বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে দেশে ফেরাতে সহযোগিতার আশ্বাস যুক্তরাষ্ট্রের

692

ঢাকা, ১৫ অক্টোবর, ২০২০ (বাসস) : সফররত মার্কিন উপ পররাষ্ট্র মন্ত্রী স্টিফেন ই. বিগান বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত পলাতক খুনি রাশেদ চৌধুরীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে সহযোগিতা জোরদারের আশ্বাস দিয়েছেন।
মার্কিন উপ-পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে বুধবার নৈশভোজ বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এই ইস্যুটি উত্থাপন করলে তিনি এই আশ্বাস দেন। আজ পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় এক বিবৃতিতে এ কথা জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয় সহযোগিতা সম্প্রসারণে তাকে (শাহরিয়ার আলম) আশ্বস্ত করেছেন।’
আজ সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে বিগানের বৈঠকেও যুক্তরাষ্ট্র থেকে রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনার ইস্যু উত্থাপন করা হয়েছে।
বিগানের সঙ্গে বৈঠকের পরে এক যৌথ প্রেস ব্রিফিংয়ে ড. মোমেন বলেন, ‘এ ব্যাপারে (খুনিকে দেশে ফিরিয়ে আনা) আমরা একটি সুসংবাদ পেয়েছি, তিনি (বিগান) বলেছেন যে মার্কিন এটর্নি জেনারেল বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। ’
এরআগে, বেশ কয়েকবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে ‘মুজিব বর্ষের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে রাশেদ চৌধুরীকে দেশে ফিরিয়ে আনার আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী।
সরকার এরআগে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী দন্ডপ্রাপ্ত পলাতক দুই দুই খুনি রাশেদ চৌধুরী ও নূর চৌধুরীকে যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় বসবাসকারী হিসেবে শনাক্ত করেছে। অন্য তিন পলাতক খন্দকার আবদুর রশিদ, শরিফুল হক ডালিম এবং মোসলেহউদ্দীন খানের সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি।
এই দুই হত্যাকারীর অবস্থান জানার পর এই দুই পলাতক খুনিকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টায় পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় এবং আইন মন্ত্রনালয় যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত রয়েছে।
আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অপর পলাতক দন্ডপ্রাপ্ত তিন ঘাতককে শনাক্ত এবং দেশে ফিরিয়ে আনতে ঢাকা বিশ্বের দেশগুলোর সহযোগিতা চেয়েছে। হত্যাকারীদের সন্ধানের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় বিদেশে সকল মিশনকে বিশেষ নির্দেশনা দেয়।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর পরিবারের বেশির ভাগ সদস্যকে হত্যার দায়ে ১২ জন প্রাক্তন সামরিক কর্মকর্তাকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়।
তাদের মধ্যে বরখাস্ত হওয়া ৫ জন সেনা কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, একেএম মহিউদ্দিন আহমেদ, মহিউদ্দিন আহমেদ এবং বজলুল হুদাকে ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসি দেয়া হয়। অপর বরখাস্ত ও দন্ডপ্রাপ্ত কর্নেল রাশেদ পাশার জিম্বাবুয়েতে স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।
ফারুক রহমান, শাহরিয়ার রশিদ খান, আর্টিলারির মহিউদ্দিন আহমেদ জেলা জজ আদালতে বিচারের মুখোমুখি হন, বজলুল হুদাকে থাইল্যান্ড থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয় এবং জেলা জজ গোলাম রসুল রায় দেয়ার পরে মহিউদ্দিনকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরিয়ে আনা হয়।
ভারতে লুকিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধু হত্যার পলাতক খুনি বরখাস্ত ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদকে এখানে গ্রেফতার করা হয় এবং গত ১২ এপ্রিল কেরাণিগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়।