সিলেট, ৬ জুলাই, ২০১৭ (বাসস) : সিলেটে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। জেলার ১০টি উপজেলার কিছু কিছু এলাকায় পানি কমতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে জেলার বন্যার্তদের জন্য ৮শ’ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
বন্যাকবলিত প্রতিটি এলাকায় জেলা ও স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে অর্থসহ বিভিন্ন ত্রাণসামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।
বন্যাদুর্গত এলাকায় কাজ করছে ৭৮টি মেডিকেল টিম।
বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
সিলেটের জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার বাসসকে জানান, ইতোমধ্যে জেলার বন্যার্তদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৮শ’ মে. টন চাল ও নগদ ১২ লাখ টাকা। খোলা হয়েছে ১১টি আশ্রয় কেন্দ্র। এসব কেন্দ্রে ৬২৯ জন লোক আশ্রয় নিয়েছেন।
ধীরে ধীরে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছে উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবধরণের সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিনই বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে বিতরণ করা হচ্ছে, সরকারি ত্রাণ সামগ্রী ও নগদ অর্থ।
বৃহস্পতিবার ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ফয়জুর রহমানের নেতৃত্বে বালাগঞ্জ ও গোলাপগঞ্জ উপজেলার বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন ও ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ সাঈদ আহমদ চৌধুরী জানান, সিলেটে আগামি তিনদিনের মধ্যে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জানান, ভারী বৃষ্টিপাত না হওয়ায় কুশিয়ারা ও সুরমা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে।
সিলেটের বন্যাকবলিত এলাকায় ৭৮টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। এছাড়া আরো ৭০টি মেডিকেল টিম প্রয়োজনে স্বাস্থ্য সেবা দেবার জন্যে প্রস্তুত রয়েছে। বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষের নানা ধরনের সমস্যা এবং রোগ ব্যাধি থেকে সচেতন করার পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে এসব মেডিকেল টিম কাজ করছে।
সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. হিমাংশু লাল রায় এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, বন্যাদূর্গত এলাকায় মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে সরকার।
মৌলভীবাজারেও বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে এখনও ৩ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী রয়েছেন। কুশিয়ারা নদীর পানি কমলেও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে সৃষ্ট বন্যায় বড়লেখা, জুড়ী, কুলাউড়া, রাজনগর ও সদর উপজেলার ৩৩টি ইউনিয়নে বন্যার পানি এখন স্থায়ী জলাবদ্ধতায় রুপ নিয়েছে। বাড়ি-ঘড় ও রাস্তাঘাট থেকে পানি না নামায় প্রতিদিন মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। পাশাপাশি বন্যার্তদের মধ্যে বিশুদ্ধ পানির অভাবসহ বিভিন্ন ধরনের পানিবাহিত রোগব্যাধিও বাড়ছে। এসব এলাকার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্থরের ১৮৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।