মহাত্মা গান্ধী ও বঙ্গবন্ধু দু’জনই সমগ্র বিশ্বের জন্য শান্তি ও মানবতার বাতিঘর : আলোচনা সভায় বক্তারা

1464

ঢাকা, ২ অক্টোবর, ২০২০ (বাসস) : মহাত্মা গান্ধী ও বঙ্গবন্ধু দু’জনই সমগ্র বিশ্বের জন্য শান্তি ও মানবতার বাতিঘর ।
আজ মহাত্মা গান্ধীর ১৫২তম জন্মদিন উপলক্ষে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় মহাত্মা গান্ধী ও বঙ্গবন্ধুর অবদানের উপর দেশ-বিদেশের বুদ্ধিজীবীদের এক অনলাইন আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা বলেন।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এই অনলাইন আলোচনা সভার আয়োজন করে।
লেখক-সাংবাদিক শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ অনলাইন আলোচনায় প্রধান আলোকে ছিলেন বিশিষ্ট গবেষক, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর অধ্যাপক আতিউর রহমান ও ব্রিটিশ মানবাধিকার কর্মী জুলিয়ান ফ্রান্সিস।
অন্যান্য আলোচকদের মধ্যে ছিলেন সমাজকর্মী আরমা দত্ত এমপি, লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ, সাংবাদিক স্বদেশ রায়, কাজী মুকুল, ভারত থেকে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেছেন চন্দন পাল, কর্ণাটকের গভর্মেন্ট ফার্স্ট গ্রেড কলেজ ফর উইমেন-এর ফিজিক্যাল এডুকেশন ডিরেক্টর ড. আবিদা বেগম, অ্যাডভোকেট মানবেন্দ্র নাথ মন্ডল, সমাজকর্মী বিদ্যুৎ দেবনাথ।
স্বাগত বক্তব্যে শাহরিয়ার কবির বিশ্বশান্তির পক্ষে মহাত্মা গান্ধী ও বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন উক্তি ও ভাষণ উদ্ধৃত করে বলেন, ‘যুদ্ধ, গৃহযুদ্ধ, ছায়াযুদ্ধ, সন্ত্রাস ও ঘৃণা-বিদ্বেষে জর্জরিত বর্তমান বিশ্বে শান্তি ও সম্প্রীতির বাতাবরণ তৈরি করতে হলে মহাত্মা গান্ধী ও বঙ্গবন্ধুর জীবনদর্শনের চেতনায় তরুণ প্রজন্মকে আলোকিত করতে হবে। শান্তি, সম্প্রীতি ও মানবতার শত্রুরা ভারত ও বাংলাদেশের জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেছে। ধর্মনিরপেক্ষ মানবতা, শান্তি ও সম্প্রীতির চেতনা ব্যক্তি ও সমাজ জীবন থেকে আরম্ভ করে রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে অনুসরণ করতে হবে।’
প্রধান বক্তা ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘মহাত্মা গন্ধী ও বঙ্গবন্ধু দুজনেই শান্তির ধারণাকে অহিংসা, মানবাধিকার, ধর্মনিরপেক্ষতা, সম্প্রীতি, পরিবেশ ও উন্নয়নের বৃহত্তর পরিসরে স্থাপন করেছিলেন। মহাত্মা গান্ধী ন্যায়বিচার, মানবিক মর্যাদা ও প্রকৃতির ভারসাম্য থেকে শান্তিকে আলাদা করে দেখেননি।’
বৃটিশ গান্ধীবাদী সমাজকর্মী জুলিয়ান ফ্রান্সিস বলেছেন, ‘এ প্রশ্ন খুব স্বাভাবিক বিশ্বের বর্তমান পরিস্থিতি অবলোকন করলে গান্ধীর প্রতিক্রিয়া কী হত। নিশ্চিতভাবে বলতে পারি বর্তমানে চীন-যুক্তরাষ্ট্র বিরোধ, দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের আধিপত্যকে কেন্দ্র করে আঞ্চলিক অশান্তি, ভারত-চীন সীমান্ত বিরোধ, মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধোন্মদনা প্রভৃতি গান্ধীকে অত্যন্ত বিচলিত করত।’
গান্ধী গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ‘মহাত্মা গান্ধী দীর্ঘ সময় যুক্ত বাংলায় তার অহিংসা ও অসহযোগের নীতি প্রচারে নিয়োজিত ছিলেন।
মানবেন্দ্র নাথ মন্ডল বলেন,‘মহাত্মা গান্ধী ও বঙ্গবন্ধু দুজনেই শান্তিপূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে নিজেদের দেশের জনগণকে মুক্ত করতে চেয়েছিলেন, শাসকশ্রেণী যা গ্রহণ করতে সম্মত হয়নি। তাঁরা দুজনই শান্তি ও সম্প্রীতির জন্য জীবন দিয়েছেন।’
গান্ধীবাদী শিক্ষাবিদ ড. আবিদা বেগম বলেন, মহাত্মা গান্ধী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ভারত ও বাংলাদেশের দুই মহান রাষ্ট্রনায়ক শান্তি, অহিংসা ও সম্প্রীতিকে নিজেদের জবিনের ব্রত হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন এবং এরই জন্য জীবন দিয়েছেন। এঁরা দুজন সমগ্র বিশ্বের জন্য শান্তি ও মানবতার বাতিঘর।’