দেশে করোনা সংক্রমণ কমেছে, বেড়েছে সুস্থতা

279

ঢাকা, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২০ (বাসস) : দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার কমেছে, বেড়েছে সুস্থতার হার।
গত ২৪ ঘন্টায় ১৩ হাজার ৪০৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৪৩৬ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ৫২ জন কম শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১২ হাজার ৮৬৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৪৮৮ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১০ দশমিক ৭১ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ১১ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ৮৫ শতাংশ কম।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ১৯ লাখ ৪৭ হাজার ৬৫৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ লাখ ৬৩ হাজার ৪৭৯ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৮ দশমিক ৭২ শতাংশ।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৭৮৯ জন। গতকালের চেয়ে আজ ১৬৪ জন বেশি সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ১ হাজার ৬২৫ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৭৫ হাজার ৪৮৭ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৭৫ দশমিক ৬০ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ১৯ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩২ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকালের চেয়ে আজ ৬ জন বেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল মৃত্যুবরণ করেছেন ২৬ জন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ২৫১ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ। গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৩ হাজার ১৫৫ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১২ হাজার ৭৬৯ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৩৮৬টি নমুনা বেশি সংগ্রহ হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১০৮টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৩ হাজার ৪০৪ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১২ হাজার ৮৬৯ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৫৩৫টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২১৩৪ দশমিক ২৬ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ১৬১৭ দশমিক ৬০ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৩০ দশমিক ৮৩ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ৩২ জনের মধ্যে পুরুষ ২৪ জন, আর নারী ৮ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ৬৩ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ১৮৮ জন; শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ, আর নারী ২২ দশমিক ৬২ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ৩১ জন হাসপাতালে এবং ১ জন বাসায় মৃত্যুবরণ করেছেন ।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৩ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ২৫ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৪ জন; যা দশমিক ৪৬ শতংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৪২ জন; যা দশমিক ৮০ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১১৯ জন; যা ২ দশমিক ২৭ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৯৯ জন; যা ৫ দশমিক ৬৯ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৬৭৮ জন; যা ১২ দশমিক ৯১ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৪১২ জন; যা ২৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ২ হাজার ৬৭৭ জন; যা ৫০ দশমিক ৯৮ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ২৪ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪ জন এবং সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জন করে মারা গেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ২ হাজার ৬৩১ জন; যা ৫৯ দশমিক ১০ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ৭৫ জন; যা ২০ দশমিক ৪৭ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩৪৫ জন; যা ৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪৩৫ জন; যা ৮ দশমিক ২৮ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ১৮৭ জন; যা ৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৩১ জন; যা ৪ দশমিক ৪০ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২৩৭ জন; যা ৪ দশমিক ৫১ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১১০ জন; যা ২ দশমিক ০৯ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ৪৬৭টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৭৬৭ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ৭০০টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩০৪টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৮৭ জন ও শয্যা খালি আছে ১১৭টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৮২টি, ভর্তিকৃত রোগী ১৩০ জন ও শয্যা খালি আছে ৬৫২টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৫ জন ও শয্যা খালি আছে ২৪টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৩৮৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৭৫৫ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৫৩১টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২১১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৯১ জন ও শয্যা খালি আছে ১২০টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১১ হাজার ৬৩৫টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৬৫২ জন এবং শয্যা খালি আছে ৮ হাজার ৯৮৩টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৫৪টি, রোগী ভর্তি আছে ২৯৩ জন এবং খালি আছে ২৬১টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১২ হাজার ৮৯৬টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৫২৫টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৩৪২টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ১ হাজার ৭৮৯ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ৯২২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৮৫ জন, রংপুর বিভাগে ৭১ জন, খুলনা বিভাগে ২৯২ জন, বরিশাল বিভাগে ৪৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ১১০ জন, সিলেট বিভাগে ৪৮ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১৫ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ২০৫ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৪০০ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৮১ হাজার ৩৪৭ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৬৬ হাজার ২৯০ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৫ হাজার ৫৭ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৮২৫ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ৪৯৪ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৩৩ হাজার ৩৩৬ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৪ লাখ ৯০ হাজার ১৫৯ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৩ হাজার ১৭৭ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৮২৮টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ১৭১টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৯৯৯টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ১১ লাখ ৮১ হাজার ৩৭৫টি।
করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৪৯৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া ২৪ ঘন্টায় কোভিড বিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ হাজার ৮১৯ জন। এ পর্যন্ত শুধু কোভিড বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ লাখ ১৩ হাজার ৫৩০ জন। প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন স্বাস্থ্য তথ্যকর্মকর্তা দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৩ হাজার ৬৬৮ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৯ লাখ ৮৩ হাজার ৬৪০ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬৮ লাখ ৮৮ হাজার ৩৩১ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ১২ হাজার ৮২৭ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩ কোটি ৩২ লাখ ৪৯ হাজার ৫৬৩ জন এবং ১০ লাখ ৪০ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।