বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা-কৃষক লীগ
’৭১-এর পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতেই জাতির পিতাকে হত্যা : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেনারেল জিয়াউর রহমানকে ঘাতক উল্লেখ করে বলেন, ‘জিয়ার যা পরিণতি হয়েছিল তা তার অবধারিত। তবে আমার দুঃখ একটাই যে, তার বিচারটা আমি করতে পারলাম না। তার আগেই সে মরে গেলো।’
তিনি বলেন, ‘জিয়া ঘাতকদের বলেছিলেন এগিয়ে যাও, আমি আছি। খুনি মোশতাক আমাদের দলেই ছিল, তবু সে বেইমানি ও মুনাফেকী করেছিল। অথচ তিন মাসও ক্ষমতায় থাকতে পারেনি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি দেশের মানুষের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই এ কারণে যে, তারা আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছিল বলেই আমরা ক্ষমতায় আসতে পেরেছি। খুনিদের বিচার করে দেশকে কলঙ্কমুক্ত করতে পেরেছি।
তিনি বলেন, ‘শত বাধা অতিক্রম করে ২১ বছর পর ’৯৬ সালে যখন আমি সরকার গঠন করলাম, তখন ওই ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স বাতিল করে আমরা জাতির পিতার খুনিদের বিচারের কাজ শুরু করি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগস্ট শোকের মাস। এ মাসে আমি হারিয়েছি আমার বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যদের। কিন্তু জাতি হারিয়েছে দেশের অভিভাবককে। বঙ্গবন্ধু আজ বেঁচে থাকলে অনেক আগেই বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হতো।
তিনি বলেন, জাতির পিতাকে হত্যা করা হলো, তাঁর অপরাধ কি ছিলো? তাঁর অপরাধ ছিলো তিনি দেশকে স্বাধীন করেছিলেন। দেশের মানুষকে শোষিতদের শোষণমুক্ত করেছিলেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, যারা স্বাধীনতা মেনে নিতে পারেনি, যারা ঘটনাচক্রে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিশ্বাস করতেন না সেসব কুলাঙ্গার বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। তারা ভেবেছিল বঙ্গবন্ধু না থাকলে এ দেশ আবার পাকিস্তানিদের করায়ত্ত হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৫ আগস্টের খুনিরা প্রতিনিয়ত আমাদের বাসায় যাতায়াত করতো। বাবার কাছ থেকে নানা সুবিধা নিতো। এরপরও তারা বেঈমানী করেছে। তারা শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যাই করেনি, এ হত্যার বিচার যাতে না হয় সেজন্য ইনডেমনিটি অধ্যাদেশও জারি করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পঁচাত্তরের পর বাংলাদেশে ১৯টা ক্যু হয়েছিল। সেনাবাহিনীর বহু অফিসার, বহু সৈনিক, বিমান বাহিনীর অফিসারদের নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা অফিসার কেউই ছিল না। একে একে সবাইকেই মেরে ফেলা হয়। এ দেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়া ধ্বংস করা হয়।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাকে আর রেহানাকে দেশে আসতে দেয়া হয়নি। রেহানার পাসপোর্ট পর্যন্ত নবায়ন করে দেয়নি জিয়াউর রহমান। আওয়ামী লীগ যখন আমাকে সভাপতি নির্বাচিত করে, জোর করে আমি তখন দেশে ফিরে আসি।’
তিনি বলেন, ‘দেশে আসার পর আমাকে এই বাড়িতে (ধানমন্ডির ৩২ নম্বর) ঢুকতে দেয়া হয়নি। এই বাড়ির গেইটে তালা ছিল। এই রাস্তার ওপর বসে বাবা-মা ও ভাইবোনের জন্য মিলাদ পড়েছিলাম আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীসহ আমরা।’
বাসস/এএসজি-এফএন/২১১৫/-এবিএইচ