নওগাঁ’র ধামইরহাটের তোফাজ্জল হোসেন মাছ চাষ করে সাফল্য অর্জন করেছেন

453

নওগাঁ ,১০ আগস্ট , ২০২০ (বাসস): জেলার ধামইরহাট উপজেলায় শংকরপুর গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন মাছ চাষ করে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছেন। মাছ চাষ করে জিরো থেকে হিরো হয়ে যাওয়ার গল্পটি তার জন্য একেবারেই প্রযোজ্য। সংসারে এসেছে স্বচ্ছলতা, হয়েছে বাড়ি, সন্তানদের লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মত মানুষ করে তোলার তাঁর লালিত স্বপ্ন এখন বাস্তাবয়নের পথে।
তোফাজ্জল হোসেনের নিজের কোন জমিজমা নাই। আগে অন্যের জমিতে শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি সরবরাহ করে যে আয় করতেন তা দিয়েই কোন রকমে চলতো সংসার। চলতো বলা যায় না চালিয়ে নিতে হতো। এরই এক পর্যায়ে এখন থেকে প্রায় ১২ বছর আগে মৎস্য বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী একটি পানা এবং জঙ্গলে ভর্তি পুকুর পরিস্ক্রা করে সেখানে শুরু করেন মাছ চাষ। প্রথমে ডিম থেকে পোণা উৎপাদন করে বিক্রি করতেন। পরে পোণা ছেড়ে বড় করে বাজারজাত করতে শুরু করেন। অত্যন্ত কৌশলী এবং পরিশ্রমী তোফাজ্জল হোসেনকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয় নি। একের পর এক সাফল্য এসেছে। এখন তার ৭৫ বিঘা জলা বিশিষ্ট প্রায় ২৫টি পুকুরে মাছ চাষ করছেন। রুই, কাতলা, মৃগেল, পাঙ্গাস, তেলাপ্ইুয়া,শিং. মাগুর ইত্যাদি মাছ চাষ করছেন। সব খরচ বাদ দিয়ে তিনি প্রতি মাসে নীট আয় করছেন ২ থেকে ৩ লাখ টাকা। নিজে জমি কিনে পুকুর কেটেছেন, ধামইরহাট উপজেলা সদরে চারতলা একটি বাড়ি বানিয়েছেন। আর্থিকভাবে তিনি এখন স্বচ্ছল । তাই তোফাজ্জল হোসেনের মাছ চাষের সফলতার গল্প এলাকার মানুষের মুখে মুখে। এলাকার অনেকেই তাকে অনুসরন করে এবং তার নিকট থেকে পরামর্শ নিয়ে শুুরু করেছেন মৎস্য চাষ।
তোফাজ্জল হোসেনের মৎস্য খামারে ৮ থেকে ১০ জন মজুর নিয়মিত কাজ করে তাদের সংসারের স্বচ্ছলতা এনেছেন। মুলত এ শ্রমিকরাই মৎস্য বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী কখন মাছের খাবার দিতে হবে, কিভাবে পরিচর্যা করতে হবে সেগুলো সঠিকভাবে তদারকী করে থাকেন।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফিরোজ আহম্মেদ বলেছেন সফল মৎস্যচাষী তোফাজ্জল হোসেন তাঁর মাছ চাষের ক্ষেত্রে নিয়মিত পরামর্শ ও সহযোগিতা গ্রহণ করেছেন মৎস্য বিভাগের নিকট থেকে। তাঁর এ অভাবনীয় সাফল্য মৎস্য বিভাগের জানা আছে। আর তাই মৎস্য বিভাগ জাতীয় পুরস্কার মনোনয়নের জন্য তোফাজ্জল হোসেনের নাম সুপারিশ করে সরকারের সংশ্লিষ্ট উচ্চ পর্যায়ে প্রেরণ করেছে।
তোফাজ্জল হোসেনের মত অনেকেই উদ্বৃত্ত মাছ উৎপাদনের জেলা নওগাঁ জেলাকে রুপালী সম্পদে স্বনির্ভর করে তুলছেন পাশাপাশি এ জেলার উৎপাদিত মাছ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, রাজশাহী, বগুড়া, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে।