দেশে করোনা সংক্রমণের হার কমেছে : বেড়েছে সুস্থতা

413

ঢাকা, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০ (বাসস) : দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার কমেছে এবং সুস্থতা বেড়েছে।
গত ২৪ ঘন্টায় ১৪ হাজার ৪২২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ১৫৮ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ৪২৪ জন কম শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১৫ হাজার ২০৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ২ হাজার ৫৮২ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ১৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার ২ দশমিক ০২ শতাংশ কম।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ১৫ লাখ ৯২ হাজার ৩৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ লাখ ১৯ হাজার ৬৮৬ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ০৮ শতাংশ। গতকাল এই হার ছিল ২০ দশমিক ১৩ শতাংশ।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৯৬৪ জন। গতকালের চেয়ে ১২৫ জন বেশি সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ২ হাজার ৮৩৯ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ১৩ হাজার ৯৮০ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৬৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৬৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ৪৭ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩৩ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকালের চেয়ে আজ ২ জন কম মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল মৃত্যুবরণ করেছেন ৩৫ জন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ৩৮৩ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৭ শতাংশ। গত ৩০ আগস্ট থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৪ হাজার ৬১৭ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৫ হাজার ৭৩৪ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ১ হাজার ১১৭টি নমুনা কম সংগ্রহ হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৯৩টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ৪২২ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৫ হাজার ২০৪ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৭৮২টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।’
গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ২৪ জন পুরুষ এবং ৮ জন নারী। এখন পর্যন্ত পুরুষ ৩ হাজার ৪৩২ জন; ৭৮ দশমিক ৩০ শতাংশ এবং নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ৯৫১ জন; ২১ দশমিক ৭০। ২৪ ঘন্টায় হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন ৩১ জন এবং বাসায় মৃত্যুবরণ করেছেন একজন।
মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ষাটোর্ধ ১৮ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১২ জন এবং ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ২ জন রয়েছেন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৯ জন; যা দশমিক ৪৩ শতংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৬ জন; যা দশমিক ৮২ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১০৫ জন; যা ২ দশমিক ৪০ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৬৪ জন; যা ৬ দশমিক ০২ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৫৮২ জন; যা ১৩ দশমিক ২৮ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ২০১ জন; যা ২৭ দশমিক ৪০ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ২ হাজার ১৭৬ জন; যা ৪৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
বিভাগ বিশ্লেষণে দেখা যায়, মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭ জন, সিলেট বিভাগে ৩ জন, রংপুর বিভাগে ৬ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জন রয়েছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ২ হাজার ১২০ জন; যা ৪৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ৯৫০ জন; যা ২১ দশমিক ৬৭ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ২৯১ জন; যা ৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৩৬৩ জন; যা ৮ দশমিক ২৮ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ১৬৯ জন; যা ৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ১৯৭ জন; যা ৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২০০ জন; যা ৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৯৩ জন; যা ২ দশমিক ১২ শতাংশ।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ২ হাজার ৯৬৪ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ৬৮০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪২৭ জন, রংপুর বিভাগে ১৫৩ জন, খুলনা বিভাগে ১৫২ জন, বরিশাল বিভাগে ৬৩ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৩৭ জন, সিলেট বিভাগে ২০৮ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৪৪ জন রয়েছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৬১৩ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৯ হাজার ৮৬৯ জন। ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৬৯৮ জন, এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫৩ হাজার ২৯৬ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশন করা হয়েছে ৭৩ হাজার ১৬৫ জনকে। প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ২ হাজার ৪৬ জনকে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘন্টায় ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ৯৪৮ জন, এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৪ লাখ ৪৮ হাজার ৯৮৫ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ৫ লাখ ১ হাজার ১৬৮ জনকে। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫২ হাজার ১৮৩ জন।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬ হাজার ২৬৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৯০ জন ও শয্যা খালি আছে ৪ হাজার ১৭৬টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩১০টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৯৩ জন ও শয্যা খালি আছে ১১৭টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৮২টি, ভর্তিকৃত রোগী ১৫৪ জন ও শয্যা খালি আছে ৬২৮টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৮ জন ও শয্যা খালি আছে ২১টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৪২৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ১ হাজার ৫৫৪ জন ও শয্যা খালি আছে ৫ হাজার ৮৭২টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২০১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ১০৫ জন ও শয্যা খালি আছে ৯৬টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৪ হাজার ৪৭৪টি, রোগী ভর্তি আছে ৩ হাজার ৭৯৮ জন এবং শয্যা খালি আছে ১০ হাজার ৬৭৬টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৫০টি, রোগী ভর্তি আছে ৩১৬ জন এবং খালি আছে ২৩৪টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ১১টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৪৯৯টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ১৮০টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে “করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ” লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৯ হাজার ৬৩৯টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪১ হাজার ৮৯৮টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ২৮৯টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৫১ হাজার ৮২৬টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ১ কোটি ৯৮ লাখ ৯৯ হাজার ৬৪৪টি।
করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৪৯৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া ২৪ ঘন্টায় কোভিড বিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ৫ হাজার ১০১ জন। এ পর্যন্ত শুধু কোভিড বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন ২ লাখ ৮৯ হাজার ১৪৮ জন। প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন স্বাস্থ্য তথ্যকর্মকর্তা দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ২ হাজার ৫১৩ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৮ লাখ ৮৬ হাজার ১১৩ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৪৩ লাখ ১৮ হাজার ২৮১ জন এবং এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন ৭৮ হাজার ৪৯৮ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২ কোটি ৫৬ লাখ ২ হাজার ৬৬৫ জন এবং এ পর্যন্ত ৮ লাখ ৫২ হাজার ৭৫৮ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।