দেশে করোনায় সুস্থতা ২ লাখ ৭০ হাজার ছাড়িয়েছে

276

ঢাকা, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০ (বাসস) : দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ২০৪তম দিনে এই ভাইরাস থেকে সুস্থ মানুষের সংখ্যা ২ লাখ ৭০ হাজার ছাড়িয়েছে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৭০ হাজার ৪৯১ জন। এরমধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৭১৪ জন। আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭৫ দশমিক ৩১ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৭৫ দশমিক ১০ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ২১ শতাংশ বেশি।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১০ হাজার ৬৮৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ২৭৫ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ১৬৯ জন বেশি শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১০ হাজার ৭৬৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ১০৬ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১১ দশমিক ৯৩ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ১০ দশমিক ২৭ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার ১ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেশি।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ১৯ লাখ ৯ হাজার ৪৬০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ লাখ ৫৯ হাজার ১৪৮ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ৮১ শতাংশ। গতকাল এই হার ছিল ১৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩২ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকালের চেয়ে আজ ৩ জন কম মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল মৃত্যুবরণ করেছেন ৩৬ জন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ১৬১ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। গতকালও মৃত্যুর হার ছিল ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১০ হাজার ২৬১ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১০ হাজার ৬৮০ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৪১৯টি নমুনা কম সংগ্রহ হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ২০৫টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে
১০ হাজার ৬৮৫ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১০ হাজার ৭৬৫ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৮০টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২১০৮ দশমিক ৮৩ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ১৫৮৮ দশমিক ২৬ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৩০ দশমিক ৩০ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ৩২ জনের মধ্যে পুরুষ ২২ জন, আর নারী ১০ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৩ হাজার ৯৯৬ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ১৬৫ জন; শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ, আর নারী ২২ দশমিক ৫৭ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ৩২ জনের সবাই হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৬ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ২৩ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৪ জন; যা দশমিক ৪৭ শতংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৪২ জন; যা দশমিক ৮১ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১১৮ জন; যা ২ দশমিক ২৯ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৯৬ জন; যা ৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৬৬৯ জন; যা ১২ দশমিক ৯৬ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৩৯৫ জন; যা ২৭ দশমিক ০৩ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ২ হাজার ৬১৭ জন; যা ৫০ দশমিক ৭১ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ২০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫ জন, খুলনায় ৪ জন, সিলেটে ২ জন এবং রাজশাহী বিভাগে ১ জন মারা গেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ২ হাজার ৫৬৬ জন; যা ৪৯ দশমিক ৭২ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ৬৫ জন; যা ২০ দশমিক ৬৪ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩৩৭ জন; যা ৬ দশমিক ৫৩ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪৩৩ জন; যা ৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ১৮৭ জন; যা ৩ দশমিক ৬২ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২২৮ জন; যা ৪ দশমিক ৪২ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২৩৭ জন; যা ৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১০৮ জন; যা ২ দশমিক ০৯ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ৪৩৭টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৬৯৬ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ৭৪১টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ২৯২টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৮৪ জন ও শয্যা খালি আছে ১০৮টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৮২টি, ভর্তিকৃত রোগী ১৩২ জন ও শয্যা খালি আছে ৬৫০টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৭ জন ও শয্যা খালি আছে ২২টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৩৮৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৮১১ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৫৭৫টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২১১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৮৬ জন ও শয্যা খালি আছে ১২৫টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১১ হাজার ৬০৫টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৬৩৯ জন এবং শয্যা খালি আছে ৮ হাজার ৯৬৬টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৪২টি, রোগী ভর্তি আছে ২৮৭ জন এবং খালি আছে ২৫৫টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১২ হাজার ৮৫৭টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৫২২টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৩৪২টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ১ হাজার ৭১৪ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ৯১৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২১৮ জন, রংপুর বিভাগে ৩৭ জন, খুলনা বিভাগে ২৫১ জন, বরিশাল বিভাগে ৩৯ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৬৪ জন, সিলেট বিভাগে ৭৯ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১০ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ১৯৭ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৩৪৬ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৮০ হাজার ৬৯৫ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৬৪ হাজার ৯৭৪ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৫ হাজার ৭২১ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৮৭৭ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ৪৫ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৩০ হাজার ৭৫২ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৩৫০ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৪ হাজার ৪০২ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৭ হাজার ৯০৮টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪১ হাজার ৫৮২টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ১০৬টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪৯ হাজার ৫৯৬টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ১১ লাখ ২০ হাজার ৪৩টি।
করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৪৯৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া ২৪ ঘন্টায় কোভিড বিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ হাজার ৩২৮ জন। এ পর্যন্ত শুধু কোভিড বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন ৩ লাখ ৯৯ হাজার ৬৯৫ জন। প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন স্বাস্থ্য তথ্যকর্মকর্তা দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ২ হাজার ৮৭৯ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৯ লাখ ৭৩ হাজার ৩০ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬৬ লাখ ২৪ হাজার ৪৪১ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৯ হাজার ৪২৯ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩ কোটি ২৪ লাখ ২৯ হাজার ৯৬৫ জন এবং ৯ লাখ ৮৫ হাজার ৮২৩ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।