বাসস দেশ-৩৮ : চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সাফল্য অর্জনে জনসম্পদ বিবেচনায় নীতিমালা অপরিহার্য : টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী

210

বাসস দেশ-৩৮
মোস্তাফা জব্বার – ওয়েবিনার
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সাফল্য অর্জনে জনসম্পদ বিবেচনায় নীতিমালা অপরিহার্য : টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী
ঢাকা, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০ (বাসস) : ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, চতুর্থ শিল্প-বিপ্লবের সাফল্য অর্জনের লক্ষ্যে দেশের জনসম্পদ বিবেচনায় এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা প্রণয়ন অপরিহার্য।
তিনি বলেন,চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ক্ষেত্রে প্রযুক্তিতে বাংলাদেশের বিশাল জনসম্পদের বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত রাখার মাধ্যমে এই জনসম্পদকে যাতে কাজে লাগানো যায় সে চেষ্টা করতে হবে।
মন্ত্রী বলেন,‘চালকবিহীন গাড়ি কিংবা শ্রমিক ছাড়া পোষাক কারখানা হয়তো উন্নত বিশ্বের জন্য আনন্দের,কিন্তু আমাদের জন্য সেটা অমানবিক,অস্বাভাবিক ও অপ্রয়োজনীয় । কাজেই চতুর্থ শিল্প বিপ্লব বিষয়ে অন্যদের অনুসরণ না করে বাংলাদেশের নিজস্ব আলোকে এ বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ন অপরিহার্য।’
মোস্তাফা জব্বার আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীতে ঢাকা চেম্বার (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লব ও বাংলাদেশ প্রেক্ষিত’ শীর্ষক ওয়েবিনার আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বাংলাদেশের ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট (জনমিতি) তুলে ধরে বলেন,জার্মান ও জাপানসহ বিশ্বে অতীতের তিনটি শিল্প বিপ্লবের নেতৃত্বকারী দেশগুলোর জনসংখ্যার শতকরা প্রায় ৬৫ ভাগের বয়স ৬৫ বছর বা তার ওপরে। তাদের কোন কর্মক্ষমতা নেই। এজন্য তারা মানুষহীন শিল্প বিপ্লব চায়। অন্যদিকে বাংলাদেশের শতকরা ৬৫ ভাগ জনগোষ্ঠীর বয়স ৩৫ বছরের নীচে। সেই বিবেচনায় উন্নত দেশগুলোতে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর বিশাল সংকট বিরাজ করছে।
তিনি বলেন,‘অপরদিকে আমাদের বিশাল জনসম্পদকে উন্নয়নের চালিকা শক্তি হিসেবে কাজে লাগানোই হবে আমাদের বড় সুযোগ’।
তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতে ৩৩ বছরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে মোস্তফা জব্বার বলেন,‘ডিজিটাল বাংলাদেশ মানে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা। আমাদের তরুণরা অত্যন্ত মেধাবি। উপযুক্ত প্রশিক্ষণ পেলে তারা সহজেই প্রযুক্তিকে আয়ত্ত্ব করতে পারে। আমাদের সন্তনদের একটু গাইড করলে তারা শ্রেষ্ঠত্ব দেখাতে পারে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ আমাদের ছেলেরা মহাকাশ বিজ্ঞানে লেখাপড়া না করেও দক্ষতা ও অত্যন্ত সফলতার সাথে পরিচালনা করছে।’
প্রযুক্তি অ্যাডাপ্ট করার ক্ষেত্রে বাঙালি জাতির মতো অন্য কারো নেই বলেও মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
অতীতে তিনটি শিল্প বিপ্লবে বাংলাদেশ শরীক হতে পারেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন,শত শত বছরের পেছনে পড়া বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৬ বছরের দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও প্রজ্ঞাবান নেতৃত্বে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের নেতৃত্বের জায়গায় উপনীত হয়েছে। করোনাকালে বাংলাদেশ শিল্প, বাণিজ্য ও টেলিমেডিসিনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিরবচ্ছিন্ন ডিজিটাল সেবা দিয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, এক্ষেত্রে উন্নত বিশ্ব থেকে বাংলাদেশ পিছিয়ে নেই। এটাই ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল। তিান প্রযুাক্তির লেটেস্ট ভার্সন ফাইভ জি প্রবর্তণে গৃহীত কর্মপরিকল্পনা ও কর্মসূচি তুলে ধরে বলেন, ২০২৩ সালের মধ্যে প্রতিটি শিল্পাঞ্চলে ফাইভ জি সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।
মোস্তাফা জব্বার শিল্প উদ্যোক্তাদের আশ্বস্ত করেন,‘তারা যেখানেই ইন্ডাস্ট্রি করতে চান সেখানেই প্রযুক্তি পাবেন’।
ডিসিসিআই’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুল মবিনের সভাপতিত্বে এ ওয়েবিনারে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সভাপতি আসিফ ইব্রাহিম,শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বেগম পরাগ, এসএমই ফাউন্ডেশনের গবেষক সিরাজুল হায়দার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন, প্রফেসর ড, রাশেদুর রহমান, বুয়েটের অধ্যাপক প্রফেসর ড. ফাত্তাহ, ডিসিসিআই’র সাবেক নেতা আতিক রাব্বানি এবং পাঠাও এর সিইও ফাহিম আহমেদও বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডিসিসিআই নেতা শামস মাহমুদ।
এ অনুষ্ঠানে বক্তারা টেলিকম বিভাগকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের মূল মেরুদন্ড হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, মানুষকে বাদ দিয়ে কোন প্রযুক্তি বাংলাদেশের জন্য সঠিক হবে না। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে মানবিক করার মাধ্যমে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তারা বলেন,‘সবার আগে মানুষ ও দেশ’।
বাসস/সবি/জেডআরএম/২০০৬/এবিএইচ