দেশে করোনায় সুস্থতা সাড়ে ৩ লাখ ছাড়িয়েছে

825

ঢাকা, ১৬ নভেম্বর, ২০২০ (বাসস) : দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ২৫৪তম দিনে এই ভাইরাস থেকে সুস্থ মানুষের সংখ্যা সাড়ে ৩ লাখ ছাড়িয়েছে।
গত ১৬ অক্টোবর করোনাভাইরাস থেকে সুস্থ হয়ে উঠা মানুষের সংখ্যা ৩ লাখ ছাড়িয়েছিল। ওইদিন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছিল ৩ লাখ ৭৩৮ জন। ১ মাসে এই ভাইরাস থেকে সুস্থ হয়েছেন ৫০ হাজার ৪০৮ জন। করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ৫১ হাজার ১৪৬ জন। এরমধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৬০৪ জন। আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮০ দশমিক ৮২ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৮০ দশমিক ৮৫ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ০৩ শতাংশ বেশি।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৫ হাজার ৭৬৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ১৩৯ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ৩০২ জন বেশি শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১৪ হাজার ৬০ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৮৩৭ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১৩ দশমিক ০৭ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ৫ শতাংশ বেশি।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ২৫ লাখ ৫৬ হাজার ৯৬২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪ লাখ ৩৪ হাজার ৪৭২ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৯৯ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৭ দশমিক ০১ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকালও ২১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৬ হাজার ২১৫ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। গত ১৪ নভেম্বর থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৬ হাজার ২১৮ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৪ হাজার ৩ জনের। গতকালের চেয়ে ২ হাজার ২১৬টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১১৬টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৫ হাজার ৭৬৮ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৪ হাজার ৬০ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ১ হাজার ৭০৮টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২৫৫১ দশমিক ১২ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ২০৬১ দশমিক ৮৫ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৩৬ দশমিক ৪৯ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ২১ জনের মধ্যে পুরুষ ১৬ জন, আর নারী ৬ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ৭৮৩ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৪৩২ জন। শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ; নারী ২৩ দশমিক ০৪ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ২০ জন হাসপাতালে এবং ১ জন বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৪১ থেকে ৫০ বছরের ৬ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ১ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ১৪ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৯ জন; যা দশমিক ৪৭ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৪৮ জন; যা দশমিক ৭৭ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৪৩ জন; যা ২ দশমিক ৩০ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৩১ জন; যা ৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৭৬৬ জন; যা ১২ দশমিক ৩৩ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৬৩২ জন; যা ২৬ দশমিক ২৬ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ৩ হাজার ২৬৬ জন; যা ৫২ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ১৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪ জন এবং রাজশাহী বিভাগে ১ জন এবং সিলেট বিভাগে ৩ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৩ হাজার ২৬১ জন; যা ৫২ দশমিক ৪৭ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ২১৮ জন; যা ১৯ দশমিক ৬০ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩৭৯ জন; যা ৬ দশমিক ১০ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪৮২ জন; যা ৭ দশমিক ৭৬ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ২০৭ জন; যা ৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৫৭ জন; যা ৪ দশমিক ১৪ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২৮১ জন; যা ৪ দশমিক ৫২ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১৩০ জন; যা ২ দশমিক ০৯ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ৫১৯টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৯৩৯ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ৫৮০টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩০৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ২০২ জন ও শয্যা খালি আছে ১০৭টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৭০টি, ভর্তিকৃত রোগী ১৪৯ জন ও শয্যা খালি আছে ৬২১টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৪ জন ও শয্যা খালি আছে ২৫টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ১৬৪টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৫৫৬ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৬০৮টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২১১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৬৭ জন ও শয্যা খালি আছে ১৪৪টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১১ হাজার ৪৫৩টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৬৪৪ জন এবং শয্যা খালি আছে ৮ হাজার ৮০৯টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৫৯টি, রোগী ভর্তি আছে ২৮৩ জন এবং খালি আছে ২৭৬টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ৬০৩টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৬০৪টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৩৯৫টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ১ হাজার ৬০৪ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ২৩২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৪৩ জন, রংপুর বিভাগে ২১ জন, খুলনা বিভাগে ২১ জন, বরিশাল বিভাগে ২২ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৮ জন এবং সিলেট বিভাগে ৩৭ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৮৪৭ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৮৫৮ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৬৬ হাজার ৫৮২ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫ লাখ ২৭ হাজার ২৯৮ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪০ হাজার ২৪৪ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ১৫৬ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ১২৪ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৮৮ হাজার ৫৬৪ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৭৬ হাজার ৩৯৪ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১২ হাজার ১৭০ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৪ হাজার ৪৪৫ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১১ লাখ ৮৯ হাজার ৭৬২ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৫ হাজার ৭০৬টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ২৩২টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৫ হাজার ৯৩৮টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ২৫ লাখ ২৩ হাজার ৮৭টি।
কোভিড বিষয়ে হটলাইনে ২৪ ঘন্টায় ফোন করে স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছেন ২ হাজার ৪২৮ জন, এবং এ পর্যন্ত ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৬৫২ জন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ১৫ হাজার ৭৩১ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৫৩ হাজার ৮৬০ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫ কোটি ৩৭ লাখ ৬৬ হাজার ৭২৮ জন এবং ১৩ লাখ ৮ হাজার ৯৭৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।