বাসস দেশ-৪৩ : শাহজালালে ২৪ কোটি টাকার অ্যামফিটামিন মাদক উদ্ধার, আটক ৬

184

বাসস দেশ-৪৩
মাদক-আটক
শাহজালালে ২৪ কোটি টাকার অ্যামফিটামিন মাদক উদ্ধার, আটক ৬
ঢাকা, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২০ (বাসস) : হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ ডুয়েল ভিউ এলাকা থেকে ১২ কেজি ৩২০ গ্রাম ওজনের ২৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা মূল্যের অ্যামফিটামিন পাউডার (মাদক) আটক করা হয়েছে। এই ঘটনায় সন্দেহভাজন ছয় জনকে আটক করা হয়েছে।
বুধবার দিন ও রাতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
আটকরা হলেন- বাংলাদেশ এক্সপ্রেস লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর (অর্থ) খন্দকার ইফতেখার উদ্দিন আহমেদ (৫০) ও সিনিয়র ম্যানেজার (অপারেশন) রাসেল মাহমুদ (৩২), ইউনাইটেড এক্সপ্রেস এর জেনারেল ম্যানেজার গাজী শামসুল আলম (৪৩), ইক্সপোর্ট কার্গোর ভেতরে এমজিএইচ প্রুপের লোডিং সুপারভাইজার কাজল থুটোকিশ গোমেজ, কার্গো হেলপার বা লোডার মো. হামিদুল ইসলাম (৩০) ও মো. নজরুল ইসলাম।
গত মঙ্গলবার ভোর রাতে তৈরি পোশাক রপ্তানির আড়ালে বাংলাদেশ থেকে মাদকের এই বড় চালানটি এভিয়েশন সিকিউরিটির সদস্যদের সহযেগিতায় ঢাকা কাস্টমস হাউজ কর্তৃপক্ষ আটক করে।
আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিস ফেডেক্সের মাধ্যমে নিষিদ্ধ মাদক অ্যামফিটামিন পাউডার পাঠানো হচ্ছিলো অস্ট্রেলিয়ায়। বাংলাদেশ থেকে হংকং হয়ে অস্ট্রেলিয়া পাঠানো হচিছল।
আজ বৃহস্পতিবার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এর নবনিযুক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আহসানুল জব্বার এসব তথ্য জানিয়েছেন ।
এতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ আহসানুল জব্বার বলেন, এই আন্তর্জাতিক পাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এবিষয়ে কাউকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়া হবে না।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কেউ যাতে কোনোভাবে মিথ্যে তথ্য দিয়ে কুরিয়ার সার্ভিসকে ব্যবহার করে বিভিন্ন পণ্যের আড়ালে মাদকের চোরাচালান করতে না পারে সেই জন্য বাংলাদেশে অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল কুরিয়ার সার্ভিসগুলোর উপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
ডিজি বলেন, জব্দকৃত এ্যামফিটামিন পাউডারের আনুমানিক কেজি প্রতি মূল্য দুই কোটি টাকা। সে হিসেবে জব্দকৃত ১২ কেজি ৩২০ গ্রাম এ্যামফিটামিন পাউডারের মূল্য ২৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।
তিনি জানান, এই অ্যামফিটামিন পাউডার মাদকসহ কোনও মাদকই বাংলাদেশে উৎপাদন হয় না। এই মাদক কোনও না কোনোভাবে বাংলাদেশে এসেছে, যার গন্তব্য ছিল হংকং হয়ে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন। প্রাপক: দাস সিং ৩৪ কলম্বিয়া রোড, মেলবোর্ন নারে ওয়ারেন লিআইসি ৩৮০৫। এই মাদক চোরাচালানের পেছনে যে বা যারাই জড়িত থাকুক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, নেপচুন ফ্রেইট লিমিটেডের উত্তরার আশকোনায় একটি অফিস রয়েছে এবং ওই অফিসের রুবেল হোসেন নামের এক ব্যক্তি ওই সাতটি কার্টনে তৈরি পোশাক-জিন্সের প্যান্ট অস্ট্রিলিয়ায় প্রেরণের জন্য ইউনাইটেড এক্সপ্রেস লিমিটেড এ বুকিং দিয়ে যায়। পরবর্তীতে ইউনাইটেড এক্সপ্রেস লি. কার্টনগুলো বাংলাদেশ এক্সপ্রেস লি. (ফেডেক্স) এ প্রেরণ করে। ফেডেক্স কার্গো ভিলেজে প্রেরণ করে। কার্গো ভিলেজে ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন জি এমজিএইচ নামেয় কোম্পানির এয়ার অপস টিম কার্টনগুলো কার্গো ভিলেজে হ্যান্ডল করে।
জানা গেছে, বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে কর্মরত বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধির উপিস্থিতিতে সিভিল এভিয়েশনের ডুয়েল ভিউ সিকিউরিটি স্ক্যানিং ৩৪০ কার্টন পণ্যের মধ্যে সাতটি কার্টনে তল্লাশি করে জিন্সের প্যান্টের আড়ালে কার্টনের গায়ে ১৪টি বড় প্যাকেট ও ১৪টি ছোট প্যাকেটে মোট ২৮টি কার্বনের লেয়ার দ্বারা প্রস্তুত পাতলা অ্যালুমিনিয়াম প্যাকেট উদ্ধার করা হয়। সেখানে অভিনব কায়দায় লুকানো মোট ১২ কেজি ৩২০ গ্রাম মাদক দ্রব্য পাওয়া যায়। পরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া গেছে এটি প্রথম শ্রেণির মাদক। এ বিষয়ে বিমানবন্দর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বাসস/সংবাদদাতা/এফএইচ/২১৫৫/এবিএইচ