করোনায় ২৪ ঘন্টায় মৃত্যু ৪৩ জন, সুস্থ ২,৪৩৯

387

ঢাকা, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০ (বাসস) : দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ১৯২তম দিনে ২৪ ঘন্টায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৪৩ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। আর সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৪৩৯ জন।
গতকালের চেয়ে আজ ১৭ জন বেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ২৬ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ৮০২ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪১ শতাংশ। গতকাল মৃত্যুর হার ছিল ১ দশমিক ৪০ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ মৃত্যুর হার দশমিক ০১ শতাংশ বেশি।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৪৩৯ জন। গতকালের চেয়ে ৭৩ জন কম সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ২ হাজার ৫১২ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৪৫ হাজার ৫৯৪ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭২ দশমিক ০১ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৭১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ৩৫ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৪ হাজার ৫০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৭২৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ৪৪ জন কম শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১৪ হাজার ২১৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৮১২ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১২ দশমিক ২৭ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ৫ শতাংশ কম।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ১৭ লাখ ৫৬ হাজার ৭৪৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ লাখ ৪১ হাজার ৫৬ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৪১ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৪ হাজার ৬৪৮ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৩ হাজার ৮৪৭ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৮০১টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৯৪টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ৫০ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৪ হাজার ২১৬ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ১৬৬টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২০০২ দশমিক ৬০ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ১৪৪২ দশমিক ০৭ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ২৮ দশমিক ২০ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ৪৩ জনের মধ্যে পুরুষ ৩৬ জন, আর নারী ৭ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৩ হাজার ৭৪৪ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৫৮ জন; শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৭ দশমিক ৯৭ শতাংশ, আর নারী ২২ দশমিক ০৩ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ৪৩ জনই হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন ।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ২ হাজার ৪৩৯ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ১৯৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৯২ জন, রংপুর বিভাগে ১৪৩ জন, খুলনা বিভাগে ৩৮৮ জন, বরিশাল বিভাগে ৪০ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৮৭ জন, সিলেট বিভাগে ১৭৯ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১৭ জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৭ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ৩২ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২১ জন; যা দশমিক ৪৪ শতংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৪১ জন; যা দশমিক ৮৫ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১০৯ জন; যা ২ দশমিক ২৭ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৮৫ জন; যা ৫ দশমিক ৯৪ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৬২৩ জন; যা ১২ দশমিক ৯৭ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৩০৬ জন; যা ২৭ দশমিক ২০ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ২ হাজার ৪১৭ জন; যা ৫০ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ২৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩ জন, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে ২ জন করে এবং সিলেট বিভাগে ৪ জন মারা গেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ২ হাজার ৩৩৯ জন; যা ৪৮ দশমিক ৭১ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ৮ জন; যা ২০ দশমিক ৯৯ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩২৩ জন; যা ৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪০৬ জন; যা ৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ১৮০ জন; যা ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২১৬ জন; যা ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২২৮ জন; যা ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১০২ জন; যা ২ দশমিক ১২ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬ হাজার ১০৭টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৮৯৩ জন ও শয্যা খালি আছে ৪ হাজার ২১৪টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩০৭টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৯৩ জন ও শয্যা খালি আছে ১১৪টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৮২টি, ভর্তিকৃত রোগী ১৬২ জন ও শয্যা খালি আছে ৬২০টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৬ জন ও শয্যা খালি আছে ২৩টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৩৮৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ১ হাজার ৬৬ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৩২০টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২০১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৮৯ জন ও শয্যা খালি আছে ১১২টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৪ হাজার ২৭৫টি, রোগী ভর্তি আছে ৩ হাজার ১২১ জন এবং শয্যা খালি আছে ১১ হাজার ১৫৪টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৪৭টি, রোগী ভর্তি আছে ২৯৮ জন এবং খালি আছে ২৪৯টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ১টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৫২৫টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৩৪১টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ২৮৮ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৫৩১ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৭৭ হাজার ৪৯৭ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৫৯ হাজার ৮৯৩ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৭ হাজার ৬০৪ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৫৯৬ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ৬১৩ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ১৮ হাজার ৩৭ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৪ লাখ ৬৮ হাজার ৭০৭ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৯ হাজার ৩৩০ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৮ হাজার ৬৪২টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪৩ হাজার ৫৯৪টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ২৫৯টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৫২ হাজার ৪৯৫টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ৫ লাখ ১৭ হাজার ৪০৩টি।
করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৪৯৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া ২৪ ঘন্টায় কোভিড বিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ হাজার ৭৪২ জন। এ পর্যন্ত শুধু কোভিড বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন ৩ লাখ ৪৭ হাজার ৩৮১ জন। প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন স্বাস্থ্য তথ্যকর্মকর্তা দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৩ হাজার ৪৪৭ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৯ লাখ ৩২ হাজার ৭৯০ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৪ লাখ ৭৫ হাজার ৬৫৭ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ৯৩ হাজার ৬৪৯ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২ কোটি ৮৯ লাখ ১৮ হাজার ৯০০ জন এবং ৯ লাখ ২২ হাজার ২৫২ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।