দেশে করোনা আক্রান্ত সাড়ে ৩ লাখ ছাড়িয়েছে

795

ঢাকা, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২০ (বাসস) : দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ১৯৮তম দিনে এই ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা সাড়ে ৩ লাখ ছাড়িয়েছে।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ১৮ লাখ ৩৪ হাজার ৩২৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ লাখ ৫০ হাজার ৬২১ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ১১ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৯ দশমিক ১৬ শতাংশ।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৪০ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকালের চেয়ে আজ ৪ জন বেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ৩৬ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ৯৭৯ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪২ শতাংশ। গতকালও মৃত্যুর হার ছিল ১ দশমিক ৪২ শতাংশ।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৩ হাজার ৫৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৭০৫ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ১৬১ জন বেশি শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১১ হাজার ৫৯১ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৫৪৪ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৬ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ১৩ দশমিক ৩২ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ২৬ শতাংশ কম।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ১৫২ জন। গতকালের চেয়ে ২৭ জন কম সুস্থ হয়েছেন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৫৮ হাজার ৭১৭ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৭৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ২৬ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১২ হাজার ৯৬৭ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১০ হাজার ৭৮৭ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ২ হাজার ১৮০টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৯৯টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৩ হাজার ৫৩ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১১ হাজার ৫৯১ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ১ হাজার ৪৬২টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২০৫৮ দশমিক ৭৭ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ১৫১৯ দশমিক ১৩ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ২৯ দশমিক ২৪ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ৪০ জনের মধ্যে পুরুষ ২৭ জন, আর নারী ১৩ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৩ হাজার ৮৭৩ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ১০৬ জন; শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৭ দশমিক ৭৯ শতাংশ, আর নারী ২২ দশমিক ২১ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ৩৭ জন হাসপাতালে, ২ জন বাসায় এবং হাসপাতালে নেয়ার পথে মৃত্যুবরণ করেছেন ১ জন ।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে ১ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৪ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১০ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ২০ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২২ জন; যা দশমিক ৪৪ শতংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৪২ জন; যা দশমিক ৮৪ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১১৬ জন; যা ২ দশমিক ৩৩ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৯১ জন; যা ৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৬৪১ জন; যা ১২ দশমিক ৮৭ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৩৫৩ জন; যা ২৭ দশমিক ১৭ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ২ হাজার ৫১৪ জন; যা ৫০ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ২৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৯ জন, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগে ১ জন করে মারা গেছেন এবং রংপুরে মারা গেছেন ২ জন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ২ হাজার ৪৩৯ জন; যা ৪৯ দশমিক ১৯ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ৩৫ জন; যা ২০ দশমিক ৭৯ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩৩১ জন; যা ৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪১৭ জন; যা ৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ১৮৫ জন; যা ৩ দশমিক ৭২ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২২১ জন; যা ৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২৩৪ জন; যা ৪ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১০৭ জন; যা ২ দশমিক ১৫ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৫ হাজার ৪৫০টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৮৩৩ জন ও শয্যা খালি আছে ৩ হাজার ৬১৭টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ২৯২টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৯৬ জন ও শয্যা খালি আছে ৯৬টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৮২টি, ভর্তিকৃত রোগী ১৪৯ জন ও শয্যা খালি আছে ৬৩৩টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৮ জন ও শয্যা খালি আছে ২১টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৩৮৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৮৯৩ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৪৯৩টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২০১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৮৭ জন ও শয্যা খালি আছে ১১৪টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৩ হাজার ৬১৮টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৮৭৫ জন এবং শয্যা খালি আছে ১০ হাজার ৭৪৩টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৩২টি, রোগী ভর্তি আছে ৩০১ জন এবং খালি আছে ২৩১টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১২ হাজার ৮৬৭টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৫১৯টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৩৪১টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ২ হাজার ১৫২ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ৯৯৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৮০ জন, রংপুর বিভাগে ৮২ জন, খুলনা বিভাগে ৩৫৯ জন, বরিশাল বিভাগে ৭১ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৭০ জন, সিলেট বিভাগে ৭২ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ২২ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৩২৯ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৬৬৩ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৭৯ হাজার ২৯৩ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৬২ হাজার ৮৯১ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৬ হাজার ৪০২ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ১ হাজার ২৫৮ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ৫৯২ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ২৪ হাজার ৯৭৬ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৪ লাখ ৭৮ হাজার ৭২ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৬ হাজার ৯০৪ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৭ হাজার ১২০টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৩৯ হাজার ৮৩১টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ২০২টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪৭ হাজার ১৫৩টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ৮ লাখ ৮ হাজার ৯২৫টি।
করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৪৯৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া ২৪ ঘন্টায় কোভিড বিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ হাজার ৫০৮ জন। এ পর্যন্ত শুধু কোভিড বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন ৩ লাখ ৭২ হাজার ৯২১ জন। প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন স্বাস্থ্য তথ্যকর্মকর্তা দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৩ হাজার ৩২৩ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৯ লাখ ৫২ হাজার ৫৮৩ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬০ লাখ ৭৩ হাজার ৪৬২ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ১ হাজার ৭০০ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩ কোটি ৬ লাখ ৭৫ হাজার ৬৭৫ জন এবং ৯ লাখ ৫৪ হাজার ৪১৭ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।