দেশে ২৪ ঘন্টায় কারোনায় মারা গেছে ৩৯ জন, সুস্থ ১,৭৪৯

452

ঢাকা, ১৭ নভেম্বর, ২০২০ (বাসস) : দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ২৫৫তম দিনে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ৩৯ জন। একই সময়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৭৪৯ জন।
গতকালের চেয়ে আজ ১৮ জন বেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল মৃত্যুবরণ করেছিলেন ২১ জন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৬ হাজার ২৫৪ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। গত ১৪ নভেম্বর থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৭৪৯ জন। গতকালের চেয়ে আজ ১৪৫ জন বেশি সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ১ হাজার ৬০৪ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮০ দশমিক ৮১ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৮০ দশমিক ৮২ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ০১ শতাংশ কম।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৫ হাজার ৯৯০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ২১২ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ৭৩ জন বেশি শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১৫ হাজার ৭৬৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলে ২ হাজার ১৩৯ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ২৬ শতাংশ বেশি।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ২৫ লাখ ৭২ হাজার ৯৫২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪ লাখ ৩৬ হাজার ৬৮৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৯৭ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৬ দশমিক ৯৯ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৬ হাজার ৬০২ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৬ হাজার ২১৮ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৩৮৪টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১১৭টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৫ হাজার ৯৯০ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৫ হাজার ৭৬৮ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ২২২টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২৫৬৪ দশমিক ১১ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ২০৭২ দশমিক ১২ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৩৬ দশমিক ৭২ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ৩৯ জনের মধ্যে পুরুষ ৩০ জন, আর নারী ৯ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ৮১৩ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৪৪১ জন। শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ; নারী ২৩ দশমিক ০৪ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ৩৯ জনই হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ১১ থেকে ২০ বছরের ১ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের ১ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ২ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ১০ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ২৪ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৯ জন; যা দশমিক ৪৬ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৪৯ জন; যা দশমিক ৭৮ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৪৪ জন; যা ২ দশমিক ৩০ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৩২ জন; যা ৫ দশমিক ৩১ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৭৬৮ জন; যা ১২ দশমিক ২৮ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৬৪২ জন; যা ২৬ দশমিক ২৬ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ৩ হাজার ২৯০ জন; যা ৫২ দশমিক ৬১ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ২২ জন, চট্টগ্রাম ও রংপুর বিভাগে ৫ জন করে, রাজশাহী বিভাগে ৩ জন এবং বরিশাল ও সিলেট বিভাগে ২ জন করে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৩ হাজার ২৮৩ জন; যা ৫২ দশমিক ৪৯ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ২২৩ জন; যা ১৯ দশমিক ৫৬ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩৮২ জন; যা ৬ দশমিক ১১ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪৮২ জন; যা ৭ দশমিক ৭১ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ২০৯ জন; যা ৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৫৯ জন; যা ৪ দশমিক ১৪ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২৮৬ জন; যা ৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১৩০ জন; যা ২ দশমিক ০৮ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ৫২৫টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৯৫০ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ৫৭৫টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩০৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ২৯৮ জন ও শয্যা খালি আছে ১১১টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৭০টি, ভর্তিকৃত রোগী ১৬৫ জন ও শয্যা খালি আছে ৬০৫টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৬ জন ও শয্যা খালি আছে ২৩টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ১৫৮টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৫২৪ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৬৩৪টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২১১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৬৩ জন ও শয্যা খালি আছে ১৪৮টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১১ হাজার ৪৫৩টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৬৩৯ জন এবং শয্যা খালি আছে ৮ হাজার ৮১৪টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৫৯টি, রোগী ভর্তি আছে ২৭৭ জন এবং খালি আছে ২৮২টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ৬০১টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৬০৪টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৩৯৫টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ১ হাজার ৭৪৯ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ২৫২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৩৮ জন, রংপুর বিভাগে ৫০ জন, খুলনা বিভাগে ৪০ জন, বরিশাল বিভাগে ১৫ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩২ জন, সিলেট বিভাগে ৫৯ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ২৩ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৭২৯ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ৩৭ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৬৭ হাজার ২৭১ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫ লাখ ২৮ হাজার ৩৩৫ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৩৮ হাজার ৯৩৬ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ১৮১ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ১৫৭ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৮৮ হাজার ৭৪৫ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৭৬ হাজার ৫৫১ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১২ হাজার ১৯৪ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৫ হাজার ৪৭১ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১১ লাখ ৯৫ হাজার ২৩৩ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৫ হাজার ১৭২টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ২২৯টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৫ হাজার ৪০১টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ২৫ লাখ ২৮ হাজার ৪৮৮টি।
কোভিড বিষয়ে হটলাইনে ২৪ ঘন্টায় ফোন করে স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছেন ২ হাজার ৫১০ জন, এবং এ পর্যন্ত ৫ লাখ ৪৮ হাজার ১৬২ জন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ৫৭ হাজার ১১৪ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৫৪ হাজার ৪৩৪ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫ কোটি ৪৩ লাখ ১ হাজার ১৫৬ জন এবং ১৩ লাখ ১৬ হাজার ৯৯৪ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।