেমেরই পরিচায়ক এবং গৌরবের বিষয়ও বটে। তিনি বলেন,‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী একজন খাটি বাঙালী এবং আমাদের উদ্যোক্তাদের তৈরি দেশীয় পণ্যকেই তিনি প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। তাই আসুন এই ক্রান্তিকালে বিদেশী পণ্যের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা কমিয়ে করোনা পরিস্থিতিতে যেসব পণ্য দেশে উৎপাদিত হচ্ছে সেগুলো বেশি বেশি ক্রয় করি এবং ব্যবহার করি।’
বাণিজ্যমন্ত্রী আশা করেন, সরকার ঘোষিত ২০ হাজার কোটি টাকা প্রণাদনা প্যাকেজ শতভাগ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের কাছে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো আন্তরিকভাবে কাজ করবে।
অধ্যাপক ড. মোঃ মাসুদুর রহমান বলেন, দেশী ফ্যাশন ডিজাইনাররা বছরে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার পণ্য উৎপাদন করেন। তাই সরকারি কেনাকাটায় এসএমই উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে পণ্য ক্রয়ের জন্য কোটা নির্ধারণ করা হলে দেশী পণ্যের ব্যবহার বাড়ার ক্ষেত্রে তা যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে।