সিলেট এমসি কলেজে নববধূ ধর্ষণের ঘটনায় আরও একজন গ্রেফতার

347

সিলেট, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ( বাসস): সিলেট এমসি কলেজে নববধূ গণধর্ষণের ঘটনায় আরও একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতের নাম মাহফুজুর রহমান (২৫)।
এ নিয়ে নববধূ গণধর্ষণ মামলায় ৭ জনকে গ্রেফতার করা হলো।
এরমধ্যে মামলার এজাহারভূক্ত ৫ জন ও এজাহার বহির্ভূত ২ জন রয়েছে। এ মামলায় গ্রেফতারকৃত ৭ জনের মধ্যে ৬ জনকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১ টার দিকে কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ শামসুদ্দোহার নেতৃত্বে থানা পুলিশ ও জেলা ডিবির যৌথ অভিযানে সিলেটের জৈন্তাপুরের হরিপুর এলাকা থেকে মাহফুজুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়।
সে এমসি কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও গনধর্ষন মামলার এজাহারভূক্ত আসামি। সে সিলেট জেলার কানাইঘাটের দক্ষিণ বণীগ্রাম ইউপির লামা দলইকান্দি গ্রামের বাসিন্দা সালিক আহমদের ছেলে।
ছাত্রাবাসে নববধূকে গণধর্ষণের পর থেকে পলাতক ছিল মাহফুজুর রহমান। তাকে গ্রেফতার করতে কানাইঘাট থানার ওসি শামসুদ্দোহার নেতৃত্বে পুলিশের একাধিক টিম থানার বিভিন্ন এলাকাসহ সিলেটের অন্যান্য এলাকায় টানা অভিযান চালায়। পাশাপাশি সে যাতে করে কানাইঘাটের সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে যেতে না পারে এজন্য সীমান্ত এলাকায় কঠোর নজরদারি বাড়ানো হয়।
পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ গৃহবধূ ধর্ষণ মামলার ৬নং আসামী মাহফুজুর রহমানকে গ্রেফতারে করতে সক্ষম হয়।
আজ মঙ্গলবার মাহফুজুর রহমানকে আদালতে হাজির করে তার বিরুদ্ধে রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলে পুলিশ জানায়।
এদিকে সোমবার এ মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমান ও উর্জুন লস্করের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। পরে বেলা ৩ টার দিকে মামলার অপর আসামি রবিউল ইসলামকে আদালতে হাজির করা হয়। এসময়ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহপরাণ থানার ওসি (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য তার বিরুদ্ধে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে গ্রেফতারকৃত শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি, রাজন ও আইনুদ্দিনকে আজ মঙ্গলবার আদালতে হাজির করে তাদের বিরুদ্ধে রিমান্ডের আবেদন জানালে আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এপিপি খোকন কুমার দত্ত। তবে আদালতে আসামিদের পক্ষে কোন আইনজীবী ছিল না।
এরআগে রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে গনধর্ষন মামলার প্রধান আসামি সাইফুরকে সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলা থেকে গ্রেফতারর করা হয়। অপরদিকে পৃথক এক অভিযানে একই দিন সকালে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার মনতলা থেকে এ মামলার আসামি অর্জুন লস্করকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ থেকে শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনিকে গ্রেফতার করে র‌্যাব এবং নবীগঞ্জ থেকে রবিউল ইসলামকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
অন্যদিকে রোববার দিবাগত রাত ১ টার দিকে গণধর্ষণের ঘটনায় রাজন নামের আরেক যুবককে গ্রেফতার করে র‌্যাব-৯, এ সময় রাজনকে সহযোগিতায় করায় আইনুদ্দিন নামের আরেক ব্যক্তিকেও আটক করা হয়। এ দুজনকেও আলোচিত এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
এ নিয়ে এ মামলায় এজাহারভূক্ত ৬ আসামির মধ্যে ৫ জন এবং এজাহার বহির্ভূত দু’জনসহ মোট ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এজাহারভূক্ত আসামিদের মধ্যে এখন পর্যন্ত কেবল তারেকুল ইসলাম তারেককে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্তি উপ কমিশনার (গণমাধ্যম) জ্যোর্তিময় সরকার বলেন, ইতোমধ্যে এ মামলার এজাহারভূক্ত পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি একজনকে দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতারের জোর প্রচেষ্টা চলছে।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সিলেট এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে স্বামীকে আটকে রেখে গণধর্ষণের শিকার হন নববধূ। এ ঘটনায় ৬ জনকে আসামি করে এসএমপি’র শাহপরাণ থানায় মামলা করেন নির্যাতিত ওই গৃহবধূর স্বামী মাইদুল ইসলাম।