দেশে ২৪ ঘন্টায় কোভিড-১৯ এ মৃত্যু ২৪ জন, সুস্থ ১,৭০৪

329

ঢাকা, ২১ অক্টোবর, ২০২০ (বাসস) : দেশে গত ২৪ ঘন্টায় কোভিড-১৯ এ ২৪ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। আর সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৭০৪ জন।
গতকালের চেয়ে আজ ৬ জন বেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ১৮ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ৭২৩ জন।করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৬ শতাংশ। গত ৭ অক্টোবর থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৭০৪ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ৮ হাজার ৮৪৫ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৭৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ১২ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৪ হাজার ৮৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৫৪৫ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১৩ হাজার ৬১১ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৩৮০ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১০ দশমিক ৯৭ শতাংশ। আগের দিনও এই হার ছিল ১০ দশমিক ১৪ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ৮৩ শতাংশ বেশি।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ২২ লাখ ৬ হাজার ৪১১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ লাখ ৯৩ হাজার ১৩১ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৭ দশমিক ৮২ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৪ হাজার ৯১ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৩ হাজার ৮৬০ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ২৩১টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১১০টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ৮৬ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৩ হাজার ৬১১ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৪৭৫টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২৩০৮ দশমিক ৩৭ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ১৮১৩ দশমিক ৪৭ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৩৩ দশমিক ৬০ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ২৪ জনের মধ্যে পুরুষ ১৯ জন, আর নারী ৫ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ৪০৪ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৩১৯ জন। শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ; নারী ২৩ দশমিক ০৫ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ২৩ জন হাসপাতালে এবং বাড়িতে ১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন ।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ২১ থেকে ৩০ বছরের ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ২ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের বছরের ৮ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ১৩ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৯ জন; যা দশমিক ৫১ শতংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৪৫ জন; যা দশমিক ৭৯ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১২৮ জন; যা ২ দশমিক ২৪ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩১৯ জন; যা ৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৭১৩ জন; যা ১২ দশমিক ৪৬ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৫২৬ জন; যা ২৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ২ হাজার ৯৬৩ জন; যা ৫১ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ১৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩ জন, রাজশাহী বিভাগে ২ জন এবং খুলনা ও রংপুর বিভাগে ১ জন করে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ২ হাজার ৯৩৭ জন; যা ৫১ দশমিক ৩২ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ১৪৪ জন; যা ১৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩৬৭ জন; যা ৬ দশমিক ৪১ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪৫৯ জন; যা ৮ দশমিক ০২ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ১৯৭ জন; যা ৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৪০ জন; যা ৪ দশমিক ১৯ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২৬০ জন; যা ৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১১৯ জন; যা ২ দশমিক ০৮ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ৫১৯টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৭৬৬ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ৭৫৩টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩১৪টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৮৫ জন ও শয্যা খালি আছে ১২৯টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৮২৫টি, ভর্তিকৃত রোগী ১২৩ জন ও শয্যা খালি আছে ৭০২টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৫ জন ও শয্যা খালি আছে ২৪টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৩৮৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৪৮০ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৯০৬টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২১১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৭৯ জন ও শয্যা খালি আছে ১৩২টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১১ হাজার ৭৩০টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৩৬৯ জন এবং শয্যা খালি আছে ৯ হাজার ৩৬১টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৬৪টি, রোগী ভর্তি আছে ২৭৯ জন এবং খালি আছে ২৮৫টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ৯০টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৫৬২টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৩৫৮টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ১ হাজার ৭০৪ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ১০৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৮৩ জন, রংপুর বিভাগে ৪৩ জন, খুলনা বিভাগে ১৩৬ জন, বরিশাল বিভাগে ৪৩ জন, রাজশাহী বিভাগে ১০৪ জন, সিলেট বিভাগে ৬৪ জন এবং ময়মনসিংহে ২২ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ১৫৫ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ২১৫ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৮৪ হাজার ৬৩৯ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৭২ হাজার ৪৭৫ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১২ হাজার ১৬৪ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৬২৪ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৫৭০ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৪৭ হাজার ৮১৩ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫ লাখ ৭ হাজার ৯৩৩ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৩৯ হাজার ৮৮০ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৮৩৯টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ফোন এসেছে ৩২ হাজার ৩৬৫ এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ২১০টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৩৯ হাজার ৪১৪টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ১৯ লাখ ৮ হাজার ৫৪৪টি।
এছাড়া ২৪ ঘন্টায় কোভিড বিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ২ হাজার ৮৮২ জন। এ পর্যন্ত শুধু কোভিড বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ লাখ ৯২ হাজার ৬৯৯ জন। প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন স্বাস্থ্য তথ্যকর্মকর্তা দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৪ হাজার ৫৩৩ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১০ লাখ ৭০ হাজার ৫২৭ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০ অক্টোবর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮৫ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬৬ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৩৫ হাজার ২৭৫ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০ অক্টোবর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৪ কোটি ২ লাখ ৫১ হাজার ৯৫০ জন এবং ১১ লাখ ১৬ হাজার ১৩১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।